কেশবপুরে হঠাৎ বেপরোয়া কথিত কিশোর গ্যাং বাহিনী
মশিয়ার রহমান, (যশোর) কেশবপুর প্রতিনিধি: যশোরের কেশবপুরে সম্প্রতি সময় বহুল আলোচতি ইস্যু মাদকাসক্ত, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ ও জমি দখলবাজ কিশোর গ্যাং। ইতিমধ্যে কেশবপুর পৌরসভাসহ উপজেলা ব্যাপী তাদের প্রচার, মহড়া ব্যাপক হারে বেড়েছে।
রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় বেড়ে উঠা এই কিশোর গ্যাং এর অধিকাংশ সদস্য মাদকাসক্ত। কিশোর গ্যাং এর সদস্যরা সাধারণ ১৮ থেকে ২৫ বছর বয়সের । তাদের রাজনৈতিক তেমন কোনো পরচিয় না থাকলেও তারা এক চেটিয়া মাঠ দখলের পায়তারায় ব্যাস্ত।
এই কিশোর গ্যাং বাহিনী বর্তমানে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে
এই দলে কতিপয় 'বড় ভাই' দেখা যায়। যারা এই গ্যাং এর উপদষ্টো বা পরচিালনার দায়িত্ব পালন করে থাকে।
জানা গেছে, এদের প্রধান প্রধান কাজ হল জোর পূর্বক অন্যের জমি দখল করিয়ে দেওয়া, চাঁদাবাজি করা, সঠিক খবর প্রকাশ করলে বা এলাকায় অসহায়দের পাশে দাঁড়ালে, অন্যায়ের কাজের প্রতিবাদ করলে সাংবাদিকদের হত্যার হুমকি দেয়া, এলাকার সাধারণ ছাত্র ছাত্রীদের থেকে জোর করে টাকা আদায়, সিনিয়র নেতাদের থেকে প্রোগ্রাম করার কথা বলে টাকা নেওয়া, ঘের দখলে সাহায্য করা, মাদক ব্যবসা, মাদক সেবন, ভাড়াটয়িা ম্যান হিসাবে মিছিল মিটিং করা, মেয়েদের ইভটিজিং করাসহ বিশাল এক কর্মকাণ্ডের কর্মসূচি হাতে নিয়েই তাদের দিন শুরু হয়।
এদের আড্ডা সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলে । আবার রয়েছে আড্ডা দেওয়ার নির্দিষ্ট অফিস, চায়ের দোকান, খোলা জায়গা।
রাত একটু গভীর হওয়া শুরু করলইে এই কিশোর গ্যাং এর টপ সদস্যরা মটর সাইকলে যোগে বেরিয়ে পেড়ে মাদকের সন্ধানে । সারা দিনের অবৈধ আয়ের পয়সায় আসর জমায় গাঁজা, মদ, ফেনসিডিল সহ নানা নেশায় ।
নিঃশ্চিন্তায় মাদক সেবনের জন্য বেছে নেয় নিজস্ব অফিসের পিছনে, চায়ের দোকানরে গলি, কবরস্থান রোড, পুরাতন বাসস্ট্যান্ড , নদীর পাড় সহ বিভিন্ন নির্জন এলাকা।
মাদকাসক্ত কিশোর গ্যাং প্রতিবেদনের তথ্য অনুসন্ধান করতে গিয়ে দেখা যায়, পৌরসভার পিছনের জলাশয়, শহরের মাছ বাজারের পাশে,সরকারি করবস্থান রোডরে সামনে জমিতে, প্যারাডাইস মোড়রে চায়ের দোকানের গলিতে, পাইলট স্কুলের ছাত্রাবাসের পিছনে, পুরাতন ভূমি অফিস, ট্রাক স্ট্যান্ডে, নদীর পাড়ে, উপজেলার চিংড়া বাজারের পাশে, মঙ্গলকোট, মজিদপুর, ত্রিমোহিনী, হাসানপুর, বিদ্যানন্দকাটি, সাতবাড়িয়া, পাঁজিয়া, সুফলাকাটি, গৌরিঘোনা, সাগরদাঁড়ি, কেশবপুর সদর ইউনিয়নের বিভিন্ন পয়েন্টে অগণিত ইয়াবা, গাঁজা ও ফেনসিডিল সেবন করা হয় বলে একাধিক তথ্য পাওয়া গেছে।
কিছু দিন আগে কিশোর গ্যাং এর সক্রিয় ৩ সদস্যের মোটর সাইকেলের ধাক্কায় একজন পথচারীর মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় পুলশি ১ জনকে আটক করলওে ২ জন এখনও পলাতক। মটর সাইকলে দূর্ঘটনায় ১ জন নিহত ও সেই ঘটনায় মামলা হওয়ার পর থেকে কিশোর গ্যাং চক্র কিছুটা সাবধানতা অবলম্বন করলেও মাদক সেবন বন্ধ নেই ।
হঠাৎ করেই কেশবপুর উপজেলা মাদকাসক্ত কিশোর গ্যাং এর অভয়অরণ্য হয়ে উঠাতে দুঃশ্চিন্তাগ্রস্থ অভিভাবকরা । নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনকেইে জানিয়েছেন অপরিণত বয়সে রাজনীতির নেশায় ক্ষমতার লোভে পড়ে নষ্ট হতে চলেছে অনেক ভালো ভালো পরিবারের সন্তানরাও।
কিশোরদের এই অপরাধ প্রবণতা থেকে বের করে আনতে স্থানীয় রাজনতৈকি নেতা, জনপ্রতিনিধি, নিজ পরিবার সহ সমাজের সকল সচেতন মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে।
তা না হলে শান্তি ও স্বস্তির কেশবপুর গড়ে তোলা সম্ভব হবে না।
মাদকাসক্ত কিশোর গ্যাং সম্পর্কে কেশবপুর উপজেলা নাগরকি কমিটির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আবু বকর সিদ্দিকী বলেন, কিশোর অপরাধ ও কিশোর গ্যাংয়ের যে নতুন একটি চর্চা কেশবপুরে করোনা ভাইরাসে শুরু হয়েছে। এটার পেছনে কেউ কেউ বড় ভাই হিসেবে যুক্ত থাকছে । বড় ভাইরা যদি এখনই না থামে, তবে পরবর্তী প্রজন্মের জন্য একটি ভয়াবহ অবস্থা সৃষ্টি হবে।
কেশবপুর পৌরসভাসহ উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে ইউনিয়নে বাহিনী গড়ে তুলেছে এই কিশোর গ্যাং।
সেই সাথে এই গ্যাং বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। জমি দখল করিয়ে দেওয়া, চাঁদাবাজি করা, সঠিক খবর প্রকাশ করলে বা এলাকায় অসহায়দের পাশে দাঁড়ালে, অন্যায়ের কাজের প্রতিবাদ করলে সাংবাদিকদের হত্যার হুমকি দেয়া হচ্ছে | প্রত্যেকটি অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সাথে এই কিশোর গ্যাং জড়িত।
পরিবারগুলোকে তার নিজ সন্তানদের সঠিক পথে রাখার জন্য সতর্ক থাকতে হবে।
কেশবপুর থানার ওসি মোহাম্মদ জসিম উদ্দীন বলেন, কিশোররা অনেক খারাপ ঘটনার সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছে । ইতোমধ্যে কিশোর গ্যাং সদস্যদের নামের তালিকা করা শুরু হয়েছে । প্রত্যেকের অভিভাবকের সঙ্গে কথা বলা হবে। কেশবপুরের মাটিতে কোন সন্ত্রাস বাহিনী, কিশোর গ্যাং বাহিনী, মাদক ব্যবসায়ী, সেবনকারি, চাঁদাবাজ, জমি দখলবাজ, জঙ্গিবাদরে স্থান হবে না।
আরও পড়ুন>>>
ভূয়া কর্মকর্তা পরিচয় দেওয়া পল্লী বিদ্যুতের ইলেক্ট্রিশিয়ান গ্রেফতার