২৩শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১০ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
shadhin kanto

অসামাজিক কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ করায় খুন হন চিত্রনায়ক সোহেল

প্রতিনিধি :
স্বাধীন কণ্ঠ
আপডেট :
এপ্রিল ৬, ২০২২
11
বার খবরটি পড়া হয়েছে
শেয়ার :
অসামাজিক কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ করায় খুন হন চিত্রনায়ক সোহেল
ছবি- সংগৃহীত | ছবি : অসামাজিক কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ করায় খুন হন চিত্রনায়ক সোহেল

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ জনপ্রিয় অভিনেতা সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত পলাতক আসামি আশীষ রায় চৌধুরী ওরফে বোতল চৌধুরীকে বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্যসহ রাজধানীর গুলশানের একটি ফ্ল্যাট থেকে গ্রেফতারের কথা জানিয়েছে র‍্যাব। সংস্থাটি বলছে, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে কারণসহ সোহেল হত্যায় সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে তথ্য দিয়েছেন আশীষ।

গতকাল মঙ্গলবার রাতে র‍্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র‍্যাব-১০ অভিযান চালিয়ে আশীষকে গ্রেফতার করে। র‍্যাব বলছে, গুলশানের ফ্ল্যাট থেকে আশীষকে গ্রেফতারের অভিযানে ২২ বোতল বিদেশি মদ, ১৪ বোতল সোডা ওয়াটার, ১টি আইপ্যাড, ১৬টি বিভিন্ন ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড, ২টি আইফোন ও ২ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়।

র‍্যাব বলছে, গত ২৮ মার্চ আশীষের নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হলে তিনি ৭ এপ্রিল বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে কানাডায় চলে যাওয়ার পরিকল্পনা করছিলেন। এর আগেই তাঁকে গ্রেফতার করা হলো।

র‍্যাবের ভাষ্য, জিজ্ঞাসাবাদে আশীষ জানান, ১৯৯৬ সালে বনানীর আবেদীন টাওয়ারে আশীষ ও আসাদুল ইসলাম ওরফে বান্টি ইসলামের যৌথ মালিকানায় ট্রাম্পস ক্লাব প্রতিষ্ঠিত হয়। এই ক্লাবে সন্ধ্যা থেকে শুরু করে ভোররাত পর্যন্ত নানান অসামাজিক কার্যকলাপ হতো। একপর্যায়ে ক্লাবটি আন্ডারওয়ার্ল্ড ডন ও গ্যাং লিডারদের একটি বিশেষ আখড়ায় পরিণত হয়। সেখানে সবচেয়ে বেশি যাতায়াত ছিল আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের। তিনি মূলত ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ডের চক্রগুলোর সঙ্গে মিটিং করতে এই ক্লাবে নিয়মিত যাতায়াত করতেন। সেই সুবাদে বান্টি ও আশীষের সঙ্গে আজিজ মোহাম্মদের সখ্য তৈরি হয়। এই তিনজন ক্লাব ব্যবহার করে ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ডের কার্যক্রম পরিচালনা করতেন।

আরও পড়ুন>>>নীলফামারীতে অস্ত্রসহ ৩৪ মামলার আসামি আটক

র‍্যাব বলছে, জিজ্ঞাসাবাদে আশীষ বলেন, ক্লাবের পাশে ছিল বনানী জামে মসজিদ। সোহেল চৌধুরী মসজিদ কমিটিকে সঙ্গে নিয়ে ক্লাবের অসামাজিক কার্যক্রম বন্ধে বারবার চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হন। মসজিদ কমিটিকে সঙ্গে নিয়ে সোহেল চৌধুরীর প্রতিবাদের কারণে ক্লাব মালিক বান্টি ও আশীষের ব্যবসায়িক স্বার্থে আঘাত আসে। একই কারণে আজিজ মোহাম্মদের স্বার্থেও আঘাত লাগে। ক্লাবটি বন্ধের চেষ্টা করায় বান্টি, আশীষ, আজিজ, তৎকালীন শীর্ষ সন্ত্রাসী সানজিদুল ইসলাম ওরফে ইমনের চক্ষুশূলে পরিণত হন সোহেল চৌধুরী। ১৯৯৮ সালের ২৪ জুলাই আজিজের সঙ্গে সোহেল চৌধুরীর তর্ক ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। আজিজ ক্ষুব্ধ হয়ে সোহেলের ওপর প্রতিশোধ নিতে বান্টি ও আশীষকে অনুরোধ জানান।

র‍্যাবের ভাষ্য, জিজ্ঞাসাবাদে আশীষ বলেন, জনসমক্ষে আজিজকে অপমান করায় সোহেলের ওপর প্রতিশোধ নিতে তিনি (আশীষ) ও বান্টি একটি পরিকল্পনা করেন। ক্লাবে ইমনের নিয়মিত যাতায়াত ছিল। তখন বান্টি, আশীষ ও আজিজ শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমনকে দিয়ে সোহেলকে হত্যার প্রস্তাব দেন। ইমন এ প্রস্তাবে রাজি হন। পরে ইমন এ হত্যাকাণ্ড সম্পন্ন করেন।

১৯৯৮ সালের ১৭ ডিসেম্বর গভীর রাতে ট্রাম্পস ক্লাবের নিচে সোহেলকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় তাঁর বড় ভাই তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরী বাদী হয়ে গুলশান থানায় মামলা করেন। ১৯৯৯ সালের ৩০ জুলাই ৯ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় ডিবি।

২০০১ সালে ৩০ নভেম্বর এ মামলায় অভিযোগপত্র গঠন করা হয়। পরে মামলাটি বিচারের জন্য দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়। মামলা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানোর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে আসামি আদনান সিদ্দিকী ২০০৩ সালে হাইকোর্টে রিট করেন। হাইকোর্ট ২০০৪ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে রুলসহ আদেশ দেন। ২০১৫ সালের ৫ আগস্ট হাইকোর্ট রুল খারিজ করেন। আগে দেওয়া স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে রায় দেন। গত ২৮ মার্চ পলাতক আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন বিচারিক আদালত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

গরম খবর
menu-circlecross-circle linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram