রোববার বিকেল ৫টায় যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) স্বাস্থ্য বিজ্ঞান অনুষদের শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগে ২০২০-২১ সেশনে তৃতীয় ভর্তি বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। বিজ্ঞপ্তি অনুসারে সোমবার সকাল ১০টা থেকে ১১টার মধ্যে উপস্থিত হতে বলা হয়। কিন্তু যবিপ্রবিতে পৌঁছাতে ১২টা ৮ মিনিট বেজে যাওয়ায় ভর্তি হতে পারেননি নিপুন বিশ্বাস নামে এক শিক্ষার্থী। তার বাড়ি নীলফামারীর সদর উপজেলা লক্ষীচাপ ইউনিয়নে। তার বাবা প্রেমানন্দ বিশ্বাস পেশায় একজন নরসুন্দর।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী নিপুন সাংবাদিকদের বলেন, ‘গতকাল (রোববার) বিকেলে ওয়েবসাইটের নোটিশে তৃতীয় ভর্তি বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। আমার কোনো স্মার্টফোন নেই যার কারণে আমি ওয়েবসাইটে গিয়ে দেখতে পারিনি। কিন্তু আমার মোবাইল নম্বরে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য কোনো কল বা মেসেজ দেওয়ার কথা থাকলেও সেটা দেওয়া হয়নি।’
‘মাঝরাতে আমার একজন বড় ভাই আমাকে ফোন করে ভর্তির বিষয়ে জানালে আমি তৎক্ষণাৎ ধারে ২৩ হাজার টাকা জোগাড় করি। এরপরে নির্দিষ্ট সময়ে আসার জন্য মাইক্রোবাস ঠিক করি ১৫ হাজার টাকা দিয়ে। কিন্তু যশোর থেকে নীলফামারীর দূরত্ব অনেক হওয়ায় এবং রাস্তার অবস্থা খারাপ হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছাতে আমার বেলা ১২টা ৮ মিনিট বেজে যায়। এর মধ্যে ১০টার দিকে আমার বিষয়ে একজন বড় ভাই ডিন স্যারের সঙ্গে এই সমস্যার বিষয়ে কথা বলেন। কিন্তু আমি আসার পরে জানতে পারি মেরিট লিস্টে আমি প্রথমে থাকার পরেও তৃতীয় সিরিয়ালে থাকা শিক্ষার্থীকে ভর্তি নেওয়া হয়েছে। এরপর আমি অনেক অনুনয়-বিনয় করলেও তারা আমাকে ভর্তি নেয়নি।’ তিনি আরও বলেন, আমি কাজ করে হলেও এই টাকা জোগাড় করতে পারব কিন্তু আমি আমার বাবা-মাকে কি জবাব দিব?
‘আমার বাসা দূরে হওয়ার জন্য আজ আমি সময় মত আসতে পারিনি। যদি সময়সীমা বাড়ানো হত তাহলে আমি সঠিক সময়ে উপস্থিত হতে পারতাম। তাছাড়াও আমাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে কোনো মেসেজও দেওয়া হয়নি। অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ওয়েটিং লিস্টে থাকায় আমি মেসেজ পেয়েছি কিন্তু এখানকার প্রশাসন কোনো মেসেজ দেয়নি। আমাকে যদি আগে থেকে মেসেজ দেওয়া হত অথবা নোটিশের পরের দিনই সময় না দিয়ে একটা দিন পরে দেওয়া হত তাহলে আমি সঠিক সময়ে এসে ভর্তি হতে পারতাম।’
এই বিষয়ে স্বাস্থ্য বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ড. মো. তানভীর ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, গতকাল রবিবার দুপুরে একজন শিক্ষার্থী ভর্তি বাতিল করায় আমরা ৩য় ভর্তি বিজ্ঞপ্তিটি প্রকাশ করি। আমাদের উপাচার্য স্যারের নির্দেশনা ছিল ৩১ জানুয়ারির মধ্যে সকল ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার। এরই প্রেক্ষিতে আমরা ভর্তি কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি। আজকে আমাদেরে তিনটি বিভাগসহ মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ভর্তির কাজ ছিল। আমরা সময় বাড়িয়ে বেলা ১২টায় শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হতে আসা একজন শিক্ষার্থী থাকায় আমরা তাকেই ভর্তি করি।