রডের বাজারে অস্থিরতা, টন প্রতি বেড়েছে দুই হাজার টাকা

ডেস্ক রিপোর্টঃ দেশের বাজারে আবার রডের দাম বাড়তে শুরু করেছে। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে সব ব্র্যান্ড ও নন-ব্র্যান্ডের প্রতি টন রডে দুই হাজার টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। এখন বাজারে ভালো ব্র্যান্ডের প্রতি টন রড (৭২.৫ গ্রেডের) বিক্রি হচ্ছে ৮৭ হাজার ৫০০ থেকে ৯০ হাজার টাকায়। একই গ্রেডের নন-ব্র্যান্ডের প্রতি টন রড ৮৩ হাজার টাকা থেকে ৮৪ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

নির্মাণসামগ্রীর অন্যতম প্রধান এই উপকরণটির দাম বাড়ার কারণ হিসেবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে রডের কাঁচামাল স্ক্র্যাপের দাম বেড়েছে অনেক। একই সঙ্গে ডলারের দামও বেড়েছে। এ ছাড়া ঘাটতিও দেখা দিয়েছে কাঁচামালের। কাঁচামালের ঘাটতির কারণে কমে গেছে উৎপাদনও। যার কারণে কোম্পানিগুলোর কাছে অর্ডার দিয়েও চাহিদামতো রড পাচ্ছেন না বলেও জানান ব্যবসায়ীরা। তবে এক সপ্তাহের ব্যবধানে টনে দুই হাজার টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি পাওয়ায় রডের বাজার আবারো স্থবির হয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।

বিএসআরএম ব্র্যান্ডের প্রতি টন রড ৮৯ হাজার থেকে ৯০ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কেএসআরএম ব্র্যান্ডের রড ৮৮ হাজার থেকে ৮৯ হাজার টাকায়, আরএসএম ব্র্যান্ডের রড প্রতি টন ৮৭ হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। জিপিএইচ ইস্পাত ব্র্যান্ডের প্রতি টন রড ৮৮ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

নন-ব্র্যান্ডের রডের মধ্যে এসএস, জেএসআরএম, জেডএসআরএম ও এমএসডাব্লিউর কোম্পানির প্রতি টন রড বিক্রি হচ্ছে ৮৩ হাজার টাকা থেকে ৮৪ হাজার টাকায়। রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) বাজার দরেও দেখা গেছে, এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি টন রডে ৫০০ টাকা থেকে এক হাজার ৭২৫ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। গত সপ্তাহে প্রতি টন রডের দাম ছিলো ৮৫ হাজার টাকা থেকে ৮৮ হাজার ৫০০ টাকা। দাম বেড়ে প্রতি টন রড হয়েছে ৮৫ হাজার ৫০০ টাকা থেকে ৯০ হাজার ২৫০ টাকা।

জিপিএইচ ইস্পাত কোম্পানির অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এএমডি) আলমাস শিমুল বলেন, ‘রডের কাঁচামালের দাম বাড়ার পাশাপাশি বিভিন্ন কেমিক্যালের দামও প্রায় দ্বিগুণের বেশি বেড়ে গেছে। জাহাজ ভাড়া আগের চেয়ে দুই-তিন গুণ বেড়েছে। জাহাজ ডেমারেজ আগে দৈনিক ১৫ থেকে ২০ হাজার ডলার ছিলো, সেটি এখন ৪০ থেকে ৪৫ হাজার ডলার হয়েছে। জ্বালানি তেলের দামও বেড়েছে। বন্দর থেকে কারখানায় মালামাল আনার পরিবহন খরচও অনেক বেড়েছে। এভাবে প্রতিটিই ক্ষেত্রেই খরচ বেড়ে যাওয়ায় রডের উৎপাদন খরচ বেড়েছে। যার প্রভাব পড়ছে দেশের বাজারে।’

ঈদের পর সিমেন্টের দাম না বাড়লেও দু-এক দিনের মধ্যে সিমেন্টের বস্তাপ্রতি আরো ২০ টাকা করে বাড়বে বলেও জানান ব্যবসায়ীরা। খুচরায় প্রতি বস্তা সুপারক্রিট সিমেন্ট বিক্রি হচ্ছে হয় ৫০০ টাকা, বসুন্ধরা সিমেন্ট ৫০০ টাকা, স্ক্যান ৫৪০ টাকা, মীর সিমেন্ট ৪৮০ টাকা, ফ্রেশ সিমেন্ট ৪৯০ টাকা, প্রিমিয়ার সিমেন্ট ৪৮০ টাকা, শাহ স্পেশাল ৫১০ টাকা ও শাহ সিমেন্ট ৪৮০ টাকায় বিক্রি হয়।

তিনি বলেন, ‘সিমেন্টের দাম দুই-এক দিনের মধ্যেই বস্তাপ্রতি আরো ২০ টাকা পর্যন্ত বাড়বে। দাম বাড়ানোর বিষয়টি কোম্পানিগুলো আমাদের জানিয়ে দিয়েছেন। ’

রড উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা যায়, ইস্পাতের পাশাপাশি ইস্পাত তৈরির কাঁচামাল বিলেট, প্লেট ও স্ক্র্যাপের দামও টনে দুই থেকে চার হাজার টাকা বেড়েছে। বর্তমানে বাজারে প্রতি টন স্ক্র্যাপ ৫৮ হাজার টাকা, প্লেট ৬৭ হাজার টাকা এবং বিলেট ৭২ হাজার টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে স্ক্র্যাপ ৫৬ হাজার ৫০০ টাকা, প্লেট ৬৩ হাজার ৫০০ টাকা এবং বিলেট ৭১ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here