লোহাগড়ায় নবগঙ্গা নদীপাড়ের মাটি কেটে সাবাড়
রাশেদ জামান,(নড়াইল) লোহাগড়া প্রতিনিধি: নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত নবগঙ্গা নদীর পাড়ের মাটি অবৈধ ভাবে কেটে নিচ্ছে একদল দূর্বৃত্ত।
পুলিশ ও প্রশাসন নিরব থাকায় ভয়ংকর ভূমি
ধ্বসের আশংকায় শংকিত নদের দুই পাড়ের মানুষ
আজ বৃহস্পতিবার (১৯ নভেম্বর) নবগঙ্গা নদীর চর-মল্লিকপুর এলাকায় অনুসন্ধান দল দেখতে পায় কয়েক টি ট্রাকে করে নদীর পাড়ের মাটি কাটা হচ্ছে। সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে ট্রাক রেখে পালিয়ে যায় শ্রমিক এবং চালক। এ সময় কথা হয় মাটি কাটায় নিয়োজিত ভেকু ড্রাইভারদের সাথে। তারা বলেন, হাজি নুর আলম আমাদের মাটি কাটা বাবদ কন্ট্রাক করে এনেছে। তার কথাতেই মাটি কেটে ট্রাকে লোড করছি।
সরেজমিন তথ্যানুসন্ধানে দেখা গেছে নদী পাড়ের মাটি দিয়ে অনেকে পুকুর ভরাটের কাজ চলছে,পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে এসব মাটি যাচ্ছে উপজেলার অনুমোদন বিহীন বিভিন্ন ইট ভাটায় ।এই মাটি বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে মাটি খেকো ওই দূর্বৃত্ত চক্রের সদস্যরা। দিনে ও রাতে বিরামহীন ভাবে অপরিকল্পিত মাটি কেটে নেয়ার ফলে নদী ভাঙনের শঙ্কায় রয়েছে নদী তীরবর্তী কয়েকশত পরিবার।
এই দূর্বৃত্ত চক্রের অন্যতম সদস্য হলেন নুর আলম, তার বাড়ি উপজেলার মল্লিকপুর ইউনিয়নের পাঁচুড়িয়া গ্রামে। নুর আলমের সহযোগী মল্লিকপুর গ্রামের আঃ হকের ছেলে সবুজ, পার-মল্লিকপুর গ্রামের মৃত খালেক শেখের ছেলে ওকি শেখ, মান্নান শেখের ছেলে বিপুল শেখসহ ৮/১০ জনের দূর্বৃত্তরা নদীর মাটি অবাদে কাটছে । মাটি খেকো নুর আলম এলাকায় ’হাজি সাহেব’ নামে পরিচিত।
আরো পড়ুন:
লোহাগড়ায় ভুল চিকিৎসায় শিশু মৃত্যুর অভিযোগ
বেনাপোলে ১ কোটি ১০ লাখ টাকার স্বর্ণসহ চোরাকারবারি আটক
ওই দূর্বৃত্ত চক্রের সদস্যরা নদীর মাটি কাটা শুরু করলে স্থানীয় গ্রামবাসী বাঁধা দিলেও তা বন্ধ হয়নি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকে বলেছেন, ওই জমি আগে আমাদের দখলে ছিল, এখন নদী কাটার কারনে আমরা সরে গেছি। আর উল্টো হাজী নুর আলম সিন্ডিকেটের সদস্যরা গ্রামবাসীদের স্পস্ট জানিয়ে দেয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের অনুমতি নিয়েই নদী পাড়ের মাটি ইট-ভাটায় বিক্রি করা হচ্ছে। এ নিয়ে ঝামেলা করলে বিপদ হবে-এ রকমই হুমকি দিয়েছেন নুর আলম।
প্রায় এক মাস ধরে দিনের বেলায় অবৈধ ভাবে শতশত ট্রাকভর্তি মাটি পাচার হলেও নড়াইল পানিউন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা বলছেন, তারা কিছুই জানেন না। এ বিষয়ে কথা হয় নড়াইল জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত পানি উন্নয়ন বোর্ডের ইঞ্জিনিয়ার উজ্জল কুমার সেন এর সাথে। তিনি বলেন, মাটি বিক্রি করার কোন নিয়ম নেই, তবে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান জন্য মাটি দেয়া যায়, অনুমতি সাপেক্ষে। তিন চার মাস আগে কাজ বন্ধ হয়েছে, এখন তো মাটি দেওয়ার কথা না। তিনি আরো বলেন এইমাত্র রিপোর্ট পেলাম যে অবৈধভাবে কিছু লোক নদীর পাড় কেটে মাটি নিচ্ছে। আমি ওই এলাকায় গিয়ে তদন্ত করে বিষয়টি দেখবো ।
মাটি কাটা সিন্ডিকেটের অন্যতম সদস্য হাজি নুর আলম বলেন, আমি পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে কথা বলেছি। তারা আমাকে অনুমতি দিয়েছে। তিনি আরও বলেন, আমি ভেকু- ট্রাকটর ভাড়া দিয়েছি। নদীর মাটি কাটার বিষয়টি তিনি এড়িয়ে যান।