২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
shadhin kanto

যশোরে অবহেলিত এক মেধাবি শিক্ষার্থীর ভবিষ্যত নিয়ে প্রশ্ন ?

প্রতিনিধি :
স্বাধীন কণ্ঠ
আপডেট :
জানুয়ারি ২৬, ২০২১
72
বার খবরটি পড়া হয়েছে
শেয়ার :
এক মেধাবি শিক্ষার্থীর ভবিষ্যত?
প্রতিকি ছবি | ছবি : এক মেধাবি শিক্ষার্থীর ভবিষ্যত?

 জেলা প্রতিনিধি,যশোর : তদবীর কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে মেধাবী এক শিশু শিক্ষার্থীর তকদীরে। অর্থের অভাবে থমকে যাচ্ছে লেখাপড়া। নষ্ট হতে চলেছে আগামী দিনের একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ। আদালত থেকে শুরু করে সবখানেই চলছে তদবীরকারকের অপচেষ্টা। মাঝখানে সময়ের ব্যবধানে প্রতিকূল পরিবেশে জীবন অতিবাহিত করছে মেধাবী এই শিশু শিক্ষার্থী।

সালভিয়া আফরোজ জয়ী , আলমগীর হোসেন লিটন ও লায়লা পারভীনের একমাত্র কন্যা সন্তান।
পশ্চিম বারান্দীপাড়া কদমতলা এলাকায় একমাত্র সঙ্গী মায়ের সঙ্গে বসবাস তার।

বাবা-মায়ের পরিচয় ছাড়াও শিশু জয়ীর নিজস্ব একটি পরিচিতি রয়েছে। সে যশোর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের বৃত্তিপ্রাপ্ত একজন মেধাবী ছাত্রী। বর্তমানে নবম শ্রেণিতে লেখাপড়া করছে।

২০১৮ সালে চ্যানেল আই ‘গানের রাজা’ রিয়্যালীটি শোতে শীর্ষ ছয়-এ অবস্থান করে দেশবাসীর কাছে একজন ক্ষুদে তারকা হিসেবে পরিচিতি লাভ করে।

২০২০ সালে ১৫ই আগষ্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে জাতীয় প্রতিযোগিতা ‘খ’ গ্রুপ সংগীত বিভাগে উপজেলা পর্যায়ে প্রথম, জেলা পর্যায়ে প্রথম ও বিভাগীয় পর্যায়ে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে এবং জাতীয় পর্যায়ের জন্য অপেক্ষামান রয়েছে।

এছাড়া আরো অনেক অর্জন রয়েছে এই ক্ষুদে শিল্পীর জীবনে। জেলা প্রশাসন কর্তৃক আয়োজিত সকল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে দেখা মেলে এই ক্ষুদে শিল্পীর। আলোকিত এই শিশুটির জীবনে বর্তমানে নেমে এসেছে ঘোর অন্ধকারের ছায়া।

শিশুটির পিতা আলমগীর হোসেন লিটন দীর্ঘ তেরো বছর যাবৎ বিদেশ ছিলেন। কিন্তু স্ত্রী ও সন্তানের প্রতি কোনো প্রকার দায়-দায়িত্ব পালন করতেন না। শিশুটির মাতা লায়লা পারভীন টিউশনি করে অনেক কষ্টে তিল তিল করে বড় করে তোলেন মেধাবী কন্যা সন্তানকে।

২০১৪ সালের ১৪ ডিসেম্বর দেশে ফেরেন পিতা আলমগীর। দেশে ফিরে পূর্বের ন্যায় নানাবিধ অপকর্ম শুরু করে আলমগীর। এতে বাধা দেওয়ায় স্ত্রী লায়লা পারভীনের উপর যৌতুক দাবী, কন্যা সন্তানের লেখাপড়া, গান বাজনা বন্ধ, শারীরিক, মানসিক, আর্থিক নানাবিধ নির্যাতন শুরু করে।

শেষ পর্যন্ত বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ায়।
আদালতে ন্যায় বিচারের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায় তদবীরকারকরা । লায়লা পারভীনের মামলাগুলো মিস্গাইড করতে থাকে। এতে দিনের পর দিন হয়রানির শিকার হতে হয় লায়লা পারভীনকে।

৬/২/১৮ তারিখে পারিবারিক জজ আদালতে লায়লা পারভীন একটি মামলা দায়ের করেন। যার নম্বর ৩৬/১৮। উক্ত মামলাটির রায়-ডিক্রি প্রদান করা হয় ৩১/০৮/২০২০ তারিখে। রায়ে কন্যা সন্তান জয়ীর পক্ষে ৭০০০/- (সাত হাজার) টাকা হারে মাসিক খোরপোস নির্ধারন করা হয়।

পিতা আলমগীর উক্ত রায়-ডিক্রির বিরুদ্ধে আপীল করেন। যার নম্বর ৩২/২০।
মামলার বাদী লায়লা পারভীনের অভিযোগ বর্তমানে জনৈক এক তদবীরকারক আপীল মামলায় বাদীর সন্তানের খোরপোস কমানোর জন্য বিভিন্ন মাধ্যমে অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এমনকি তদবীরকারকের উস্কানীতে আলমগীর স্ত্রী লায়লা পারভীনকে ২৫/১০/২০২০ তারিখে তালাক প্রদান করেন।

এতে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে কন্যা সন্তান জয়ী।
অন্যদিকে লায়লা পারভীনের দায়ের করা সি আর ৮৯৯/১৭ নম্বর অপর একটি সুরক্ষা আইনের মামলায় ২/১২/২০২০ তারিখে আদালত একটি আদেশ প্রদান করেন। যার স্মারক নম্বর ১৩৭/২০। আদেশে উল্লেখ করা হয় পিতা আলমগীরের দায়ের করা আপীল মামলার রায়-ডিক্রি না হওয়া পর্যন্ত চলতি মাস সহ মাসিক ৩০০০/-(তিন হাজার) টাকা হারে বাদীর মারফত কন্যা সন্তানকে প্রদানের জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো।

আদেশের অনুলিপি অবগতি ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার নিকট ১ কপি প্রেরণ করা হয়।

উক্ত কর্মকর্তা উভয় পক্ষকে ২১/১২/২০২০ তারিখে তার কার্যালয়ে ডেকে পাঠান। উভয় পক্ষের উপস্থিতিতে বিবাদী আলমগীরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় তিনি টাকাটা কিভাবে দেবেন। বিবাদী আলমগীর স্পষ্ট জানিয়ে দেয় আপীল মামলার রায় না হওয়া পর্যন্ত তিনি কোনো টাকা দেবেন না। আলমগীরের জবানবন্দি অফিসিয়াল প্যাডে লিপিবদ্ধ করা হয় এবং তাতে আলমগীরের স্বাক্ষর নেয়া হয়।

বাদী লায়লা পারভীন জবানবন্দির একটি কপি চাইলে বলা হয় এটি আজ-কালকের মধ্যে কোর্টে পাঠিয়ে দেব।
কোর্ট থেকে নিয়ে নেবেন।

এ ব্যাপারে মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের কর্মকর্তা রহিমা খাতুনের উপর বিষয়টির দায়িত্ব থাকায় লায়লা পারভীন কথা বলেন তার সাথে। জানতে পারেন প্রতিবেদন কোর্টে পাঠানো হয়নি। বাদীর অভিযোগ প্রস্তুতকৃত প্রতিবেদন এক মাসের বেশি সময় অতিবাহিত হলেও কোর্টে পাঠানো হয়নি। তদবীরের কারণে অফিসে চাপা পড়ে আছে এই প্রতিবেদন।

এ বিষয়টি নিয়ে মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সকিনা খাতুনের সঙ্গে দুই দফায় কথা হয় সাংবাদিকদের সাথে।
প্রথম দফায় তিনি বলেন, “আমি এখন খুলনায় ক্লাসে আছি। বেলা ২ টার পর কথা বলব। দ্বিতীয় দফায় বলেন, আমি ট্রেনিং-এ আছি।
যিনি বিষয়টির দায়িত্বে আছেন তিনিও ছুটিতে আছেন।এছাড়া অফিসের অন্য ২ জনকে আমি বলে দেবো রিপোর্টটি পাঠানোর জন্য। তা না হলে আমি নিজে এসে বিষয়টি দেখব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

২ comments on “যশোরে অবহেলিত এক মেধাবি শিক্ষার্থীর ভবিষ্যত নিয়ে প্রশ্ন ?”

গরম খবর
menu-circlecross-circle linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram