স্ত্রীর পরকীয়ায় খুন হন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান মান্নাত
![](https://www.shadhinkantho.com/wp-content/uploads/2020/10/Capture-16.png)
স্টাফ রিপোর্টার(যশোর): যশোরে ইসরাফিল হোসেন ওরফে মন্নাত (৪২) মুক্তিযোদ্ধার সন্তানের হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন করেছে পুলিশ। গত শনিবার (২৪ অক্টোবর) যশোর শহরের কারবালা এলাকা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছিল।
পুলিশ বলছে, স্ত্রীর পরকীয়ার জের ধরে ইসরাফিল হোসেন মান্নাতকে হত্যা করা হয়েছে। মান্নাতের ভগ্নিপতি (ছোট বোনের স্বামী) শাহ আলমের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল তার স্ত্রী শারমিন সুলতানা সুমির।
সোমবার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে নিজ কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান যশোরের পুলিশ সুপার মুহাম্মদ আশরাফ হোসেন।
পুলিশ জানায়, গত ২৩ অক্টোবর দিবাগত রাতের কোনো এক সময় খুন হন ইসরাফিল হোসেন মান্নাত। তিনি যশোরের মণিরামপুর উপজেলার কাশিপুর খেদাপাড়া গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা বজলুর রহমানের ছেলে। মান্নাত যশোর শহরের বকচর বিহারি কলোনির মোস্তফার বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। ২৪ অক্টোবর সকালে শহরের সি অ্যান্ড বি রোডের কৃষিবিদ মুক্তিযোদ্ধা শাহ আলমের বাসার সামনে ড্রেনের পাশ থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় নিহত মান্নাতের মা আনোয়ারা বেগম বাদী হয়ে মামলা করেন। তারও অভিযোগ , পুত্রবধূ শারমিন সুলতানা সুমির পরকীয়ার বলি হয়েছে তার সন্তান মান্নাত।
পুলিশ সুপার মুহাম্মদ আশরাফ হোসেন জানান, মরদেহ উদ্ধারের পর ঘটনাটি চাঞ্চল্যকর ও ক্লুলেস হওয়ায় জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওপর তদন্তভার ন্যস্ত করা হয়। ঘটনা তদন্ত করে পুলিশ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেফতার করেছে।
তারা হলেন- যশোর সদর উপজেলার মাহিদিয়া গ্রামের মো. হাবিবুর রহমানের ছেলে মো. আল-আমিন (১৯), শহরের পুরাতন কসবা কাঁঠালতলা নান্টুর বাগানের আবু তাহেরের ছেলে মো. রিফাত (১৯), সুজলপুরের আব্দুর রশিদ শেখের ছেলে মো. রায়হান শেখ (২২) এবং একই গ্রামের শফিকুল ইসলাম বাবুর ছেলে মো. নয়ন হোসেন (২০)। তাদের কাছ থেকে একটি পাইপ, একটি ইট, একটি মোটরসাইকেল এবং মোবাইল ফোন উদ্ধার হয়েছে। এগুলো হত্যার কাজে ব্যবহার করা হয়েছিল।
পুলিশ সুপার আরও জানান, মান্নাতের স্ত্রী শারমিন সুলতানা সুমির সঙ্গে মান্নাতের ভগ্নিপতি শাহ আলমের পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়। এ নিয়ে মান্নাত-সুমির সংসারে অশান্তি ছিল। একপর্যায়ে সুমি মান্নাতকে তালাক দিয়ে শাহ আলমের সঙ্গে কোটচাঁদপুরে গিয়ে সংসার পাতেন। কিন্তু মান্নাত তাদের সন্ধান পেয়ে সেখানে সালিশ বসিয়ে সুমিকে তালাক দেয়ার জন্য শাহ আলমকে বাধ্য করেন।
এসব ঘটনার কারণে ‘পথের কাঁটা’ দূর করতে শাহ আলম এই হত্যার পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ২৩ অক্টোবর রাতে ফোনে ডেকে নিয়ে মান্নাতকে ইটের আঘাতে হত্যা করা হয়। পুলিশ পলাতক শাহ আলম, মান্নাতের স্ত্রী সুমিসহ অন্যদের আটকের জন্য অভিযান অব্যাহত রেখেছে।
প্রেস ব্রিফিংয়ে যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গোলাম রব্বানী, মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, অপু সরোয়ার, জামাল আল নাসের, যশোর কোতোয়ালি থানার ওসি মনিরুজ্জামান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।