বউ কে বোনের পরিচয় দিয়ে চাকরির ঘটনায় দুজন বরখাস্ত
ডেস্ক রিপোর্ট: জামালপুর জেলার বকশীগঞ্জ উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধার ভুয়া সন্তান হিসেবে চাকরি নেওয়ায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দুজন শিক্ষককে বরখাস্ত করেছে শিক্ষা অধিদপ্তর। গত ২৭ অক্টোবর তাঁদের বরখাস্ত করা হয়।
বিষয়টি গতকাল বৃহস্পতিবার (২৬ নভেম্বর) নিশ্চিত করেছেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুর রাজ্জাক।
বরখাস্ত হওয়া দুজন হলেন টুপকার চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নাসরিন আক্তার ও খেয়ার চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক শাপলা আক্তার।
স্থানীয় বাসিন্দা ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয়ের সূত্রে জানা যায়, নাসরিন আক্তার রবিয়ার চর গ্রামের বাসিন্দা ও মাদারের চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আশরাফুল আলমের স্ত্রী। আর আশরাফুলের খালাতো বোন শাপলা। আশরাফুল বীর মুক্তিযোদ্ধা সহিদুর রহমানের ছেলে। তিনি মুক্তিযোদ্ধা কোটায় প্রাথমিক স্কুলের চাকরি নেন। শুধু তা-ই নয়, তিনি নাসরিন ও শাপলাকেও সহিদুর রহমানের সন্তান পরিচয় দেখিয়ে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরি নিয়ে দেন। বিষয়টি নিয়ে গত ২৯ আগস্ট একটি জাতীয় পত্রিকায় ‘বউকে বোন পরিচয় দিয়ে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরি’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
সে সময় শাপলা আক্তার বলেছিলেন, মুক্তিযোদ্ধা কোটায় তাঁর চাকরি হয়েছে কি না, তিনি জানেন না। আশরাফুল তাঁর চাকরির ব্যবস্থা করেছেন। এ জন্য ১০ লাখ টাকাও নিয়েছেন। আর আশরাফুলের বোন নাসরিন নন। তাঁরা স্বামী-স্ত্রী।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ঐ প্রতিবেদনটি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের নজরে আসে। এরপর বিষয়টি তদন্তের জন্য জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয়কে নির্দেশ দেওয়া হয়। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা মেলে। ১ সেপ্টেম্বর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে তদন্ত প্রতিবেদন পাঠান জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুর রাজ্জাক। এর ভিত্তিতে ২৭ অক্টোবর নাসরিন ও শাপলাকে বরখাস্ত করে শিক্ষা অধিদপ্তর। আর আশরাফুলের বিরুদ্ধে একটি বিভাগীয় মামলা হয়েছে।
এ বিষয়ে বলার জন্য চেষ্টা করেও আশরাফুল, নাসরিন বা শাপলার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
জানতে চাইলে বৃহস্পতিবার জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুর রাজ্জাক বলেন, তদন্তে জালিয়াতি করে চাকরি নেওয়ার বিষয়টি প্রমাণিত হয়। এরপর ওই দুজনকে বরখাস্ত করা হয়। একই সঙ্গে চাকরিতে যোগ দেওয়ার পর থেকে সরকারি বেতন-ভাতা বাবদ নেওয়া সব টাকা তাঁদের ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।