লোহাগড়ায় নবগঙ্গা নদী খনন প্রকল্পে ৮০ লক্ষ টাকার মাটির হদিস নেই, নিরব প্রশাসন

অবৈধ খননকার্য
লোহাগড়ায় নবগঙ্গা নদীতে অবৈধ খননকার্য

রাশেদ জামান, লোহাগড়া প্রতিনিধি: লোহাগড়া উপজেলায় নবগঙ্গা নদীর পাড়ের মাটি অবৈধ ভাবে কেটে নিচ্ছে নূর আলম ও তার সহযোগীরা। এই চক্রের সদস্যরা প্রকাশ্যে প্রশাসনের নাকের ডগায় এহেন অপকর্ম করলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ রয়েছে নিরব-নির্বিকার। প্রায় এক মাস ধরে ওই চক্র অবৈধভাবে মাটি কাটার কাজ বাঁধাহীন ভাবে চালিয়ে যাচ্ছিল। স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীরা খবর পেয়ে সরজমিনে গিয়ে মাটি কাটা স্থান পরিদর্শন করে সত্যতা নিশ্চিত করেন।

সাময়িক মাটি কাটা বন্ধ হলেও এর আগে প্রায় ৭০-থেকে ৮০ লক্ষ টাকার মাটি কাটা হয়েছে।

দূর্বৃত্ত চক্রের অন্যতম সদস্য হলেন নুর আলম, তার বাড়ি উপজেলার মল্লিকপুর ইউনিয়নের পাঁচুড়িয়া গ্রামে। নুর আলমের সহযোগী মল্লিকপুর গ্রামের আঃ হকের ছেলে সবুজ, পার-মল্লিকপুর গ্রামের মৃত খালেক শেখের ছেলে ওকি শেখ, মান্নান শেখের ছেলে বিপুল শেখসহ ৮/১০ জনের দূর্বৃত্তরা নদীর মাটি অবাদে কাটছে । মাটি খেকো নুর আলম এলাকায় ’হাজি সাহেব’ নামে পরিচিত।

অভিযোগ রয়েছে,পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে এসব মাটি যাচ্ছে উপজেলার অনুমোদন বিহীন বিভিন্ন ইট ভাটায়। এ ছাড়া নদী পাড়ের মাটি দিয়ে অনেকে পুকুর ভরাটের কাজ ও করছেন। এই মাটি বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে মাটি খেকো ওই দূর্বৃত্ত চক্রের সদস্যরা।

দিনে ও রাতে বিরামহীন ভাবে অপরিকল্পিত মাটি কেটে নেয়ার ফলে নদী ভাঙনের শঙ্কায় রয়েছে নদী তীরবর্তী কয়েক শত পরিবার।

ওই দূর্বৃত্ত চক্রের সদস্যরা নদীর মাটি কাটা শুরু করলে স্থানীয় গ্রামবাসী বাঁধা দিলেও তা বন্ধ হয়নি। হাজী নুর আলম সিন্ডিকেটের সদস্যরা গ্রামবাসীদের স্পস্ট জানিয়ে দেয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের অনুমতি নিয়েই নদী পাড়ের মাটি ইট-ভাটায় বিক্রি করা হচ্ছে। কিন্তু প্রায় এক মাস ধরে দিনের বেলায় অবৈধ ভাবে শতশত ট্রাকভর্তি মাটি পাচার হলেও নড়াইল পানিউন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা বলছেন, তারা কিছুই জানেন না। এ বিষয়ে কথা হয় নড়াইল জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত পানি উন্নয়ন বোর্ডের ইঞ্জিনিয়ার উজ্জল কুমার সেন এর সাথে।

উজ্জল কুমার সেন বলেন, মাটি বিক্রি করার কোন নিয়ম নেই, তবে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান জন্য মাটি দেয়া যায়, তাও অনুমতি সাপেক্ষে। তিন চার মাস আগে কাজ বন্ধ হয়েছে, এখন তো মাটি দেওয়ার কথা না। তিনি আরো বলেন এইমাত্র জানতে পেলাম যে অবৈধভাবে কিছু লোক নদীর পাড় কেটে মাটি নিচ্ছে। আমি ওই এলাকায় গিয়ে তদন্ত করে বিষয়টি দেখবো ।

বৃহস্পতিবার নবগঙ্গা নদীর চর-মল্লিকপুর এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে,কয়েক টি ট্রাকে করে নদী পাড়ের মাটি কেটে পাচার করা হচ্ছে। সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে ট্রাক রেখে পালিয়ে যায় শ্রমিক এবং চালক।

এ সময় কথা হয় মাটি কাটায় নিয়োজিত ভেকু ড্রাইভারদের সাথে। তারা বলেন, হাজি নুর আলম আমাদের মাটি কাটা বাবদ কন্ট্রাক করে এনেছে। তার কথাতেই মাটি কেটে ট্রাকে লোড করছি।

মাটি কাটা সিন্ডিকেটের অন্যতম সদস্য হাজি নুর আলম বলেন, আমি পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে কথা বলেছি। তারা আমাকে অনুমতি দিয়েছে। তিনি আরও বলেন, আমি ভেকু-ট্রাকটর ভাড়া দিয়েছি।

আরও পড়ুন:
টাকার লোভে বউ বেচে দিলেন…
সরকারি কর্মকর্তাদের কানাডায় বেগমপাড়ার বাড়ির তালিকা চেয়েছে দুদক
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে সাড়ে ৫ বছরের শিশুকে ধর্ষণ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here