কলারোয়ায় মাহফুজার বাড়িতে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল
জুলফিকার আলী, কলারোয়া(সাতক্ষীরা)প্রতিনিধি: সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার হিজলদী গ্রামে ধর্ষণের শিকার মাহফুজা খাতুনের সাথে সাক্ষাৎ করেছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মুনির।
শনিবার (২৮ নভেম্বর) দুপুরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে বেশ কিছু উপহার নিয়ে মাহফুজার বাড়িতে যান।
এসময় ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এসএম মুনির সাংবাদিকদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ধর্ষণের শিকার মাহফুজা খাতুনের সাথে সাক্ষাৎ করে তার খোঁজখবর নেওয়ার জন্য পাঠিয়েছেন। দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও তিনি বিচার পাননি । আমরা তার মামলাটি দ্রুত পুনরুজ্জীবিত করে বিচারের মাধ্যমে ধর্ষকদের শাস্তি নিশ্চিতের চেষ্টা করবো।
এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম লাল্টু, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফিরোজ আহমেদ স্বপন, সাতক্ষীরা আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট আব্দুল লতিফ প্রমুখ।
মাহফুজা খাতুন নিজেও এসময় নির্যাতনের ঘটনা বর্ণনা দেন এবং এর সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন।
প্রসঙ্গত, ২০০২ সালের ২৬ আগস্ট হিজলদী গ্রামে নিজ বাড়িতে ঘুমিয়ে ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আতিয়ার রহমানের স্ত্রী ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেত্রী মাহফুজা খাতুন। গভীর রাতে তাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে পার্শ্ববর্তী একটি জঙ্গলে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা এবং তাকে ধর্ষণ করে।
প্রতিবেশিরা অচেতন অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনার পর ৩০ আগস্ট খুলনা সফররত তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনা তাকে দেখতে সাতক্ষীরা হাসপাতালে আসেন। পরে যশোর অভিমুখে ফেরার পথে তার গাড়ি বহরে হামলার ঘটনা ঘটে এবং তার সফর সঙ্গীদের কয়েকজন আহত হন।
মাহফুজা খাতুনের ধর্ষণ মামলায় সাতক্ষীরা আদালতে আমিরুল বৈদ্য, আসাদুজ্জামান, তোজাম্বর ও হাসান এর বিরুদ্ধে পুলিশ ২০০২ সালের ২১ নভেম্বর চার্জশিট দিলেও বিচারে সব আসামি খালাস পায়। এরপর থেকে মাহফুজা খাতুন আরও আতংকিত হয়ে পড়েন। পরে তিনি নিজ বাড়ি ছেড়ে যশোরের মনিরামপুরে চলে যান। পরবর্তীতে তিনি ঢাকায় বসবাস শুরু করেন। দীর্ঘসময় ঢাকায় কাটিয়ে সম্প্রতি তিনি ফিরেছেন নিজ বাড়িতে।
স্থানীয় চন্দনপুর ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলাম মনি জানান, শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর বীর মুক্তিযোদ্ধা আতিয়ার রহমানকে ১৫ শতক জমি ৯৯ বছরের জন্য বন্দোবস্ত দেয় সরকার। এই খাস জমিতেই তারা বসবাস করতেন। এই জমি কেড়ে নেওয়ার লক্ষ্যে মাহফুজা খাতুনকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে পাশবিক নির্যাতন চালানো হয়। একইসাথে তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে হামলা চালানো হয়।