রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শায়িত হলেন কলারোয়ার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোসলেম উদ্দিন কমান্ডার

জুলফিকার আলী,কলারোয়া(সাতক্ষীরা)প্রতিনিধি: সাতক্ষীরা কলারোয়ায় সকলকে কাদিয়ে চলে গেলেন শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলা মামলার বাদী বীর মুক্তিযোদ্ধা মোসলেম উদ্দিন (৭৩) (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)।
আরও পড়ুন>>>সাপ্তািহক আগামীর কন্ঠের সম্পাদক আইউবের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাত ও প্রতারণা মামলা
রোববার ভোর ৫টার দিকে কলারোয়ায় নিজ বাড়িতে তাঁর মৃত্যু হয়। বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছিলেন তিনি। মোসলেম উদ্দিন ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ৮ নম্বর সেক্টরে কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করেন। তখন থেকে তিনি মোসলেম কমান্ডার নামে পরিচিত।
মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী সাতক্ষীরা জেলা পরিষদ সদস্য রোকেয়া মোসলেম, একমাত্র ছেলে কলারোয়া গার্লস পাইলট হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক বদরুজ্জামান বিপ্লব, মেয়ে কাজিরহাট ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক সুরাইয়া ইয়াসমিন রত্না সহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
আরও পড়ুন>>>বিয়ানীবাজারে হেফাজতের ডাকা হরতাল পালন হতাহত ২ মাঠে আছে আওয়ামী লীগ
বীর মুক্তিযোদ্ধা মোসলেম উদ্দিনের মৃত্যুর খবরে জেলায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তিনি ছিলেন কলারোয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। তাঁকে শেষবারের মতো দেখার জন্য মুক্তিযোদ্ধা, অগনিত শুভাকাংক্ষি রাজনৈতিক সহকর্মী ও সমাজের সর্বস্তরের মানুষ তাঁর বাড়িতে সমবেত হয়েছেন।
রবিবার (২৮ মার্চ) বাদ আছর কলারোয়া জিকেএমকে পাইলট হাইস্কুল ফুলবল মাঠে আনুষ্ঠানিকভাবে তাকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। পরে সেখানে হাজারো মানুষের অংশগ্রহণে প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে কলারোয়ার তুলসীডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে দ্বিতীয় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
আরও পড়ুন>>>মানতা ওরা জলেভাসা জীবন ওদের..নৌকায় জন্ম,বিয়ে ও মৃত্যু !
জানাজায় অংশগ্রহণ করেন-তালা-কলারোয়ার সংসদ সদস্য এড. মুস্তফা লুৎফুল্লাহ এমপি, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক বদিউজ্জামান, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ¦ নজরুল ইসলাম, সাবেক এমপি বিএম নজরুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) শামসুল আলম, কলারোয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার জুবায়ের হোসেন চৌধুরী, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার মোশারফ হোসেন মশু, সাতীরা প্রেসকাবের সাবেক সভাপতি ও দৈনিক কালের চিত্র পত্রিকার সম্পাদক অধ্যক্ষ আবু আহমেদ, কলারোয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম লালটু, কলারোয়া পৌর সভার মেয়র মাস্টার মনিরুজ্জামান বুলবুল, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আক্তার হোসেন, কলারোয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মীর খায়রুল কবীর, শ্যামনগর উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউল হক দোলন, যুদ্ধকালীন কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল গফফার, বীর মুক্তিযোদ্ধা সাবেক কমান্ডার গোলাম মোস্তফা, সাবেক ডেপুটি কমান্ডার আবুল হোসেন, সাবেক সাংগঠনিক কমান্ডার সৈয়দ আলী গাজী, উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক আলিমুর রহমান, ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল হাসান, মাহবুবর রহমান মফে, আবজাল হোসেন হাবিল, মোয়াজ্জেম হোসেন, মনিরুল ইসলাম মনি, এসএম মনিরুল ইসলাম, আসলামুল আলম আসলাম, সামসুদ্দিন আল মাসুদ বাবু, সম মোরশেদ আলী, মাস্টার নুরুল ইসলাম, সাংবাদিক সরদার জিল্লুর সহ উপজেলা প্রশাসনের সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারী এবং বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
প্রয়াত মোসলেম উদ্দিন ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট কলারোয়ায় শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলা মামলার বাদী ছিলেন। দীর্ঘ ১৯ বছর পর গত ৪ ফেব্রুয়ারী ওই মামলার রায় ঘোষণা করা হয়। রায়ে বিএনপির সাবেক সাংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলামসহ ৫০ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।