চুয়াডাঙ্গায় গাইনি ডাক্তার সেজে নারীর লজ্জাস্থানের ছবি সংগ্রহ
জনি আহমেদ, চুয়াডাঙ্গাঃ সমাজে প্রায়ই দেখা যায়, ডাক্তারের ভুয়া ডিগ্রি নিয়ে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন অনেকে। সে খবর জানার পর তাকে জেল-জরিমানাও করা হয় ভ্রাম্যমাণ আদাালতে। কিন্তু এবার তার উল্টোটা ঘটিয়েছে চুয়াডাঙ্গার শহরের ডাক্তার এক সিরিয়াল ব্যবস্থাপক। তিনি ডাক্তার ব্যবস্থাপক হওয়ার পরও কুমানসিকতাকে কাজে লাগিয়ে জেলার পুতুল আক্তারের (ছদ্মনাম) কাছে গাইনি ডাক্তার সেজে হাতিয়ে নিয়েছে নারীর অনেকগুলো গোপন ছবি। যা প্রকাশ করা সম্ভব নয়। সেগুলো দেয়ার পর বিপাকে পড়ে যায় (ছদ্মনামের) পুতুল আক্তার।
আরও পড়ুন>>>নড়াইলের বাঐসোনা কামশিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন অনুষ্ঠিত
জানা যায়, নারী পুতুল আক্তার তার ব্যক্তিগত কিছু সমস্যা থাকায় সমাধানের জন্য অনলাইনে গাইনি ডাক্তারের খোঁজ চেয়ে ফেসবুকে একটি পোস্ট করেন তিনি। পরে সুযোগ বুঝে শহরের এক ডাক্তারের সিরিয়াল ব্যবস্থাপক মারুফুল হক মারুফ নামে ওই ব্যক্তি কামরুন্নাহার নামে ভুয়া একটি ফেসবুক আইডি খোলেন। পরে গাইনি ডাক্তার হিসেবে পুতুলের সাথে পরিচয় হয়। পরে তার শরীরের গোপন কথা শুনতে চায়। পুতুলও কোন কিছু না ভেবে তার শরীরের গোপন সমস্যার কথা ম্যাসেঞ্জারে ম্যাসেজের মাধ্যমে বলতে থাকেন। একপর্যায়ে লম্পট মারুফ তার শরীরের গোপন স্থানের ছবি পাঠাতে বলে। (ছদ্মনামী) পুতুলও বিশ্বাস করে শরীরের অনেক লজ্জা স্থানের ছবি পাঠাই ভুয়া আইডিধারী কামরুন্নাহার নামে মারুফের কাছে।
পরে আরও গোপন ছবি দিতে বলে মারুফ। একপর্যায় পুতুলের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলার প্রস্তাব দেয় মারুফ। পরে তার কথায় খারাপ কাজে রাজি না হলে, ছবিগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেয়ার হুমকি দেয়া হয়। একইসাথে ওই নারীকে ব্ল্যাকমেইল করা হয়। মেয়েটি মান সম্মানের ভয়ে ডাক্তারকে বিভিন্ন অনুনয় বিনয় করতে থাকে এবং মেয়েটি দুর্বিষহ হয়ে পড়ে। উপায়ান্তু না পেয়ে পুলিশকে পুরো বিষয়টি অবহিত করেন।
তার অভিযোগের সূত্র ধরে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। পুলিশ হেডকোয়ার্টারের উইমেন সাইবার ক্রাইম সাপোর্ট সেন্টারের সহযোগিতায় কামরুন্নাহার নামে ওই ভুয়া আইডির মালিক মারুফুল হক মারুফকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত মারুফ চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার ছয়ঘরিয়া গ্রামের আব্দুল হান্নানের ছেলে। তিনি একটি ডাক্তারের সিরিয়াল ব্যবস্থাপক হিসেবে কাজ করতেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সদর থানার সেকেন্ড অফিসার (এসআই) আব্দুর রহমান জানান, তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়েরর পর গত পরশু রাতে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গতকাল শনিবার তাকে আদালতে সোপর্দ করা হলে বিজ্ঞ বিচারক মারুফকে জেলা কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহাব্বুর রহমান জানান, ফেসবুকে নারী ডাক্তার সেজে ওই নারীর ছবি হাতিয়ে নেয় গ্রেফতার হওয়া মারুফ, যা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে সে।