যশোর শৈলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন কেলেঙ্কারি অভিযোগ
স্টাফ রিপোর্টারঃযশোরের মনিরামপুর উপজেলার শৈলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন কেলেঙ্কারি, সভাপতির যোগসাজশে নিয়োগ বাণিজ্য সহ স্কুলের নাম করে জমি নিজ নামে লিখে নেওয়া ও পরবর্তীতে সেই জমি বিক্রি করে টাকা পকেটস্থ করার অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনা জানাজানি হলে স্কুলের সামনে এলাকার স্থানীয় সকল স্তরের জনগন তুমুল হৈচৈ করে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রধান শিক্ষকের অপসারণের দাবি করেন। ঘটনার পর থেকে স্কুলের প্রধান শিক্ষক আত্বগোপনে আছেন।
আরও পড়ুন>>>নড়াইলে শারদীয় দুর্গা মন্দিরগুলোতে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি
সরেজমিনে জানা যায় মনিরামপুর শৈলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম ২১ সেপ্টেম্বর বিকালে তার নিজের মৎস্য ঘেরের কুড়ে ঘরের ভিতরে এক বিধবা মহিলার সাথে আপত্তিকর অবস্থায় ধরা পড়েন স্থানীয় জনগণের হাতে , সে সময় প্রধান শিক্ষকে লাঞ্ছিত করার ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়দের অভিযোগ স্কুলের দেয়ালে যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ এবং প্রতিরোধ গড়ে তোলার সাইনবোর্ড নিজ মোবাইল নাম্বার লাগালেও তিন নিজে যৌন কেলেঙ্কারি সাথে জড়িত।
এঘটনার সত্যতা অনুসন্ধান করতে যেয়ে বেরিয়ে আসে প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম শুধু নারী কেলেঙ্কারি নয় স্কুলের নিয়োগ বাণিজ্য,স্কুলের নাম করে জমি কেনার কথা বলে নিজ নামে জমি রেজিস্ট্রি করা, পরবর্তীতে সেই জমি বিক্রি করে টাকা নিজ পকেটস্থ সহ ভয়াবহ আরো অনেক দুর্নীতির অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী।
এ বিষয়ে অভিভাবক সদস্য আতিয়ার রহমান বলেন, আমাদের স্কুলের প্রধান শিক্ষকের এমন হীন কর্মকাণ্ডে আমরা শঙ্কিত, একজন প্রধান শিক্ষকের চরিত্র যদি এমন হয় আমরা চিন্তিত হয়ে পড়েছি আমাদের সন্তানদের নিয়ে।
জমিদাতা সদস্য মোঃ আব্দুল মান্নান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,আমার বাবার দেওয়া জমিতেই স্কুল আমাদের পরিবারে অনেকের যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও এই স্কুল নিয়োগে পিয়ন পদে ৯লক্ষ টাকা দিতে চেয়েছিলাম, পাকা কথা দিয়েও ১৫ লক্ষ টাকা নিয়ে অযোগ্য একজনকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, অখন্ড প্রত্যয়নের কথা বলে স্কুলের ৭ শতক জমি নিজ নামে রেজিস্ট্রি করে নেন এই প্রধান শিক্ষক। পরবর্তীতে ওই ৭ শতক জমি বিক্রি করা টাকা পকেটস্থ করেন তিনি।
অভিভাবক সদস্য মিন্টু রহমান বলেন, স্কুলের কোন কার্যক্রমে অভিভাবক সদস্যদের ডাকা হয় না। স্কুলের সভাপতি শ্রী রিপন ধরের যোগসাজশে কাগজ-কলম ঠিক রেখে গোপন বৈঠকের মাধ্যমে নিজ পছন্দের লোকদের কমিটিতে রাখা হয়।
এবছর তিন পদের নিয়োগে ৪৫ লক্ষ টাকা অবৈধ নিয়োগ বাণিজ্য করেছেন সভাপতি এবং প্রধান শিক্ষক। আপনারাই দেখতে পাচ্ছেন স্কুলের দৈন্যদশা। নিয়োগ বাণিজ্যের অবৈধ অর্থ স্কুল উন্নয়নের কোনো কাজেই আসেনি। উপকৃত হয়েছেন প্রধান শিক্ষক ও সভাপতিসহ তাদের মতাদর্শীরা।
তিনি আরও বলেন, কয়দিন আগে প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম যৌন কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়েছেন, এটা আমাদের স্কুলের জন্য খুবই লজ্জাজনক এবং দুঃখের বিষয়। এ ঘটনার পর থেকে প্রধান শিক্ষক স্কুলে আসছেন না। এ ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
স্কুল অনুসন্ধানে গেলে প্রধান শিক্ষককে পাওয়া যায়নি, কথা হয় সহকারি প্রধান শিক্ষক মিলন কুমার সিংহ ওর সাথে তিনি বলেন, যৌন কেলেঙ্কারির বিষয়টি আমরা শুনেছি, যদি ঘটনা সত্য হয়ে থাকে বিষয়টি খুবই নিন্দনীয়। ঘটনার পর থেকে স্কুলে অনুপস্থিতির কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, সভাপতির অনুমতি নিয়ে স্কুলের কাজেই তিনি বাইরে আছেন।
এ বিষয়ে স্কুলের সভাপতি, শ্রী রিপন ধর ক্যামেরার সামনে মুখ খুলতে নারাজ, বিশেষ অনুরোধে ক্যামেরা বন্ধ রাখার শর্তে বক্তব্য দিতে সম্মতি জানান, তিনি বলেন প্রধান শিক্ষকের যৌন কেলেঙ্কারির বিষয়টি আমি শুনেছি, এটা আমার স্কুল এরিয়ার বাইরের ঘটনা এ দায়ভার আমার স্কুল নিতে পারে না। নিয়োগ বাণিজ্যের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিধি মোতাবেক নিয়োগ হয়েছে নিয়োগে কোনো অনিয়ম বা আর্থিক লেনদেনের কোনো ঘটনাই ঘটেনি।
স্থানীয়দের অভিযোগের সত্যতা জানতে চাইলে স্কুলের প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম বলেন, আমার ঘেরের সিমানার গাছ কাটা নিয়ে বিরোধের জেরে আমার প্রতিপক্ষ আমার বিরুদ্ধে যৌন কেলেঙ্কারির মিথ্যা অপবাদ ছড়াচ্ছে। জমির বিষয়ে বলেন, এটা আমার ব্যাক্তিগত কেনা জমি। নিয়োগ বাণিজ্যের বিষয়ে বলেন, বিধি মোতাবেক নিয়োগ দেয়া হয়েছে নিয়োগে কিছু টাকা স্কুল উন্নায়নের জন্য নেওয়া হয়েছে তবে সে টাকা স্কুলের ফান্ডে জমা আছে। স্থানীয়দের যৌন কেলেঙ্কারি অভিযোগের পর থেকে স্কুলে অনুপস্থিতির কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, এস এস সি পরিক্ষা চলছে এ কারনে স্কুলের কাজেই বাইরে থাকা পড়ছে বেশির ভাগ সময়।