১০ ডিসেম্বর দৃশ্যমান হবে সম্পূর্ণ পদ্মা সেতু
![১০ ডিসেম্বর দৃশ্যমান হবে সম্পূর্ণ পদ্মা সেতু](https://www.shadhinkantho.com/wp-content/uploads/2020/11/পদ্মা-সেতু.jpg)
ডেস্ক রিপোর্ট: পদ্মা সেতুর ৩৮তম স্প্যান বসানোর ছয় দিনের মাথায় শুক্রবার দুপুর একটার দিকে ১০ ও ১১ নম্বর খুঁটির উপরে বসল ৩৯তম স্প্যান। ফলে সেতুর মূল অবকাঠামো এখন ৫ হাজার ৮৫০ মিটার দৃশ্যমান হয়ে উঠেছে।
আর মাত্র দু'টি স্প্যান বসালেই সম্পূর্ণ পদ্মা সেতু দৃশ্যমান হবে। আগামী ২ ডিসেম্বর ১১ ও ১২ নম্বর খুঁটির ওপর ৪০তম স্প্যান এবং ১০ ডিসেম্বর ১২ ও ১৩ নম্বর খুঁটির ওপর সেতুর সর্বশেষ ৪১তম স্প্যান বসানোর লক্ষ্য নিয়ে চলছে কর্মযজ্ঞ।
এর আগে গত ২১ নভেম্বর মাওয়া প্রান্তেরে ১ ও ২ নম্বর খুঁটির উপর বসানো হয় ৩৮তম স্প্যন। চলতি নভেম্বর মাসে মাওয়া প্রান্তে ৪টি স্প্যান খুঁটির উপর বসনো হলো বলে দায়িত্বশীল প্রকৌশলী সূত্রে জানা গেছে।
২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্ত থেকে খুঁটির উপর স্প্যান বসানো শুরু হয়েছিল পদ্মা সেতুর। তিন বছর ৫৭ দিনের মাথায় শুক্রবার পর্যন্ত ৩৯টি স্প্যান বসানো হলো।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আগামী ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যেই সব স্প্যান বসানোর কাজ শেষ হয়ে যাবে।
পদ্ম সেতু প্রকল্পের প্রকৌশলী সূত্র জানায়, কুয়াশা কাটতে শুরু করার পর শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে লৌহজংয়ের কুমারভোগ কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডের স্টক জেটি থেকে ৩৯তম স্প্যান নিয়ে খুঁটির উদ্দেশ্যে রওনা হয় ক্রেনবাহী ভাসমান জাহাজ 'তিয়ান-ই'। বেলা সাড়ে ১১টার মধ্যে মাওয়ার অদূরে থাকা ১০ ও ১১ নম্বর খুঁটির কাছে পৌঁছে যায় জাহাজটি। এরপর ধূসর রঙয়ের ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ৩ হাজার ১৪০ টন ওজনের স্প্যানটি ক্রেন দিয়ে আটকে খুঁটির উপর বসিয়ে দেওয়া হয়। বর্তমানে স্প্যানটি স্থাপনের অন্যান্য কাজ চলছে।
পদ্মা সেতুর (মূল সেতু) নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান মো. আবদুল কাদের জানান, ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর জাজিরা প্রান্তের ৩৭ ও ৩৮ নম্বর খুঁটিতে প্রথম স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে দৃশ্যমান হয় স্বপ্নের পদ্মা সেতু। এরপর একের পর এক খুঁটির ওপর বসানো হয় স্প্যান। জাজিরা প্রান্তের সবগুলো স্প্যান বসানো সম্পন্ন হলে মাওয়া প্রান্তে শুরু হয় স্প্যান বসানোর কাজ।
৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের দ্বিতল পদ্মা সেতুতে সব মিলিয়ে ৪২টি খুঁটি রয়েছে। এর মধ্যে মাওয়া প্রান্তে ২১টি ও জাজিরা প্রান্তে ২১টি। এই ৪২টি খুঁটির ওপর বসবে ৪১টি স্প্যান। এর মধ্যে ৪০টি খুঁটি থাকবে পানিতে আর দু'টি ডাঙায়। ডাঙায় থাকা দু'টি খুঁটি সংযোগ সড়কের সঙ্গে মূল সেতুকে যুক্ত করবে। ৬টি মডিউলে বিভক্ত থাকবে পদ্মা সেতুর মাওয়া প্রান্তে এক হাজার ৪৭৮ মিটার ভায়াডাক্ট বা ঝুলন্ত পথ আর জাজিরা প্রান্তে থাকবে এক হাজার ৬৭০ মিটার।
বর্তমান সরকারের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী, নিজস্ব অর্থায়নে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে দ্বিতল পদ্মা সেতুর পুরোটাই নির্মিত হবে স্টিল ও কংক্রিট স্ট্রাকচারে। সেতুর উপরে থাকবে কংক্রিট ঢালাইয়ের চার লেনের মহাসড়ক। আর নিচ দিয়ে যাবে রেললাইন।