১৭ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৩রা মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
shadhin kanto

সুন্দরবনে গরানের পারমিট বন্ধ থাকায় হাজার হাজার বাওয়ালী চরম বিপাকে

প্রতিনিধি :
স্বাধীন কণ্ঠ
আপডেট :
ডিসেম্বর ৬, ২০২০
195
বার খবরটি পড়া হয়েছে
শেয়ার :
| ছবি : 

শ্যামনগর (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি: সুন্দরবনে গরার কাঠের পারমিট বন্ধ থাকায় হাজার হাজার বাওয়ালী পড়েছে বিপাকে। অপরদিকে প্রতি বছর গরান কাঠ না কাটায় সুন্দরবনের গরান সমৃদ্ধ এলাকায় গাছের প্রজনন বাধা গ্রস্থ্য হচ্ছে।

অবিলম্বে গরান কাটার পারমিট চালু করার জোর দাবি জানিয়েছে সুন্দরবন সংলগ্ন বাওয়ালীরা।
বন বিভাগ সুত্রে জানা গেছে, ২০০৭ সালের সামুদ্রিক ঘুর্নিঝড় সিডর সুন্দরবনে ওপর দিয়ে আঘাত হানার পর ঐ বছর সরকার গরান ও গোলপাতা কর্তন নিষিদ্ধ কওে দেয়। দু বছর পর গোলপাতার পারমিট চালু করা হলেও গরানের পারমিট আর চালু করেনি বন বিভাগ। সেই থেকে হাজার হাজার বাওয়ালী চরম বিপর্যয়ের মধ্যে দিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। এখনও অনেক বাওয়ালী প্রতি বছর গরান কাটার অপোয় নৌকা সংস্কার করে আশায় বুক বেধে বসে থাকে।

ইতিমধ্যে অনেক বাওয়ালী পেশা পরিবর্তন করে দিন মুজুরের কাজ বেছে নিয়েছে। অনেকের নৌকা অকেজো হয়ে পড়ে আছে। তবে পারমিট বন্ধ করা হলেও এর সাথে সংশ্লিষ্টদের কোন কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা না করায় চরম ােভের সঞ্চয় ঘটে বাওয়ালীদের মাঝে।

বাওয়ালীদের সুত্রে জানা গেছে, সত্তর দশকে সুন্দরবনে গরান, গোলপাতা, হেতাল, গেওয়া, সুন্দরী কাঠ কাটার পারমিট দিতো বন বিভাগ। নব্বই দশকের পর এসকল পারমিট কমিয়ে শুধুমাত্র সুন্দরী, গরান ও গোলপাতার পারমিটের অনুমতি প্রদান করা হতো। এ কারনে সুন্দরবনে বাওয়ালীর সংখ্যা অর্ধেক নেমে আসে। প্রতিমধ্যে সুন্দরী কাঠ কাটার পারমিটও বন্ধ কওে দেওয়া হয়। সিডরের পর গরানের পারমিট বন্ধ করা হলেও এখন পর্যন্ত তা বহাল রয়েছে। আর সেই থেকে হাজার হাজার বাওয়ালী চরম বির্পযয়ের মধ্যে দিয়ে সিমাহীন কষ্টের মধ্যে দিনতিপাত করে আসছে।

নলিয়ান এলাকার বাওয়ালী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, পশ্চিম সুন্দরবনের সাতীরা রেঞ্জের নোটাবেকি, পুষ্পকাটি, আগুনজালা, দোবেকি, কলাগাছি, জামতলা, কদমতলা, বনাঞ্চলে প্রচুর গরান গাছ জন্মেছে। অপরদিকে খুলনা রেঞ্জের চালকি, আন্দার মানিক, গেওয়াখালী, পাটকোষ্টা, হংসরাজ, নীরকোমল, শোলকমনি এলাকায় গরান দেখা গেছে প্রচুর। এখন গরানের পারমিট দিলে বনের কোন তি হবেনা।

কয়রা উপজেলার ৪নং কয়রা গ্রামের বাওয়ালী রিয়াছাদ আলী সানা বলেন, দীর্ঘদিন গরান না কাটায় সুন্দরবনের সর্বত্রই ব্যাপকভাবে গরানের বিস্তার ঘটেছে। আর ব্যাপকভাবে গরানের প্রভাব পড়ায় ঐ সকল এলাকায় অন্য গাছ বংশ বিস্তার কাজে বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। অন্যদিকে সরকার কোটি কোটি টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
সুন্দরবন বাওয়ালী ফেডারেশনের সভাপতি মীর কামরুজ্জামান বাচ্চু বলেন, প্রতি বছর গরান না কাটলে গাছের ঝোপ ঝাপড়ায় সুন্দরবনের অন্য প্রজাতির গাছ জন্মাতে বাধা ঘটে। এ ছাড়া গরান গাছ না কাটায় অন্যান্য প্রজাতির গাছ স্বাভাবিক গতিতে বেড়ে উঠতে পারেনা। দ্রুত গরান কর্তন না করা হলে বয়স ভিত্তিক সর্ববৃহৎ গরান বাগান ধংবসের আশংকা রয়েছে। বিষয়টি বিবেচনা এনে অবিলম্বে গরানের পারমিট চালুর দাবি জানান তিনি।

সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের (ডিএফও) ড.আবু নাসের মোহসীন হোসেন বলেন, গরানের পারমিটের বিষয়টি মন্ত্রনালয়ের ব্যাপার। মন্ত্রনালয়ের নির্দেশনা না পেলে গরানের পারমিট দেওয়া সম্ভব হবেনা।

গরম খবর
menu-circlecross-circle linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram