''আমি নারী হওয়ার আগে একজন মানুষ''
নারী / না "ঋ"
নারী কখনো মা,
কখনো বোন,
কখনো অর্ধাঙ্গিনী,
কখনো প্রিয়তমা।
প্রতিটি নারীই এক অনন্য প্রতিভার অধিকারী।এটা আমার কাছে মনে হয়।
সে চাকরি করুক বা না করুক,ঘরের কাজ পারুক বা নাই পারুক সে সমাজের বুকে নাম কিনুক বা নাই কিনুক আমার কাছে প্রতিটি নারীই magician.
তারা আপনাকে আমাকে তৈরি করে ম্যাজিক সৃষ্টি করে। আমরা হয়তো সমাজ,দেশ কিংবা পৃথিবীর জন্য কিছু করবো তার জন্য অপেক্ষা করে। "Where there is a woman there is magic".
আচ্ছা এই যে আমার লেখার হেডলাইন "নারী / না ঋ" এটি কি কারোর মনে প্রশ্ন জেগেছে ? নারী অর্থ তো আমরা সকলে জানি কিন্তু এই " না / ঋ " এটা আবার কি!
আমি বলছি একটু সহজে,
"এভাবে বসতে নেই, ওভাবে চলতে নেই, এটা বলতে নেই, ওটা করতে নেই,তুমি মেয়ে তুমি এটা পারবে না, তোমার দ্বারা হবে না।" সবক্ষেত্রেই ঋণাত্মক মনোভাব বিরাজ করে আমাদের মধ্যে। তাহলে নারী মানেই কি "ঋণাত্মক "?
না রে ভাই নারী মানে কখনোই ঋণাত্মক নয়।
প্রত্যেকটি সফল মানুষের সফলতার পেছনেই রয়েছে একজন নারীর আত্মত্যাগের কাহিনী। যারা সব সময় থেকে যান পর্দার পেছনেই।পর্দার পেছন থেকে প্রতিনিয়ত যুদ্ধ করে চলেছে এই যোদ্ধারা। এই নারীই কন্যাসন্তান হিসাবে মিষ্টি, বোন হিসাবে যত্নবান, প্রেমিকা হিসাবে সুন্দরী, স্ত্রী হিসাবে প্রিয়তমা, মা হিসাবে পরম মমতাময়ী তবুও কিন্তুু পুরুষতান্ত্রিক সভ্যতার শ্রেষ্ঠ শহীদের নাম হলো "মা", "বোন", "স্ত্রী"এবং "কন্যাসন্তান"।
এটাই হলো প্রকৃত নারী জীবন। প্রতিটি নারীই যার যার অবস্থানে অনন্য।
পৃথিবীর উন্নত দেশগুলোতে শুধু নারী দিবস উপলক্ষে তারা সরকারি ছুটি ঘোষণা করে।
কিন্তু আমাদের সমাজ এখনো তা করে উঠতে পারেনি। দয়া করে এই দিন টির আসল মর্যাদা দিন।
নারী মানেই ভোগের পণ্য না,
যারা ঘরে থাকেন তাদের কাজ টা যেমন কঠিন, যারা বাইরে কাজ করেন তাদেরটাও কঠিন। পুরুষতান্ত্রিক সমাজ এই দুই নারীদেরই সম্মান দিতে শিখুন। যেই নারীরা চাকরিজীবী কি পরিমাণ প্রতিনিয়ত যুদ্ধ করে তারা আপনাদের হাত থেকে বাঁচার জন্য,জানেন? হ্যাঁ সবাই হয়তো না। কিন্তু সমাজ চাইলেই তাদের চলার রাস্তা টা সহজ করতে পারে। নারী কোন কাজ করবে সেটা তাকেই বেছে নিতে দিন মানুষ হিসেবে। Glorify বা judgemental না হয়ে মানুষ হিসেবে ভাবতে শিখুন নারীকে। এই ভাবনা চিন্তা যখন এ সমাজের মানুষের মধ্যে আসবে তখন এ সমাজ নারী দিবস পালনের যোগ্য হবে।আচ্ছা ভেবে দেখেছেন কি, এই নারী না থাকলে আমাদের জন্ম হতো কিভাবে, এই নারীকে অন্য চোখে দেখার আগে কেনো ভাবেন না এই ভাবনাটা। নারী মানে শুধু ভোগ্যবস্তু নয় রে ভাই। নারী মানে শুধু গৃহবন্ধী নির্জীব প্রাণী নয়। আগে নিজের বাড়িতে নিজের মা-বোন,স্ত্রীকে সম্মান দিতে শিখুন,তারপর না হয় বাইরে বেরিয়ে বাকি মেয়েদের দিকে তাঁকাবেন।
কারণ এই নারী না থাকলে এই আমি,আপনি এত সুন্দর পৃথিবীর মুখ দেখতে পারতাম না। পৃথিবীর উন্নত দেশগুলোতে শুধু নারী দিবস উপলক্ষে তারা সরকারি ছুটি ঘোষণা করে কিন্তু আমাদের সমাজ এখনো তা করে উঠতে পারেনি। দয়া করে এই দিন টির আসল মর্যাদা দিন।
নারীর অস্তিত্ব শুধু নারীর নয় , সমগ্র মানবজাতির। অতএব, আসুন নারীকে ভালবাসি, নারীকে শ্রদ্ধা করি, নারীর অধিকার নিশ্চিত করি, নারীকে পুরুষের মতোই এবং পারলে এই বিবেচনায় এক ধাপ উপরের গুরুত্বসম্পন্ন মানুষ হিসেবে স্বীকৃতি দিই।
নারী দিবস একদিনে পালন করা যায় না আর সেটা সম্ভবও নয়।সমুদ্রের জল একটা গ্লাসে রাখা যায়না। নারীর শরীর নয়, যেদিন এ সমাজ নারীর মন বুঝতে শিখবে,নারীকে সন্মান দিতে শিখবে সেদিনই হবে যথার্থ নারী দিবস।
শুধু আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে একদিন নয়, বছরের ৩৬৫ দিনই নারীকে সন্মান করুন। পৃথিবীর সকল মা সকল বোন ভালো থাকুক সুস্থ থাকুক এটাই মহা আল্লাহ কাছে চাওয়া। কারন মা'য়েরা অর্থাৎ নারীরা সুস্থ থাকলে আমরা সুস্থ থাকবো,সুস্থ থাকবে এ পৃথিবী।
"আমি নারী হওয়ার আগে একজন মানুষ।"
এই নারী দিবসেও আমার চাওয়া আমাকে আগে একজন মানুষ হিসেবে সম্মান করুন।"
লেখিকাঃ জেসিনা মুর্শীদ