নিজস্ব প্রতিনিধিঃ যশোরের ঝিকরগাছা আইনিজটিলতায় বন্ধ থাকায় এক টানা ২১ বছর ধরে পৌরসভার মেয়র ছিলেন মোস্তফা আনোয়ার পাশা জামাল। দীর্ঘদিন পর রোববার ভোট উৎসবে ফের ৫ বছরের জন্য মেয়র নির্বাচিত হন তিনি।
আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মোস্তফা আনোয়ার পাশা জামাল পেয়েছেন ৭ হাজার ৩৭৫ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী কম্পিউটার প্রতীকের ইমরান হাসান সামাদ নিপুন পেয়েছেন ৬ হাজার ১২৬ ভোট। রাতে ভোট গহণা শেষে বেসরকারি ফলাফল ঘোষণা করা হয়।
রোববার নির্বাচনকে ঘিরে পৌরসভা জুড়েই উৎসবের আমেজ ছিল ভোটারদের মাঝে। দীর্ঘ ২১ বছর পর অনুষ্ঠিত হওয়া নির্বাচনে মেয়র পদে ৬ জন, ৯টি সাধারণ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ৬৬ জন এবং তিনটি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ১৮ জন প্রতিদ্বীন্দ্বতা করেন।
আরও পড়ুন>>>নাটোরে দুই পৌরসভায় ১টি আ.লীগ, অপরটিতে বিএনপি প্রার্থী জয়ী
প্রথমবারের মতো ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) এ ভোট দিয়েছেনএখানকার ভোটাররা। প্রথমবার ইভিএমে ভোট দিতে পেরে খুশি তারা। একাধিক ভোট কেন্দ্র ঘুরে দেখা যায় সাধারণ ভোটাররা শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিচ্ছেন। ভোট অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে পর্যাপ্ত আইন শৃঙ্খলাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। সকাল আটটায় শুরু হওয়া ভোট গ্রহণ বিরতিহীনভাবে চলবে বিকেল চারটা পর্যন্ত। সকাল সাড়ে ১০ টায় ঝিকরগাছার ৯ টি ওয়াডে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, ভোটাররা দীর্ঘ সারিতে দাঁড়িয়ে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করছেন। এ কেন্দ্রে পুরুষ ভোটারের চেয়ে নারী ভোটারের উপস্থিতি ছিল বেশি। দীর্ঘদিন পর ও ইভিএমে ভোট হওয়ায় তরুণ ভোটারদের মধ্যেও বেশ উৎসাহ বিরাজ করছে।
জানা যায়, ১৯৯৮ সালের ৪ এপ্রিল যশোরের ঝিকরগাছা পৌরসভার যাত্রা শুরু হয়। এই পৌরসভার ভোটাররা প্রথম ও সর্বশেষ ভোট দেন ২০০১ সালের ২ এপ্রিল। ৫ বছর পর ২০০৬ সালের ১২ মে এ পৌরসভার মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়। এ সময় নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই (২০০৬ সালে) সীমানা সংক্রান্ত বিরোধ নিয়ে হাইকোর্টে মামলা করেন ঝিকরগাছার পৌরসভার কাওরিয়া গ্রামের মৃত মোয়ালেম আলির ছেলে শাহিনুর রহমান, মল্লিকপুরের মৃত উলিউল্লাহ মুনসীর ছেলে সাইফুজ্জামান এবং বামনআলী গ্রামের মৃত নেয়াব মোড়লের ছেলে সাহাদত হোসেন। তিনটি মামলার বাদী তিনজন হলেও মামলার বিষয় ছিল একই।
মামলায় বাদীরা উল্লেখ করেন, তাদের এলাকায় দরিদ্র মানুষের বাস, আয় কম, পৌর এলাকায় অন্তর্ভুক্ত হলে, তাদের বেশি করে ট্যাক্স দিতে হবে। ফলে তারা পৌর এলাকার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হতে চান না। এই মামলার কারণে নির্বাচন স্থগিত করে হাইকোর্ট। সম্প্রতি আদালত মামলার বাদীর এলাকা বাদ রেখেই নির্বাচনের নির্দেশ দিয়েছেন। এরপর নির্বাচন কমিশন তফশীল ঘোষণা করে।
