চুয়াডাঙ্গায় সরকারী চাল পেতে দিতে হচ্ছে ১-৩ হাজার টাকা!
জনি আহমেদ, চুয়াডাঙ্গাঃ সারা দেশের ন্যায় নিত্য সকল পণ্যের দাম ঊর্ধ্বগতির পাশাপাশি চালের দামও বর্তমানে ক্রয় ক্ষমতার বাইরে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষের। এ লক্ষ্যে সরকার ওই সকল মানুষের কথা চিন্তা করে চুয়াডাঙ্গা জেলায়ও খাদ্যবান্ধব কর্মসূচীর আওতায় ১৫ টাকা কেজিতে চাল বিক্রি শুরু করেছেন।
সেইসাথে খোলাবাজারে (ওএমএস) বিক্রির জন্য চালের বরাদ্দ দ্বিগুণ বাড়িয়েছে সরকার। এর আগে একজন ডিলার এক টন করে চাল পেলেও এখন একজন ডিলার প্রতিদিন দুই টন করে চাল বিক্রির অনুমোদন পেয়েছেন। তবে টিসিবির কার্ডধারীরা ৩০ টাকা কেজিতে প্রতিমাসে ২ বার ৫ কেজি করে চাল কিনতে পারবে এবং ওএমএসের আওতায় শুক্র ও শনিবার বাদে সপ্তাহে ৫ দিন ৫ কেজি করে চাল কিনতে পারবে।
আরও পড়ুন>>>আজও চালু হয়নি মহাজন- বড়দিয়া ঘাটের ফেরি
কিন্তু সরকারের এমন মহতী উদ্যোগকে বানচাল করতে জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলার বেলগাছি ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদুল হাসান চঞ্চলের ঘনিষ্ঠ কতিপয় ব্যক্তিরা মরিয়া হয়ে উঠেছে। সরকারের সুনাম নষ্ট করতে ১০ টাকায় চালের কার্ড করে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিভিন্ন দরিদ্র মানুষের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে অর্থ। যা সরকার বিরোধী কর্মকাণ্ড।
এদিকে, ওই সকল দরিদ্র ও স্বল্প আয়ের মানুষ সরকারী সুবিধা পেতে চেয়ারম্যান ও মেম্বরদের কাছে ধর্ণাও দিচ্ছেন।
তবে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে ইউনিয়নের ফরিদপুর গ্রামের সাবেক মেম্বর বিপ্লব, ডামোশ গ্রামের মিনারুল ও বেলগাছি গ্রামের শাহিনের বিরুদ্ধে। এরা সকলেই সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানের ঘনিষ্ঠজন বলেও জানান অভিযোগকারীরা।
অনুসন্ধান করে জানা গেছে, ফরিদপুর ১নং ওয়ার্ডের রাকিবুল ইসলামের কাছ থেকে ১ হাজার, সোনার কাছ থেকে ১১শ, হেলালের কাছ থেকে ১হাজার, মতিয়ারের কাছ থেকে ১ হাজার, মনিরের কাছ থেকে ১ হাজার, ডাবলুর কাছ থেকে ১হাজার, বেলগাছি ৮নং ওয়ার্ডের লিপুর কাছ থেকে ১১শ, রইতনের কাছ থেকে ১১ শ, সোহরাবের কাছ থেকে ৩ হাজার, ৭নং ওয়ার্ডের হাসিনা খাতুনের কাছ থেকে ৫শ’ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগীরা।
তবে অনেকের ধারণা পুরো ইউনিয়নজুড়েই এই চক্রটি চেয়ারম্যানের নাম ভাঙিয়ে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে অসহায় গরীব মানুষের কাছ থেকে।
সরকারী চাল পেতে দিতে হচ্ছে টাকা
এদিকে, চেয়ারম্যানের ঘনিষ্ঠ এই চক্রের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে বেশ কয়েকজন মেম্বর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট লিখিত অভিযোগও করেছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ইউপি মেম্বার বলেছেন, এমন পরিস্থিতি সামলাতে চেয়ারম্যানও ব্যর্থ হচ্ছেন। না পেরে তিনি (চেয়ারম্যান) সতর্ক করতে ইউনিয়নের প্রতিটি ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে মাইকিংও করেছেন।
সরকারী চাল পেতে দিতে হচ্ছে টাকা
এ ব্যাপারে বেলগাছি ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদুল হাসান চঞ্চল বলেন, ঘটনা জানার পরপরই কেউ যেন প্রতারণার শিকার না হয় সেজন্য ইউনিয়নবাসীকে সতর্ক করতে আমি গত ১ সেপ্টেম্বর মাইকিং করেছি। অর্থ হাতিয়ে নেয়া চক্রের দুয়েকজন তার দলের লোক বলেও স্বীকার করেন চেয়ারম্যান।