যশোরে ভৈরব নদ থেকে অবৈধ পন্থায় ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন
পুলিশ ও প্রশাসন নিরব থাকায় ভয়ংকর ভূমি
ধ্বসের আশংকায় শংকিত নদের দুই পাড়ের মানুষ
স্টাফ রিপোর্টার : যশোর শহরের উপর দিয়ে প্রবাহমান ভৈরব নদ থেকে অবৈধ পন্থায় ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন এখনও চলছে। পুলিশ ও প্রশাসনের নাকের ডগায় এই বালু উত্তোলন ফলে ভয়ংকর ভূমি ধ্বসের আশংকায় শংকিত জীবন যাপন করছে ।
সরেজমিন তথ্যানুসন্ধানে দেখা গেছে, বোলপুর, পাগলাদাহ, ঝুমঝুমপুর, নীলগঞ্জ তাঁতিপাড়া ও নিউ টাউন বাবলাতলা ব্রীজ থেকে গরীব শাহ মাজার পর্যন্ত এলাকার বাড়িঘর সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ।
ইতিপূর্বে নীলগঞ্জ তাঁতিপাড়া সংলগ্ন ভৈরব নদ থেকে বালি উত্তোলন করায় ক্ষতি যা হওয়ার তা আগেই হয়ে গেছে। যার অশুভ প্রতিক্রিয়ায় এরই মধ্যে ভূমি ধসের কবলে পড়ে ঘরবাড়ি ভাঙতে শুরু করেছে। তাঁতিপাড়ার মুন্সি আকতার আলীর বাড়ির প্রাচীরসহ একাংশ ধসে পড়েছে। ফাটল সৃষ্টি হয়ে ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে একই এলাকার বিজিবির অবসরপ্রাপ্ত সুবেদার মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সাত্তার, প্রতিবন্ধী রোকেয়া খাতুন, রফিক মিয়া, নুরুল ইসলাম, শওকত আলী, রাশেদুল ইসলাম, মুজিবুর রহমানসহ আরও অনেকের বাড়ি।
ক্ষতিগ্রস্ত আকতার আলী বলেন, তার বাড়ির প্রায় দেড় শতক জায়গার অবকাঠামো ভৈরব নদের মধ্যে ধসে পড়েছে। বাকি অংশও চরম ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। তিনি বলেন, পরিবার পরিজন নিয়ে চরম আতঙ্কে আমাদের দিন কাটছে। পুলিশ ও জেলা প্রশাসনের নিরবতার কারনে ও একটি চক্রের অতি লোভের ফসল হিসেবে তারা মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
নওয়াপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য বোলপুর গ্রামের আব্দুস সালাম জানিয়েছেন, আকতার আলীর বাড়ী ধসে পড়ার পর আমাদের মাঝে আতংক আরও বেড়ে গেছে। তিনি বলেন, নদ-নদী থেকে এভাবে বালী উত্তোলন করাটা বেআইনি, এবিষয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা কঠোর পদক্ষেপ নিতে প্রশাসনকে নির্দেশ দিলেও যশোরের প্রশাসন তা আমলে নিচ্ছে না। ফলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ও সরকারের প্রতি দেশের সাধারন মানুষ দিনকে দিন ক্ষুব্ধ হয়ে উঠছে।
এ বিষয়ে যশোর পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আজিজুল ইসলাম বলেন, একটি চক্র ভৈরব নদ থেকে চুক্তি ভিত্তিক বালি তুলে পার্শ্ববর্তী এলাকার জমির মালিকদের গর্ত ভরাট করার কারণে দু’পাড়ের ঘরবাড়ি ধসে যাওয়ার ঝুঁকিতে পড়েছে। অবৈধভাবে বালি উত্তোলন বন্ধ করার বিষয়ে যশোরের প্রশাসন একেবারে নিরব থাকাটা রাষ্ট্র, সমাজ তথা মানুষের জন্য ভয়ংকর ক্ষতির কারন। প্রশাসনের নিরবতার কারনে এই এলাকার ঘরবাড়িসহ অবকাঠামো ধসে নিঃস্ব হবে মানুষ।
ভৈরব নদ থেকে বালি উত্তোলন নিয়ে সংবাদপত্রে সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ায় বালি উত্তোলন সাময়িকভাবে বন্ধ থাকলেও আবারও চলছে পুরোদমে।