কেশবপুরে হাসানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
জমির বিরোধে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ বন্ধ হুমকির মুখে কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থী
![জমির বিরোধে সীমানা প্রাচীর](https://www.shadhinkantho.com/wp-content/uploads/2020/11/keshobpur.jpg)
মশিয়ার রহমান, কেশবপুর (যশোর): যশোরের কেশবপুরে হাসানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি শ্রেণিকক্ষ সংকটসহ নানাবিধ সমস্যায় জর্জরিত হয়ে পড়েছে। এরপরও ওই জমি নিয়ে আদালতে মামলা হওয়ায়
বন্ধ হয়ে গেছে এর সীমানা প্রাচীরের নির্মাণ কাজ। ফলে হুমকির মুখে পড়েছে কোমলমতি শিশুরা।
এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। জমির বিরোধে সীমানা প্রাচীর জমির বিরোধে সীমানা প্রাচীর
বিদ্যালয়ের অফিস সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৭ সালে কেশবপুর সাগরদাঁড়ি সড়কের হাসানপুর গ্রামে ৩৩ শতক
জমির ওপর বিদ্যালয়টি স্থাপিত হয়। শিক্ষক কর্মচারী রয়েছেন ৫ জন। বিদ্যালয়টিতে ৬টি শ্রেণিকক্ষের
প্রয়োজন থাকলেও সরকারি বরাদ্দে অফিস রুমসহ ৪ রুম বিশিষ্ট একটি ভবন নির্মাণ করা হয়। ফলে প্রতিষ্ঠালগ্ন
থেকে তীব্র শ্রেণিকক্ষ সংকটের ভেতর দিয়ে বিদ্যালয়ের ১২৫ জন শিক্ষার্থীর পাঠদান করাতে গিয়ে শিক্ষকদের
হিমশিম খেতে হয়। ছোট ছোট শিশুরা বিদ্যালয়ে আসার সময় মাঝে মধ্যে দুর্ঘটনার শিকার হয়। একথা বিবেচনা
করে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়। গত ১ মাস ধরে ঠিকাদার নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
মাঝপথে এলাকার মঞ্জুর আলম পলাশ বিদ্যালয়ের জমি দাবি করে আদালতে মামলা করেন। যার নং-
১৩৯/২০। এ মামলায় কারণ দর্শনোর আদেশ দেয়া হয়, ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি, প্রধান শিক্ষক, উপজেলা
প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে। এরই প্রেক্ষিতে ১ নভেম্বর বিদ্যালয়ের সামনে আদালত কাজ বন্ধে সাইন বোর্ড ঝুলিয়ে দেয়। ফলে বন্ধ হয়ে যায় নির্মাণ কাজ।
আরো পড়ুন: চলতি সপ্তাহে মুক্তিযোদ্ধাদের বিশেষ সুবিধা দিতে যাচ্ছে সরকার
জমির বিরোধে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ বন্ধ
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান বলেন, ১৯৯৩ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার সময় হাসানপুর গ্রামের
আসাদুজ্জামান স্বপন ৮ শতক, মতিয়ার রহমান- ১৫ শতক ও নওয়াব আলী ১০ শতক জমিসহ ৩৩ শতক জমি
বিদ্যালয়ের নামে দলিল করে দেয়। তার ওপর বিদ্যালয়টি অবস্থিত। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এর কক্ষ সংকট রয়েছে।
পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় বিদ্যালয়ের মাঠে সবসময় পানি জমে থাকে। নেই কোন ওয়াস রুম। একটি টয়লেটে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করতে হয়।
কাজের ঠিকাদার মারুফ হোসেন বলেন, উপজেলা প্রকৌশলী দপ্তরের পিইডিপি-৪ প্রকল্পের আওতায় বিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীর নির্মাণের জন্যে ১০ লাখ ১০ হাজার ৭১৫ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এক মাস ধরে প্রাচীরের নির্মাণ কাজ চলছে। কাজ প্রায় শেষের পথে। ১ নভেম্বর আদালতের নোটিস পেয়ে কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে।
আরো পড়ুন: অস্ত্রের মুখে ৫-৭ মিনিটে সোনালী ব্যাংক থেকে ৯ লাখ টাকা লুট
এ ব্যাপারে মঞ্জুর আলম পলাশ বলেন, বিদ্যালয়ের সামনের ১৭ শতক জমি আমি পৈত্রিক সূত্রে দাবিদার।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ঠিকাদার আত্নসাতের লক্ষ্যে ওই জমিতে ইট, খোয়া, বালি রেখেছে। আদালতে
মামলা করার পাশাপাশি তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে কাগজপত্র দেখে বিষয়টি নিষ্পত্তির দাবি জানিয়েছেন।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুল জব্বার বলেন, মঞ্জুর আলম পলাশ যে ১৭ শতক জমি দাবি
করছেন, তা তার পিতা আবুল হোসেন ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রের নামে দলিল করে দিয়েছেন। কিন্তু ওই জমি
ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র ব্যবহার করে না। দীর্ঘদিন পর তার ছেলে মঞ্জুর আলম পলাশ দাবি করে আদালতে মামলা করেছে। বিষয়টি নিরসনের চেষ্টা চলছে।