শেখ আমানুল্লাহ কলেজ সভাপতি সহ ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা
কলারোয়া(সাতক্ষীরা)প্রতিনিধি: কলারোয়ায় শেখ আমানুল্লাহ ডিগ্রী কলেজ -এ অধ্যক্ষ পরিবর্তন করায় কলেজ সভাপতি জেলা প্রশাসক, ইউএনও সহ ৯জনের বিরুদ্ধে (মামলা নং-১৮৮/২০) মামলা করেছেন সদ্য বিদায়ী ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ।
সাতক্ষীরা জেলা যুগ্ম জজ আদালতে দায়েরকৃত মামলার বিবরণে ও মামলার বাদী কর্তৃক জানা গেছে, কলারোয়ার সুনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ‘শেখ আমানুল্লাহ ডিগ্রী কলেজ’।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির সুনামের সাথে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করে আসছেন মনিরা বেগম। তিনি দায়িত্বে থাকাকালিন সময়ে কলেজে কোন প্রকার অনৈতিক, অন্যায় ও অবৈধ তদবীর গ্রহণ করেন নাই। দায়িত্বশীলতার সাথে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। ফলে কলেজটি শিক্ষা ক্ষেত্রে আজও আপন মহিমায় আলো ছড়িয়ে যাচ্ছে।
কিন্তু অত্র কলেজের কয়েকজন শিক্ষক প্রতিষ্ঠানের সুনাম নষ্ট করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। তারা কলেজের উন্নয়নকে বাধাগ্রস্থ করতে চায়। নিজেদের স্বার্থ হাসিল করার জন্য বিভিন্ন ধরনের তৎপরতা চালিয়ে আসছে।
শেখ আমানুল্লাহ ডিগ্রী কলেজ এর গর্ভনিং বডির সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন তালা-কলারোয়ার এমপি এড. মুস্তফা লুৎফুল্লাহ। কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যারয়ের নির্দেশে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসককে ৫সদস্য কমিটির এডহক সভাপতি হিসাবে নিয়োগ পান। কিন্তু তিনি এই ক্ষমতা পেয়ে কলেজে যা খুশি তাই করে চলেছেন। কোন কারণ ছাড়াই একক সিদ্ধান্তে নিজের স্বার্থ হাসিল করার জন্য গত (২ডিসেম্বর) তারিখে ওই কলেজের সহকারী অধ্যাপক তুতিয়া খাতুনকে (স্বারক নং ০৫.৪৪.৮৭০০.০১০.২১.০০২.২০.৭৭৫) একটি পত্র দিয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দেয়া হয়। একই চিঠিতে তিনি ৩ ডিসেম্বর এর মধ্যে তুতিয়া খাতুনের নিকট দায়িত্বভার বুঝে দেয়ার জন্য বলা হয়। যা কলেজ সভাপতির কোন এখতিয়ার নেই। সম্পুর্ন বে-আইনি ভাবে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মনিরা খাতুনের মানসম্মান হানি করার জন্য এ কাজটি করেছেন।
এদিকে এই চিঠি পেয়ে ২ ডিসেম্বর সহকারী অধ্যাপক তুতিয়া খাতুন তার দলবল নিয়ে কলেজ ক্যাম্পাসে ঢুকে অধ্যাক্ষের নেম প্লেট পাল্টিয়ে তার নাম দেন এবং কলেজের আইসিটি ল্যাবসহ সকল চাবি পরিবর্তন করেন।
এতে করে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মনিরা খাতুনের মানসম্মান হানি হয়েছে। তিনি এসকল ঘটনায় উল্লেখ্য করে শেখ আমানুল্লাহ ডিগ্রী কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মনিরা খাতুন বাদী হয়ে ২ ডিসেম্বর-২০২০ তারিখে যুগ্ম জেলা জজ আদালতে পৃথক ভাবে দুটি কেস ফাইল করেন।
কলেজ সভাপতি(জেলা প্রশাসক সাতক্ষীরা), জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ পরিদর্শক, সহকারী অধ্যাপক তুতিয়া খাতুন (শেখ আমানুল্লাহ ডিগ্রী কলেজ কলারোয়া), জেলা শিক্ষা অফিসার সাতক্ষীরা, উপজেলা নির্বাহী অফিসার কলারোয়া, সচিব মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষাবিভাগ বাংলাদেশ সচিবলায়, ভাইস চ্যালেন্সর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় গাজীপুর, মহা-পরিচালক মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর ঢাকা, উম্মে মুসলিমা সহকারী কমিশনার জেলা প্রশাকের কার্যালয় সাতক্ষীরাসহ ৯ জনকে বিবাদী করে এই মামলা দায়ের করেন।
আদালত মামলাটি গ্রহন করে কলেজ সভাপতির দেয়া সহকারী অধ্যাপক তুতিয়া খাতুনের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্বকে স্থাগাদেশ দিয়ে ৭ দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর জন্য এক আদেশ দেন।
এবিষয়ে সাতক্ষীরা জজ কোর্টের আইনজীবী এ্যাডভোকেট কুন্ডু তপন কুমার বলেন, তার মক্কেলের মামলা করার অধিকার আছে। তিনি আদালতে মামলা করেছেন ন্যায় বিচার পাওয়ার জন্য।
এদিকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মনিরা বেগমের আদালতে মামলার করার বিষয় নিয়ে জানতে চাইলে সহকারী অধ্যাপক তুতিয়া খাতুন জানান, ওই কলেজে আরো শিক্ষক আছে তাদের কাছে শোনেন, আমি ভাল করে বলতে পারবো না।
তিনি আরো জানান, সভাপতি মহদয়ের আদেশ নিয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পেয়ে ওই চেয়ারে বসেছেন।
কলেজটি ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে বলে ডিসি স্যার আমাকে ওই চেয়ারে বসাচ্ছেন। অন্যদিকে শেখ আমানুল্লাহ ডিগ্রী কলেজের সহকারী অধ্যাপক তুতিয়া খাতুনের নামে সাতক্ষীরা জজ আদালতে মামলার বিষয় নিয়ে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের মন্তব্য নেয়ার জন্য ০১৭১৫২১২২৭৭ নাম্বারে ফোন দিলে তিনি বলেন, আমি ব্যস্ত আছি পরে ফোন করেন। জেলা প্রশাসকের কোন বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয় নাই।