ছাত্র আন্দোলনের ঢেউয়ে পদত্যাগ করলেন সার্বিয়ার প্রধানমন্ত্রী

স্বাধীন কন্ঠ ডেস্ক: টানা দুই মাস ধরে চলা ছাত্র আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করলেন সার্বিয়ার প্রধানমন্ত্রী মিলোসি ভুকেভিক। মঙ্গলবার এক আনুষ্ঠানিক ঘোষণায় তিনি দায়িত্ব ছাড়ার কথা জানান। রাজধানী বেলগ্রেডের প্রধান সড়ক অবরোধ এবং কৃষকদের বিক্ষোভে যোগ দেওয়ার পর তার ওপর পদত্যাগের চাপ বাড়ে।
রেলস্টেশন দুর্ঘটনা থেকে বিক্ষোভের সূত্রপাত
গত ১৫ নভেম্বর, সার্বিয়ার নোভি সাদ শহরের রেলস্টেশনের ছাদ ধসে ১৫ জন নিহত হন। এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনার পরপরই দুর্নীতির অভিযোগ তুলে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নামেন। তাদের দাবি, যদি নির্মাণের সময় দুর্নীতি না হতো, তবে এত মানুষের প্রাণহানি ঘটত না।
প্রথমে ছোট পরিসরে শুরু হলেও পুলিশি হামলার মুখেও আন্দোলন দমে যায়নি। বরং ডিসেম্বরের মধ্যে এটি সার্বিয়ার ১০০টিরও বেশি শহরে ছড়িয়ে পড়ে। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন বিচার বিভাগের কর্মকর্তা, শিক্ষক, ব্যবসায়ী এবং সাধারণ মানুষও।
রাজধানী অচল, পদত্যাগের চাপে ভুকেভিক
সোমবার (২৭ জানুয়ারি), রাজধানী বেলগ্রেডের ব্যস্ততম সংযোগস্থল অটোকোমান্ডা জংশন অবরোধ করেন ছাত্ররা। এতে শহর কার্যত অচল হয়ে পড়ে। কৃষকরাও তাদের দাবি নিয়ে বিক্ষোভে যোগ দেন।
প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার ভুকিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনার প্রস্তাব দেন এবং সরকারে বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেন। তবে তাতেও বিক্ষোভ থামেনি।
প্রধানমন্ত্রীর বিদায়: আন্দোলনের জয়?
বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি সার্বিয়ার সাম্প্রতিক ইতিহাসে বিরল ঘটনা, যেখানে ছাত্রদের আন্দোলন সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগে প্রভাব ফেলেছে। তবে, আন্দোলনকারীরা শুধু ভুকেভিকের পদত্যাগ নয়, বরং দুর্নীতিবিরোধী আইনি সংস্কারেরও দাবি জানিয়েছেন।
এখন প্রশ্ন হলো, ভুকেভিকের বিদায়ের পরও কি সরকার বিক্ষোভকারীদের দাবি মানবে? নাকি এই আন্দোলন আরও বড় রূপ নেবে? সার্বিয়ার ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা এখনো কাটেনি।