২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
shadhin kanto

মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করে রায়হান কে ঠেলে দেয় মৃত্যুমুখে

প্রতিনিধি :
স্বাধীন কণ্ঠ
আপডেট :
অক্টোবর ১৪, ২০২০
10
বার খবরটি পড়া হয়েছে
শেয়ার :
| ছবি : 

ডেক্স রিপোর্ট   প্রথম থেকেই পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ ছিল- বন্দরবাজার ফাঁড়িতেই পুলিশ নির্মমভাবে নির্যাতন করে রায়হান আহমদকে ঠেলে দেয় মৃত্যুমুখে। সেই নির্যাতন সইতে না পেরে রবিবার সকালে তিনি ঢলে পড়েন মৃত্যুর কোলে। নির্যাতনের সময় আর্তনাদ করে পুলিশকে না মারার এবং বাঁচার আকুতি জানিয়েছিলেন রায়হান। কিন্তু মধ্যযুগীয় কায়দায় বর্বর নির্যাতনকারী পাষাণ হৃদয়ের পুলিশ সদস্যদের মন গলেনি সে সময়।

পরিবারের সেই গুরুতর অভিযোগটি সত্য বলে প্রকাশ পাচ্ছে ধীরে ধীরে। যদিও শুরু থেকেই মূল অভিযুক্ত- সদ্য বরখাস্তকৃত বন্দরবাজার ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবর দাবি করে আসছেন, রায়হানকে পুলিশ ফাঁড়িতে নেওয়াই হয়নি। কিন্তু সিসিটিভি ফুটেজ এবং তদন্ত কমিটির বক্তব্য অনুযায়ী- আকবর মিথ্যা বলেছেন।

গত রবিবার (১১ অক্টোবর) সকালে ওসমানী হাসপাতালে মারা যান সিলেট নগরীর আখালিয়ার নেহারিপাড়া এলাকার মৃত রফিকুল ইসলামের ছেলে রায়হান আহমদ।

কিন্তু এই মৃত্যুতে গঠিত তদন্ত কমিটি জানাচ্ছে, এলাকাবাসীর গণপিটুনি নয়, পুলিশের হেফাজতে অবর্ণনীয় নির্যাতনের শিকার হয়ে গুরুতর আহত হন রায়হান। এরপর তাকে সিলেটওসমানী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

রবিবার রায়হানের মৃত্যুর ঘটনা তদন্তে এসএমপির উপকমিশনার (ডিসি-উত্তর) আজবাহার আলী শেখের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়।

কমিটির একটি সূত্র জানায়, বন্দরবাজার ফাঁড়ির পাশঘেঁষা সিলেট পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের ক্লোজড সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা সেই সত্যতাই দিচ্ছে। ক্যামেরায় রায়হানকে পুলিশ ফাঁড়িতে আনা-নেওয়ার চিত্র ধরা পড়েছে।

ওই ফুটেজে দেখা গেছে, গত শনিবার রাত ৩টা ৯ মিনিট ৩৩ সেকেন্ডে দুটি অটোরিকশা এসে বন্দরবাজার ফাঁড়িতে থামে। সামনের অটোরিকশা থেকে তিন পুলিশের সঙ্গে রায়হানকে নামতে দেখা যায়। তিনি হেঁটে ফাঁড়িতে ঢোকেন। এর প্রায় তিন ঘণ্টা পর সকাল ৬টা ২২ মিনিটে একটি অটোরিকশা আসে বন্দরবাজার ফাঁড়ির সামনে। এর ঠিক দুই মিনিট পর ৬টা ২৪ মিনিট ২৪ সেকেন্ডে দুই পুলিশের কাঁধে ভর করে রায়হানকে অটোরিকশায় তুলতে দেখা যায়। এরপর তাকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।

এছাড়া বন্দরবাজার ফাঁড়ির লাগোয়া কুদরত উল্লাহ বোর্ডিংয়ের এক ব্যক্তি থেকে এ বিষয়ে বক্তব্য পাওয়া গেছে। ওই বোর্ডিংয়ের ১০২ নম্বর রুমে থাকেন ব্যবসায়ী হাসান আহমদ।তিনি জানান, রাতে তিনি তার এক আত্মীয়কে ঢাকার বাসে তুলে দিতে কদমতলী টার্মিনালে যান। ফিরে আসার পর তিনি শুনতে পান ফাঁড়ির ভেতরে কেউ চিৎকার করছে। কণ্ঠটি আকুতি জানিয়ে বলছে, ‘আমি চোর-ডাকাত নই, আমাকে আর মেরো না।’ পরে তিনি সকালে জানতে পারেন আগের রাতে ফাঁড়িতে রায়হান উদ্দিন নামে এক ব্যক্তিকে নির্যাতন করে মেরে ফেলা হয়েছে।

এদিকে ফুটেজ ছাড়াও এ নির্যাতনের বিষয়ে প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছে তদন্ত কমিটি। নগরীর বন্দরবাজার ফাঁড়ি ইনচার্জ আকবর হোসেনের নেতৃত্বে এ নির্যাতন চালানো হয়। ইনচার্জসহ ৭ পুলিশ সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদে এমন তথ্য মিলেছে।

এ ঘটনার মূল অভিযুক্ত ফাঁড়ির ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) আকবর হোসেন ভূঁইয়া পলাতক রয়েছেন বলে বিভিন্ন সূত্র দাবি করলেও পুলিশ বলছে, অভিযুক্তরা তাদের হেফাজতেই আছেন।

এর আগে গত সোমবার বিকালে আকবরসহ চার পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত এবং তিনজনকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

গরম খবর
menu-circlecross-circle linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram