ডেস্ক রিপোর্ট: জনসংখ্যা কিংবা আয়তন উভয় দিক থেকে বিচার করলে পরিসর হয়তো খুব বেশি নয়। তবে মেট্রোরেল উদ্বোধনের আনন্দ আর উচ্ছ্বাস ছুঁয়ে গেছে পুরো রাজধানীজুড়ে। কেউ স্বপ্ন দেখছেন দ্রুত অফিস কিংবা বাসায় আসা-যাওয়ার। কেউবা স্কুল কলেজ কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়া-আসার। একই সঙ্গে স্বপ্ন দেখছেন মেট্রোর বাকি লাইনগুলো চালুর মাধ্যমে চিরতরে যানজটের অভিশাপ থেকে মুক্তির।
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়। তবে স্বপ্ন দেখলেই প্রাপ্তি ঘটে না। স্বপ্ন বাস্তবায়নে প্রয়োজন কঠোর অধ্যবসায় আর পরিশ্রম। সঙ্গে থাকা চাই নিষ্ঠা, একাগ্রতা এবং সততা। তাই মেট্রোরেল বাংলা ও বাঙালির শুধু স্বপ্ন পূরণই করেনি, বাঙালি আরেকটিবার প্রমাণ রেখেছে নিজ সামর্থ্য এবং সক্ষমতার। চোখের সামনে প্রতিদিনই হুইসেল বাজিয়ে গর্বের বাহন মেট্রো জানান দিচ্ছে সেই বার্তাই।
মেট্রোর মাধ্যমে বৈদ্যুতিক ট্রেনের যুগে প্রবেশের এ অর্জনকে অর্থনীতিবিদ দেখছেন অর্থনৈতিক মানদণ্ডে। সামাজিক দিকও উঠে আসাছে কারও কারও বক্তব্যে। তবে গণমানুষের চোখে মেট্রো শুধুই স্বপ্ন পূরণের বাহন। যে স্বপ্নে নেই কোনো কৃত্রিমতা। নেই কোনো রাজনীতি কিংবা দলাদলি। মেট্রো যেন নিজেরই বাহন। দেশের সম্পদ। নিজের সম্পদ।
এমআরটি লাইন সিক্স উত্তরা থেকে দক্ষিণ ঢাকায় প্রবেশের নতুন পদ তৈরি করেছে। উন্মোচন করেছে নতুন এক দিগন্ত। মাত্র ১০ মিনিটেই দিয়াবাড়ি এসে মিলবে আগারগাঁওয়ে, যা বাঁচিয়ে দেবে এ পথে বিফলে যাওয়া প্রায় ১২ লাখ কর্মঘণ্টার তিন ভাগের দুই ভাগ সময়।
এ নিয়ে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএএন সিদ্দিক বলেন, মেট্রোরেল বাংলাদেশের মানুষের জন্য প্রথমবারের মতো একটি অভিজ্ঞতা হবে। তাই যাত্রীদের টিকিট ব্যবস্থা এবং পরিষেবা ব্যবহার সম্পর্কে অভিজ্ঞতা অর্জন করতে হবে। যাত্রীরা যখন মেট্রোরেলের সঙ্গে পরিচিত হবেন তখন আমরা মধ্যবর্তী স্টেশনগুলোতে ট্রিপ, ট্রেন এবং স্টপেজের সংখ্যা বৃদ্ধি করব।
সিদ্দিক বলেন, ঢাকা দক্ষিণ এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর এবং জনসংখ্যার দিক থেকে বিশ্বের সপ্তম বৃহত্তম শহর। রাজধানী ঢাকা যাত্রীদের জন্য মেট্রোরেলের সঙ্গে সবচেয়ে আধুনিক পরিবহন ব্যবস্থা পেতে যাচ্ছে। মেট্রোরেল জনদুর্ভোগ কমাবে কারণ এটি আরামদায়ক উপায়ে কম সময়ে বেশি যাত্রী পরিবহন করবে।
ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরও বলেন, এই প্রকল্পটি এসডিজির লক্ষ্য ৯ (শিল্প, উদ্ভাবন, এবং অবকাঠামো), লক্ষ্য ১১ (টেকসই শহর এবং জনপদ) এবং লক্ষ্য ১৩ (জলবায়ু কার্যক্রম) অর্জনে অবদান রাখবে। মেট্রোরেল উদ্বোধনের ফলে শুধু মহানগরীর যানজটই কমবে না, সরকারের সামগ্রিক রাজস্ব আদায়ও বাড়বে।
মানুষ স্বপ্ন দেখে, স্বপ্নে বাঁচে। এক স্বপ্ন পূরণ হতে না হতেই তৈরি হয় নতুন স্বপ্ন। রাজধানীবাসীও এবার স্বপ্ন দেখছেন মেট্রোর বাকি লাইনগুলোর কাজ দ্রুত শেষ করে নতুন নতুন যাত্রাপথ উন্মোচনের।
মেট্রোরেল উত্তরা থেকে আগারগাও পর্যন্ত যাত্রাপথে যে গতি আনছে তা ধরে রাখতে এ পথের যাত্রীদের বাইপাসের সুযোগ বাড়ানোর আহ্বান নগরবাসীর।
