২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
shadhin kanto

নুরুল হক নুর ও জোনায়েদ সাকি'র নেতৃত্বে নতুন জোট আসছে

প্রতিনিধি :
স্বাধীন কণ্ঠ
আপডেট :
ডিসেম্বর ১, ২০২০
14
বার খবরটি পড়া হয়েছে
শেয়ার :
নতুন জোট
| ছবি : নতুন জোট

ডেস্ক রির্পোট: বর্তমানে আলাদা সংগঠনের নেতৃত্ব দিলেও নতুন একটি দল বা জোট করার চিন্তা-ভাবনা করছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর । তাদের এই প্রক্রিয়ায় ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী ও ‘রাষ্ট্র চিন্তা’ নামে একটি সংগঠনের দায়িত্বশীলরাও যুক্ত রয়েছেন।

উদ্যোক্তাদের সূত্রে জানা গেছে, চূড়ান্তভাবে দল করার আগে যৌথভাবে কর্মসূচি পালন করবেন তারা। ইতোমধ্যে গত ২৮ নভেম্বর জাতীয় শহীদ মিনারে মওলানা ভাসানীর মৃত্যুবার্ষিকীকে কেন্দ্র করে তারা একটি যৌথ সমাবেশ করেছেন। সে সমাবেশে মওলানা ভাসানী অনুসারী পরিষদ, গণসংহতি আন্দোলন, ছাত্র-যুব ও শ্রমিক অধিকার পরিষদ ও রাষ্ট্র চিন্তা একসঙ্গে অংশ নেয়।

প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত নেতারা বলছেন, পুরো প্রক্রিয়াটি সময়সাপেক্ষ ও রাজপথে কর্মসূচি নির্ভর এবং আরও নিরীক্ষার ভেতর দিয়ে যাবে। সেদিক থেকে সমমনা অপরাপর কোনও দল যুক্ত হলে উদ্যোগটি জোটগত রূপ নিতে পারে।

অন্য একটি সূত্রের দাবি, নুরুল হক নুরের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে গণসংহতি আন্দোলনের সঙ্গে একীভূত হওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তবে দায়িত্বশীল নেতারা বিষয়টি সরাসরি অস্বীকার করেছেন।

গণসংহতি আন্দোলনের একাধিক নেতা জানান, বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে কর্মসূচি কেন্দ্রিক ঐক্য করতে বরাবরই আগ্রহী গণসংহতি। এক্ষেত্রে রাজনৈতিক বোঝাপড়া ও আন্তরিকতার ওপর নির্ভর করছে পরবর্তী পদক্ষেপ।

দলটির কেন্দ্রীয় রাজনৈতিক পরিষদের অন্যতম একজন সদস্য বলেন, ‘একসঙ্গে অনেক কর্মসূচি দেওয়ার ইচ্ছা আছে, এমনকি একটা জোট তৈরির সম্ভাবনাও আছে।’ তবে জোনায়েদ সাকি ও নুরুল হক মিলে নতুন দল করার বিষয়ে কোনও নেতাই স্বনামে উদ্ধৃত হতে রাজি হননি।

এর আগে প্রয়াত রাজনীতিক আবদুস সালামের নেতৃত্বাধীন গণতান্ত্রিক মজদুর পার্টি ২০১০ সালে গণসংহতি আন্দোলনের সঙ্গে একীভূত হয়। গণসংহতি নেতা দেওয়ান আবদুর রশিদ নিলু জানান, ২০১০ এ গণসংহতি আন্দোলনে যোগ দেওয়ার আগে ২০০৯ সালে কৃষক ফেডারেশন নামে একটি সংগঠন মজদুর পার্টির সঙ্গে যূথবদ্ধ হয়। পরের বছর আবদুস সালাম ও দেওয়ান আবদুর রশিদ মিলে গণসংহতি আন্দোলনে তাদের পার্টি একীভূত করেন।

গণসংহতি আন্দোলনের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলার পক্ষে গণসংহতি। মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী জামায়াতে ইসলামী ছাড়া অন্য সব দলের সঙ্গেই ন্যূনতম রাজনৈতিক ঐক্য করার পক্ষে দলটির নেতারা। আর একীভূত হওয়ার ক্ষেত্রে আগ্রহী সংগঠনের মূল শক্তি, নেতৃত্ব ও যৌথ কর্মসূচিতে তাদের নেতাকর্মীদের আচরণ ও অন্যান্য বিষয় সম্পর্কে অবস্থান পরিষ্কার হওয়ার পরই নতুন দল বা জোট করার বিষয়টি সামনে আসতে পারে।

সংহতির রাজনৈতিক পরিষদের আরেক সদস্য মনে করছেন, ‘প্রক্রিয়াটি এখনও নিশ্চিত কিছু নয়। দল হতেও পারে আবার নাও হতে পারে। তবে রাজনৈতিক ঐক্য-প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে।’

জানতে চাইলে বাংলাদেশ ছাত্র পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল হক নুর বলেন, ‘আমরা দেশের রাজনৈতিক দলগুলো, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি সবাই মিলে একসঙ্গে যুগপৎ কর্মসূচির দিকে যেতে চাই। সে লক্ষ্যেই আমরা চারটি সংগঠন মিলে ২৮ নভেম্বর শহীদ মিনারে মওলানা ভাসানীর মৃত্যুবার্ষিকী কেন্দ্র করে যৌথ সমাবেশ করেছি।’

নুরুল হক আরো বলেন, ‘আমরা এখন নতুন দল করছি না, আমরা চাই গণতন্ত্র উদ্ধারে সর্বদলীয় ঐক্য। আমরা ছোটভাবে শুরু করেছি। এটা আশা করি দিনে-দিনে সামনের দিকে যাবে।’

একাধিক রাজনৈতিক সূত্র জানায়, মওলানা ভাসানীকে বিশেষভাবে স্মরণ করায় বিএনপির উচ্চপর্যায়ে উদ্যোগটি নিয়ে আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে। দলটির একজন দায়িত্বশীল বলেন, ‘অবশ্যই এই উদ্যোগে বিএনপি খুশি।’ যদিও গণসংহতি আন্দোলনের একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা বলেন, ‘প্রতিষ্ঠার শুরু থেকে গত ২৫ বছর ধরে নিয়মিতভাবে মওলানাকে স্মরণ করে সংহতি, হঠাৎ করে নয়।’

উদ্যোগের সঙ্গে সম্পৃক্ত নেতারা জানান, ২৮ নভেম্বর শহীদ মিনারে গণসংহতি আন্দোলন, ছাত্র-যুব ও শ্রমিক অধিকার পরিষদ, মওলানা ভাসানী অনুসারী পরিষদ ও রাষ্ট্র চিন্তা মিলে যৌথ সমাবেশ করেছে। আগামী ১২ ডিসেম্বর অন্যান্য আগ্রহী সংগঠনের সঙ্গে আলোচনা করার সম্ভাবনা আছে। সেদিন এ বিষয়টিকে আরও সামনে নেওয়ার বিষয়ে আরও আলাপ হবে।

নতুন দল ও সম্ভাব্য জোটের বিষয়ে জানতে চাইলে মওলানা ভাসানী অনুসারী পরিষদের সভাপতি ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, ‘এখনও ওইসব কিছু না। দেশের এমন পরিস্থিতিতে কেউই বসতে চায় না, একে-অপরকে সন্দেহ করে। কোনও চেষ্টা নেই। দেশের বিদ্যমান পরিস্থিতি থেকে বেরুতে হবে। কিন্তু বড় দলগুলোতে গণ্ডগোল। সবাইকে বলেছি—অন্যদেরকে ডাকো, সবাইকে একত্র করো।’

‘রাষ্ট্র চিন্তা’র সদস্য হাসনাত কাইয়ূম বলেন, ‘এখনও দল বা জোট করার কোনও বিষয় আসেনি। যে পরিস্থিতির মধ্যে আমরা আছি, আমি মনে করি, এই রাষ্ট্রের সংকট সমাধান করতে যারা আন্তরিক, তাদেরকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।’

আরো পড়ুন:
যাবজ্জীবনের মানে আমৃত্যু কারাবাস
‘ভাস্কর্য নিয়ে উসকানিমূলক বক্তৃতা-বিবৃতির বিষয়ে সংযত হতে হবে’
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে এসএসসি পাসে চাকরি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

গরম খবর
menu-circlecross-circle linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram