৭ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২২শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
shadhin kanto

করোনাভাইরাসের কালে কেমন আছে 'দ্য প্লেগের‌' সেই আলজেরিয়ান শহর

প্রতিনিধি :
স্বাধীন কণ্ঠ
আপডেট :
নভেম্বর ১৬, ২০২০
99
বার খবরটি পড়া হয়েছে
শেয়ার :
| ছবি : 

সাহিত্য ডেস্ক: আলবেয়ার ক্যামুর বিখ্যাত উপন্যাস 'দ্য প্লেগ'। আলজেরিয়ার ভূমধ্যসাগর তীরবর্তী শহর ওরান-কে ঘিরে এই উপন্যাসের কাহিনি। ফরাসি উপনিবেশিক শাসনের অধীন আলজেরিয়ায় বুবোনিক প্লেগ ছড়িয়ে পড়েছে, সেই মহামারির সঙ্গে লড়ছে মানুষ, এমন এক কাল্পনিক কাহিনী। আলবেয়ার ক্যামু উপন্যাসের সেই মহামারির সঙ্গে আজকের করোনাভাইরাস মহামারির কতটা মিল? উপন্যাসে বর্ণিত ওরান শহরের কাল্পনিক প্লেগের সঙ্গে আজকের আলজেরিয়ার চিত্রে কতটা সাদৃশ্য? তুলনা করে দেখেছেন লুসি অ্যাশ:

'দ্য প্লেগ' উপন্যাসটি প্রকাশিত হয়েছিল ৭৩ বছর আগে। কিন্তু এখন বইয়ের দোকানে এই উপন্যাসটি যেরকম দেদারসে বিক্রি হচ্ছে, মনে হচ্ছে এটি যেন একটি নিউজ বুলেটিন। বিশ্বজুড়েই পাঠকরা নতুন করে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন আলবেয়ার ক্যামুর এই উপন্যাসের ব্যাপারে। যেন তারা কোভিড-১৯ মহামারির অর্থ খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা করছেন উপন্যাসে বর্ণিত ভিন্ন এক মহামারির গল্পে।

ক্যামুর উপন্যাসের পটভূমি ছিল আলজেরিয়ার ওরান শহর। এই শহরে করোনাভাইরাস আক্রান্ত মানুষদের বেশিরভাগকেই চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে মোহাম্মদ বোউদিয়াফ হাসপাতালে। অধ্যাপক সালা লেলো হাসপাতালে নিজের অফিসে বসে আছেন। খুবই পরিশ্রান্ত তিনি।

অধ্যাপক লেলো একজন যক্ষা রোগ বিশেষজ্ঞ। করোনাভাইরাস মোকাবেলায় আলজেরিয়ার এই দ্বিতীয় বৃহত্তম নগরীতে তাকে রাত দিন পরিশ্রম করতে হচ্ছে। মধ্যরাতের আগে তিনি খুব কমই হাসপাতাল ছেড়ে বাড়ি ফিরতে পারেন।

"অসুস্থ লোকজন খুবই সংকটজনক অবস্থায় হাসপাতালে আসছে। রোগী, হাসপাতালের কর্মী- সবাই খুবই আতঙ্কিত। আমরা এক ভয়ঙ্কর সময় পার করছি।"

"আমরা জানি না এই মহামারি এখনো তার চূড়ায় পৌঁছেছে কিনা বা দ্বিতীয় একটি ধাক্কা আসবে কিনা। কারণ আমাদের এখানে আক্রান্তের সংখ্যা আবার বাড়ছে।"

তাড়া করছে ক্যামুর উপন্যাস

আফ্রিকা মহাদেশে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি সবচেয়ে খারাপ মিশর এবং দক্ষিণ আফ্রিকায়। তিন নম্বরে আছে আলজেরিয়া।

সরকারি হিসাব অনুযায়ী আলজেরিয়ায় এ পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে ৪৩,০১৬ জন। মারা গেছে ১,৪৭৫ জন।

আলজেরিয়ায় করোনাভাইরাসের প্রথম ঘটনাটি ধরা পড়েছিল ফেব্রুয়ারির শেষে। এর পরপরই কড়া লকডাউন জারি করা হয়েছিল। পুরো দেশ জুড়ে এখনো রাত্রিকালীন কারফিউ জারি রয়েছে।

অধ্যাপক লেলোর মুখে পুরু গোঁফ, মাথার সামনে টাক পড়েছে। আলবেয়ার ক্যামুর উপন্যাসের নায়ক ডাঃ বার্নার্ড রিওর তুলনায় তার বয়স অনেক বেশি। তবে রোগীদের সেবায় একইভাবে নিবেদিতপ্রাণ তিনি।

আলবেয়ার ক্যামুর দ্য প্লেগ উপন্যাসের কাহিনী যে ওরানের পটভূমিতে, শহরটির আজকের বেশিরভাগ বাসিন্দাই হয়তো সেটা জানেন না। তবে ডাক্তার লেলো বিষয়টি ভালো করেই জানেন। তাকে যেন রীতিমত তাড়া করছে ক্যামুর উপন্যাসের সেই কাহিনি।

"আলবেয়ার ক্যামু তাঁর উপন্যাসে যে প্লেগের বর্ণনা দিয়েছেন, সেটি যেন আমরা ঝেড়ে ফেলতে পারছি না। বেশিরভাগ রোগী খুবই ভীত। চারিদিকে অনেক রকমের গুজব ভেসে বেড়াচ্ছে। সবাই যেন আচমকা এই বিপদের মাঝে নিজেকে আবিষ্কার করছে।"

রাজধানী আলজিয়ার্সের পূর্ব দিকের এক শহর বাউইরা। সেখানে কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া এক রোগীর ক্রুদ্ধ আত্মীয়-স্বজন হাসপাতালের পরিচালককে ঘেরাও করলো। পরিচালক জানালা দিয়ে লাফিয়ে পালানোর চেষ্টা করতে গিয়ে মাটিতে পড়ে হাত-পা ভাঙলেন।

আলবেয়ার ক্যামুর দ্য প্লেগ আর এই করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে যেন একটা সামঞ্জস্য দেখতে পাচ্ছে লোকজন। তারা কর্তৃপক্ষকেই দায়ী করছে সবকিছুর জন্য, বলছেন অধ্যাপক লেলো।

ক্যামুর উপন্যাসে ওরান শহরের কেন্দ্রের এক ক্যাথেড্রালে জ্বালাময়ী ভাষণ দিয়েছিল এক ক্যাথলিক পাদ্রী। তিনি সমবেত প্রার্থনাকারীদের বলেছিলেন, যে বিপর্যয় নেমে এসেছে সেটি তাদের প্রাপ্য। সেই ক্যাথেড্রালটি এখন একটি পাবলিক লাইব্রেরিতে পরিণত করা হয়েছে।

করোনাভাইরাসের কারণে আলজেরিয়ার মসজিদগুলো এখন বন্ধ। এবং শেখ আব্দুল কাদের হামুইয়ার মত ধর্মীয় নেতারা এখন অনলাইনে তাদের ধর্মীয় উপদেশ এবং স্বাস্থ্যবিষয়ক বার্তা দিচ্ছেন।

একজন প্রগতিশীল ধর্মীয় নেতা হিসেবে তাঁর খ্যাতি আছে। এবং যখন তিনি এই মহামারির অর্থ ব্যাখ্যা করেন, তখন যেন ক্যামুর উপন্যাসের সেই পাদ্রীর কথার প্রতিধ্বনি যেন শোনা যায়।

‍‍"আমি যতোটুকু বুঝতে পারি এটা হচ্ছে আল্লাহর কাছ থেকে তার বিশ্বাসীদের কাছে এবং সব মানুষের কাছে একটি বার্তা। যাতে তারা আল্লাহর কাছে ফিরে আসে, যাতে তারা জেগে ওঠে," বলছেন তিনি।

আলজেরিয়ান অনেক মানুষ আমাকে বলেছেন, করোনাভাইরাস মহামারিকে তারা আসল বিপদ বলে মনে করেন না। তাদের কাছে আসল বিপদ হচ্ছে কর্তৃপক্ষ এই মহামারিকে তাদের অন্যান্য স্বার্থ হাসিলের জন্যে যেভাবে ব্যবহার করছে সেটি।

এই মহামারি সারা পৃথিবীকে স্তব্ধ করে দেওয়ার আগে আলজেরিয়ায় ব্যাপক শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের ঢেউ বয়ে যাচ্ছিল। এই বিক্ষোভের নাম দেওয়া হয়েছিল 'হিরাক'। আরবিতে যার মানে হচ্ছে আন্দোলন। এই আন্দোলনের মুখে শেষ পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট আব্দুলাজিজ বুতেফ্লিকাকে গত বছরের এপ্রিলে পদত্যাগ করতে হয় ২০ বছর ক্ষমতায় থাকার পর।

তার পদত্যাগের পর আনন্দের বন্যা বয়ে গিয়েছিল আলজেরিয়ার রাস্তায়। কিন্তু বয়োবৃদ্ধ প্রেসিডেন্টের জায়গায় যারা উত্তরসূরি হিসেবে সামনে ছিলেন তারা সবাই পুরনো দলেরই লোক। এক সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে রাষ্ট্রপ্রধান করা হয় ডিসেম্বরে এবং এরপর যে নির্বাচনটি হয়েছিল সেটি মোটামুটি সবাই বর্জন করেছে।

নতুন সরকার প্রধান আবদেলমাডজিদ টেবুন প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে তিনি হিরাক আন্দোলনের দিকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেবেন যাতে এক নতুন আলজেরিয়া গড়ে তোলা যায়। রাজনীতি থেকে অর্থকে যেন পৃথক করা যায় সেরকম সংস্কারের কথা তিনি বলেছিলেন।

কিন্তু আলজেরিয়ায় নতুন কর্মসংস্থান বাড়ার কোন লক্ষণ তো নেইই, বরং প্রতিবাদ আন্দোলন আরো তীব্র হয়ে উঠেছে এবং বহু আন্দোলনকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

কর্তৃপক্ষ বলছে আলজেরিয়ায় আবার ১৯৯০ এর দশকের সেই রক্তাক্ত সহিংসতা ফিরে আসার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। নব্বুই এর দশকটিকে আলজেরিয়ায় কালো দশক বলে বর্ণনা করা হয়।

দু'পক্ষের মধ্যে এই মুখোমুখি অবস্থান যখন একটা চূড়ান্ত দিকে যাচ্ছে তখন করোনাভাইরাস মহামারিতে রাস্তাঘাট একেবারে ফাঁকা হয়ে গেল। মহামারির কারণে আফিফ আদের রাহমানের মত আন্দোলনকারীরা সাময়িকভাবে তাদের আন্দোলন স্থগিত রাখতে রাজি হলেন।

আফিফ আদের রাহমানে একজন ওয়েব ডিজাইনার। আন্দোলন ছেড়ে তিনি এবার মনোযোগ দিলেন দাতব্য কাজে। তিনি একটি ওয়েবসাইট তৈরি করলেন যার মাধ্যমে ত্রাণ সংস্থাগুলোকে যারা খাদ্য এবং অন্যান্য ত্রাণ সামগ্রী দান করতে চায় তাদের সংযোগ ঘটিয়ে দেয়া হয়।

"হিরাক আন্দোলন যেন কোয়ারান্টাইনের সময় এক বিরাট সংহতির আন্দোলনে পরিণত হলো," ‍বলছেন তিনি।

আলবেয়ার ক্যামুর দ্য প্লেগ উপন্যাসের একটি প্রধান বিষয়বস্তু ছিল সংকটের কালে মানুষের এই সংহতি।

আদেররাহমানে যেন আলবেয়ার কামুর উপন্যাসের চরিত্র জ্যাঁ টারোর একালের সংস্করণ।

ক্যামুর উপন্যাসে জ্যঁ টারো স্বেচ্ছাসেবক পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের নিয়ে ডাক্তারদের সঙ্গে মানুষের বাড়ি বাড়ি যান। অসুস্থদের বয়ে নিয়ে যান। কোয়ারেন্টিনে থাকা লোকজনকে সাহায্য করেন।

"আসলে অনেক আলজেরিয়ানের সঙ্গে তার অনেক মিল। সংকটের সময় তারা অন্যদের সাহায্য করার তাগিদ অনুভব করে", বলছেন আদের রাহমানে।

ফ্যাসিজম এবং নির্যাতন

আলবেয়ার ক্যামু নাৎসী দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে ফরাসি প্রতিরোধের যে লড়াইয়ে সামিল হয়েছিলেন, তার উপন্যাসে যেন সেটাই প্রতীকি আকারে তুলে ধরেছিলেন।

এই উপন্যাসটি লেখা হয়েছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর পর। এটিকে প্রায়শই দেখা হয় ফ্রান্সে নাৎসী দখলদারিত্বের রূপক হিসেবে। প্লেগ নিয়ে আসা ইদুঁর যেন এখানে ফ্যাসিবাদের রোগ নিয়ে আসছে।

তবে এই উপন্যাসটিকে একটি কর্তৃত্ববাদী রাষ্ট্রে আরো নানা ভাবে ব্যাখ্যা করার সুযোগ আছে।

ওয়ালিদ কেচিদা একটি ফেসবুক পেজ তৈরি করেছিলেন ‌'হিরাক মিম‌' নামে। গত এপ্রিলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয় তিনি প্রেসিডেন্ট এবং ধর্মীয় কর্তৃপক্ষের অবমাননা করেছেন তাদের বিকৃত ছবি দিয়ে।

গত ৫ই জুলাই স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে অবশ্য কর্তৃপক্ষ কিছু রাজনৈতিক বন্দীকে মুক্তি দিয়েছে। তবে ওয়ালিদ কেচিদাসহ এখনো অনেক গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ব্যক্তিকে বন্দী করে রাখা হয়েছে।

এ মাসের শুরুতে নামকরা সাংবাদিক খালেদ দ্রারেনিকে তিন বছরের সাজা দেয়া হয় একটি সমাবেশে উস্কানি দেওয়া এবং জাতীয় সংহতি হুমকির মুখে ফেলার জন্য।

সরকার ভুয়া খবরের বিরুদ্ধে এক বিতর্কিত আইন তৈরি করেছে এবং তিনটি ওয়েবসাইট ব্লক করে দিয়েছে যেগুলো করোনাভাইরাস মহামারি এবং সরকারবিরোধী বিক্ষোভের খবর নিচ্ছিল।

আলজেরিয়ায় এখন যে তথ্য শূন্যতা তৈরি হয়েছে ৪০০০ মাইল দূর থেকে একটি রেডিও স্টেশন সেই শূন্যতা পূরণ করার চেষ্টা করছে।

রেডিও করোনা ইন্টারন্যাশনাল নামের এই রেডিও স্টেশনটি স্থাপন করেছেন আব্দাল্লাহ বেনাদাউদা। তিনি একজন আলজেরীয় সাংবাদিক। এখন থাকেন যুক্তরাষ্ট্রের রোড আইল্যান্ডে।

দুহাজার চৌদ্দ সালে তার সঙ্গে তৎকালীন প্রেসিডেন্টের ভাই সাইদ বুতেফ্লিকার গোলমাল লাগে। তাকে তখন বরখাস্ত করা হয়, কালো তালিকাভুক্ত করা হয় এবং মৃত্যুর হুমকি দেয়া হয়। আব্দাল্লাহ এবং তার স্ত্রী দেশ ছেড়ে পালান।

এই রেডিও স্টেশন থেকে প্রতি মঙ্গলবার এবং শুক্রবার অনুষ্ঠান প্রচার করা হয়। যারা আলজেরিয়ার রাস্তায় বিক্ষোভ করছেন তাদের প্রতি সমর্থন জানায় এই স্টেশনটি। আব্দাল্লাহ বলছেন তারা আন্দোলনের যে শিখা জ্বলে উঠেছে সেটিকে প্রজ্বলিত রাখতে চান।

"এই বিপ্লবের অংশ হওয়ার জন্য আমি আমার পক্ষে যা যা করা সম্ভব তা করছি। আমার শরীর হয়তো এখানে, কিন্তু আমার মন পড়ে আছে আলজেরিয়ায়।

আলবেয়ার ক্যামুর দ্য প্লেগ উপন্যাসে এক ফরাসি সাংবাদিক রেমন্ড রেমব্রার একটি চরিত্র আছে। তাকে পাঠানো হয়েছিল ওরান শহরের আবাসনের অবস্থা দেখতে রিপোর্ট করার জন্য । যখন ওরান শহরে লকডাউন জারি হয়, সেখানে তিনি আটকে পড়েছিলেন। তিনি বাড়ি ফিরে যাওয়ার জন্য আকুল ছিলেন।

আব্দাল্লাহ বেনাদাউদার চরিত্রকে আমার এই চরিত্রের হুবহু রূপ বলে মনে হয়। তিনিও একজন সাংবাদিক, তবে তিনি আটকা পড়েছেন দেশের বাইরে এবং দেশে ফিরে আসার জন্য তিনি ব্যাকুল। আলজেরিয়ায় যখন মানুষের উপর নিপীড়ন আরো বাড়তে থাকে তখন তিনি আরও চিন্তিত হয়ে পড়েন এবং দেশ থেকে যারা তাকে খবর পাঠায় তাদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন।

আলজেরিয়ার বেশিরভাগ মানুষের মতোই আব্দাল্লাহ আশঙ্কা করেন তার দেশে চরম বিশৃঙ্খলা তৈরি হবে। ১৯৯০ এর দশকে যখন আলজেরিয়ায় এক ইসলামপন্থী বিদ্রোহ দমন করেছিল সামরিক বাহিনী, তখন মারা গিয়েছিল দুই লাখের মতো মানুষ এবং ১৫,০০০ মানুষ নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিল।

আব্দেলকাদের ডিজেরিও একটি জনপ্রিয় টিভি নাটকের তারকা। এই নাটকটি ওরানের পটভূমিতে লেখা। তিনিও এই আশঙ্কার সঙ্গে একমত। হিরাক আন্দোলন যখন শুরু হয়েছিল তখন শত শত মানুষের সামনে যারা প্রতিদিন বক্তৃতা দিতেন তিনি তাদের একজন। তাকে সরকার কিছুদিনের জন্য বন্দী করেছিল।

"১৯৯০ এর দশকের সেই কালো অধ্যায় আমাদেরকে কিছুটা হলেও পরিপক্ক করেছে এবং আমরা সহিংসতা এড়ানোর জন্য সতর্ক", বলছেন তিনি।

"এই মহামারি আসলে মানুষের মুখোশ খুলে দিয়েছে। আমরা দেখেছি সুশীল সমাজই একমাত্র গরীবদেরকে এবং যাদের সাহায্যের প্রয়োজন তাদেরকে সাহায্য করছে।"

আলবেয়ার ক্যামু উপলব্ধি করেছিলেন যে, যখন দুর্যোগ আঘাত হানে তখনই আসলে মানুষের সত্যিকারের চেহারা বেরিয়ে আসে।

যেসব আলজেরিয়ান ক্যামুর এই উপন্যাস পড়েছেন, তারা নিশ্চয়ই উপন্যাসের শেষে তার সতর্কবাণী উপলব্ধি করতে পারবেন।

একেবারে শেষে তিনি লিখেছিলেন, 'প্লেগ ব্যাসিলাস'- পাঠক যেভাবেই এই প্লেগের জীবানুর অর্থ করুক, এটির নাকি বিনাশ নেই, কখনোই এটি পুরোপুরি নিশ্চিহ্ণ হয়ে যায় না।

বিবিসি বাংলা অবলম্বনে

গরম খবর
menu-circlecross-circle linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram