এস এম মারুফ: করোনার ২য় তরঙ্গ থেকে সংক্রমন প্রতিরোধে এবার ভারত থেকে ফিরতেও বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীদের করানো নেগেটিভ সনদের নির্দেশ দিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
এ নির্দেশনা আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে কার্যকর হতে পারে।
বেনাপোল ইমিগ্রেশন স্বাস্থ্য বিভাগে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি নির্দেশনা পত্র এসেছে । তবে এ সিদ্ধান্ত স্থল পথের পাশাপাশি রোল ও আকাশ পথে কার্যকর হচ্ছে।
বেনাপোল ইমিগ্রেশন স্বাস্থ্য বিভাগের মেডিকেল অফিসার সুজন সেন জানান, আগে বাংলাদেশিদের ভারতে যাওয়ার জন্য এবং ভারতীয়দের বাংলাদেশে আসার জন্য করোনা নেগেটিভ সনদ প্রয়োজন হচ্ছিল। তবে এবার বাংলাদেশিদের ভারত থেকে ফেরার সময় এবং ভারতীয়দের ভারতে ফেরার সময় করোনা নেগেটিভ সনদ প্রয়োজন হবে নির্দেশনা এসেছে। তবে ইতিমধ্যে বাংলাদেশে অবস্থানরত ভারতীয়দের আসা ও যাওয়ার সময় করোনা পরীক্ষার সনদ গ্রহনের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে বাংলাদেশিদের নেগেটিভ সনদ গ্রহনের কার্যক্রম শুরু হবে।
বেনাপোল ইমিগ্রেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি আহসান হাবিব জানান, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন হাতে পেয়েছি। ভারতে যাওয়া ও ভারত থেকে ফেরার সময় ৭২ ঘন্টার মধ্যে দেশ-বিদেশি সব ধরনের যাত্রীদের করোনা পরীক্ষার নেগেটিভ সনদের কথা বলা হয়েছে। বর্তমানে পূর্বের নিয়মে কার্যক্রম চলছে। পরবর্তী নির্দেশনা পৌছানো মাত্র করোনা সংক্রমন প্রতিরোধে ইমিগ্রেশন পুলিশ যথাযথ ভাবে দায়িত্ব পালন করবেন।
ভারতগামী যাত্রী আলতাফ হোসেন বলেন, বাংলাদেশিরা যে পরিমান ভারতে যায় তার মাত্র ৫ শতাংশ বিদেশিরা আসেন বাংলাদেশে। জরুরী ভারত ভ্রমনে বাংলাদেশে করোনা পরীক্ষা করতে ১৫০০ টাকা লাগছে। তবে ভারতে বাংলাদেশিদের জন্য করোনা পরীক্ষা ফি কত পড়বে তা এখন পর্যন্ত জানা যায়নি। দুইবার করোনা পরীক্ষাতে অর্থের পাশাপাশি এতে ভোগান্তি বাড়বে বাংলাদেশিদের। এতে বিশেষ করে বেকায়দায় পড়বেন চিকিৎসার জন্য ভারতে ভ্রমনকারী রোগীরা। এক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে আলোচনা করে পরীক্ষা কার্যক্রম সহজ আর কম খরচে করার আহবান জানান তিনি।
জানা যায়, বেনাপোল থেকে ভারতের বাণিজ্যিক শহর কলকাতার দূরত্ব মাত্র ৮৪ কিলোমিটার। যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়াতে এ পথে চিকিৎসা, ব্যবসা ও ভ্রমণে পাসপোর্টধারী যাত্রীরা বেশি যাতায়াত করে থাকেন। প্রতিবছর এ পথে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে প্রায় ৩০ লাখ দেশি-বিদেশি যাত্রী যাতায়াত করে । এদের কাছ থেকে ভ্রমণকর বাবদ সরকারের রাজস্ব আসে প্রায় ১০০ কোটির কাছাকাছি।
চীনে ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বাংলাদেশ ও প্রতিবেশী দেশ ভারতে ছড়িয়ে পড়লে প্রতিরোধ হিসাবে দুই দেশের সরকার নানান ব্যবস্থা গ্রহণ করে। এর মধ্যে গত ১৩ মার্চ ভারত সরকারের নিষেধাজ্ঞায় যাতায়াত বন্ধ হয় বাংলাদেশিদের। বাংলাদেশেও আটকে পড়েন ভারতীয়রা। এতে বিশেষ করে গুরুতর রোগীরা চিকিৎসার জন্য যেতে না পেরে বেকায়দায় পড়েন। যোগাযোগ বন্ধ থাকায় ব্যবসায়ীরাও বড় ধরনের লোকসানে ছিলেন। পরবর্তীতে ৫ মাস পর প্রথমে বাংলাদেশে আটকে পড়া ভারতীয়দের দেশে ফেরার সুযোগ হয়। পরে বাংলাদেশিদের মেডিকেল আর বিজনেস ভিসায় যাতায়াতে সুযোগ দেয় ভারত সরকার।
