৩০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
shadhin kanto

চা-শ্রমিকরা এখন দিন মজুরীর কাজে 

প্রতিনিধি :
স্বাধীন কণ্ঠ
আপডেট :
আগস্ট ২৭, ২০২২
15
বার খবরটি পড়া হয়েছে
শেয়ার :
| ছবি : 
শাহজাহান সাজু, মৌলভীবাজার জেলা প্রতিনিধিঃ
চা পাতা চয়নের ভর মৌসুম। দাবীতে অনড় চা শ্রমিকরা। আন্দোলনের টানা ১৮দিন পার হলেও ৩০০ টাকা মজুরি বিষয়টির কোন সমাধান আসছে না। আন্দোলনের কারনে মৌলভীবাজারের ৯২টি চা-বাগানের কাজ বন্ধ থাকায় সংসার চালাতে অনেকটা বিপাকে পড়েছেন শ্রমিকরা। শেষ হয়ে গেছে ঘরের চাল ডাল লবণ মরিচ পিয়াজ, দোকানিরা আর বাকিতে মালামাল দিচ্ছেন না। প্রয়োজনের তাগিদে শ্রমিকরা এখন দিন মজুরি ও ভিন্ন কাজে যেতে দেখা গেছে।
নারী চা শ্রমিকের যে হাত দিয়ে সবুজ কুড়িঁ চয়নের কথা। আজ সে হাতে কাস্তে আর ধানের আটিঁ। প্রয়োজনের তাগিদে নারী চা- শ্রমিকরা এখন ধান কাটতে ক্ষেতের মাঠে নেমেছেন। দিন মজুর হিসেবে কেহ কেহ আবার মাটি ভরাটের কাজে নেমেছেন।
মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার ইটা,উদনা ও করিমপুর চা বাগান ঘুরতে গেলে কথা হয় বাসন্তি,গীতা,নাছিমা,নছিবুন,মজিদুন ও টুসু মনির সাথে । তারা বলেন, আজ সড়ক অবরোধ মিছিল নেই। বাগানে শুধু মিটিং আছে। তাই এই সুযোগে আমরা কাজে নেমেছি।
রোদে পোড়া ঘামে জবুতবু শরীর নিয়ে মাঠে ধান কাটছেন ইটা চা বাগানের টুসু মনি। অনেকটা প্রতিবাধি কণ্ঠে তিনি বলেন, চা-বাগানে কাজ বন্ধের ১৮দিন পার হলো। আমাদের দাবী কেহ শুনে না। রোদে পোড়ে আন্দোলন করছি ৩০০ টাকা মজুরির জন্য। এত দিন কাজ বন্ধ থাকায় সংসারের চাকা আর ঘুরছে না। ঘরে খাওন নেই। আজ বিকেলে বাগানে মিটিং হবে এই সুযোগে পেটের দায়ে ধান কাটছি। ধান মাড়াই করে রোদে শুকিয়ে খাওনের যোগাড় করবো।
একই বাগানের ৬ নং লাইনের বাসিন্দা বাসন্তি ধানের বোঝা মাথায় নিয়ে বলেন, ধান কেটে বাসায় যাচ্ছি। মজুরির জন্য আন্দোলন করছি। পরিবারের আহার যোগাতে কাস্তে নিয়ে ক্ষেতে নামতে হয়েছে।
জেলার করিমপুর চা-বাগানের রমনী ভুঁইয়া দুর পথ হেটে বাগান ছেড়ে বাহিরের গয়াসপুর গ্রামে তপ্তরোদে পোড়া শরীর নিয়ে মাটি ভরাটের কাজে যাচ্ছেন। এ সময়  বলেন, কি আর করবো ৩০০ টাকার আন্দোলন করে যাচ্ছি কেউ শুনেনা আমাদের কথা। বাগান বন্ধ থাকলেও খাবারদাবার তো বন্ধ নেই। ৬ জনের পরিবার চালাতে হিমশিম খাচ্ছি। কষ্ট হলেও সেখানে ৫০০ টাকা দৈনিক মজুরি পাব এমন আশা নিয়ে যাচ্ছি। তার সাথে যাচ্ছে একই বাগানের লোকেছ মির্জা,সুগন্ধি মির্জা,লছমি নাইডু ও বুধনি ভুইয়া।
রাজনগর চা- বাগানের বাতাসি নাইডু বলেন, ৯ সদস্যের পরিবার সকালে চিরা ভাজি খেয়েছি । দুপুরে ভাত রাতের খাবারের কোন ব্যবস্থা নেই। এই ভাবে ১ সপ্তাহ চলছে।
এদিকে, দৈনিক মজুরি ৩০০ টাকার দাবিতে গত ১০ আগস্ট থেকে চারদিন দুই ঘণ্টা করে কর্মবিরতি পালন করেন চা শ্রমিকরা। এরপর তারা ১৩ আগস্ট শনিবার থেকে পূর্ণদিবস কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ করেন। এর মধ্যে কয়েক দফা বৈঠক হলেও বিষয়টির সমাধান হয়নি। এরই মধ্যে তারা আঞ্চলিক ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করেন। মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় ট্রেন আটক করেন। আন্দোলনে তারা অনড় রয়েছেন। মিটিং মিছিল অব্যাহত রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

গরম খবর
menu-circlecross-circle linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram