কুমিল্লায় যুবদল নেতার মৃত্যুর ঘটনায় প্রশ্ন তুললেন রিজভী

স্বাধীন কন্ঠ ডেস্ক: বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করেছেন যে, কুমিল্লায় যুবদলের এক নেতাকে আটক করে নির্যাতনের পর মৃত অবস্থায় ফেরত দিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। অন্তর্বর্তী সরকারের সময় এ ধরনের ঘটনা কেন ঘটছে, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।
শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর ভাসানী মিলনায়তনে ঠিকানা বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটির সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
"অপরাধ থাকলে বিচার হবে, হত্যা নয়"
রিজভী বলেন, "যদি ওই যুবদল নেতা অপরাধী হন, তাহলে তাকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা যেতো। কিন্তু তাকে তুলে নিয়ে গিয়ে নির্যাতন করে হত্যা করা—এটা কেন হবে? এটা তো আদালতের কাজ বিচার করা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নয়!"
তিনি আরও বলেন, "অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে শেখ হাসিনার আমলের পুনরাবৃত্তি হলে জনগণ হতাশ হবে। যারা গুলি খেয়ে প্রাণ দিয়েছেন, তাদের আত্মত্যাগ বৃথা যাবে।"
যৌথবাহিনীর অভিযানে আটক ও মৃত্যু:
পরিবারের দাবি অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার (৩১ জানুয়ারি) দিবাগত রাত আনুমানিক ৩টায় যৌথবাহিনীর অভিযানে আটক হন কুমিল্লার যুবদল নেতা তৌহিদুল ইসলাম (৪০)। পরদিন দুপুর ১২টা ৩০ মিনিটে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।
তৌহিদুল ইসলামের পরিবারের অভিযোগ, "তাকে আটক করে যৌথবাহিনী অমানুষিক নির্যাতন করেছে, যার ফলে তিনি মারা গেছেন।" চিকিৎসকরাও তার শরীরে নির্যাতনের চিহ্ন থাকার কথা নিশ্চিত করেছেন।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে নিয়ে বিদেশি গণমাধ্যমের অপপ্রচার:
রিজভী আরও অভিযোগ করেন যে, ভারতের পশ্চিম বাংলার একটি বহুল প্রচারিত পত্রিকা বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সম্পর্কে অপমানজনক মন্তব্য করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
তিনি বলেন, "বাংলাদেশ সেনাবাহিনী একটি গর্বিত বাহিনী, যারা সবসময় জনগণের পক্ষে অবস্থান নেয়। কিন্তু এখন বিদেশি গণমাধ্যমে তাদের নিয়ে নেতিবাচক প্রচারণা চলছে, কারণ তাদের পছন্দমতো সরকার নেই। শেখ হাসিনা থাকলে তারা সহজেই তাদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে পারতো।"
বিএনপির কঠোর প্রতিক্রিয়া:
বিএনপির সহ-প্রচার সম্পাদক আসাদুল করিম শাহিনও সভায় বক্তব্য রাখেন এবং অবিলম্বে তৌহিদুল ইসলামের মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করেন।
অন্তর্বর্তী সরকারের সময়েও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিরুদ্ধে নির্যাতন ও হত্যার অভিযোগ ওঠায় রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। বিএনপি এ ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত ও দায়ীদের শাস্তি দাবি করেছে।