চুয়াডাঙ্গায় বিজিবি’র পিকাআপে ধাক্কা; অবশেষে মৃত্যু
জনি আহমেদ, চুয়াডাঙ্গাঃ সড়ক আইন যদি সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হয় তাহলে দুর্ঘটনার হার খুবই কম হয়। আবার যদি সেটি না মানা হয় তাহলে দুর্ঘটনার হার ক্রমেই বেড়ে যায়। আর সে দুর্ঘটনায় পড়ে কেউ মারাত্মক আহত হন আবার কেউ মৃত্যুর পথে এগিয়ে যায়। তারই অংশ হিসেবে শহিদুল ইসলাম মিল্টন (৫৫) নামে এক মোটরসাইকেল চালক বিজিবির পিকআপের সাথে ধাক্কা মেরে গুরুতর আহতের পর অবশেষে মৃত্যুবরণ করেছেন।
শুক্রবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তাঁর।
আরও পড়ুন>>>রাশিয়ার সাথে যুক্ত হবে ইউক্রেনের চার অঞ্চল,আজ ঘোষণা দেবেন পুতিন
এর আগে দুপুরের দিকে চুয়াডাঙ্গা জেলার জীবননগর উপজেলা শহরের টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে। মৃত শহিদুল ইসলাম জীবননগর পৌর এলাকার কোর্টপাড়ার মৃত ইসমাইল হোসেনের ছেলে।
নিহতের স্বজন ও স্থানীয়রা জানায়, শুক্রবার দুপুরে নিজ মোটরসাইকেল নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন শহিদুল। এ সময় গ্রামের সড়ক থেকে মূল সড়কে উঠতে গেলে মহেশপুর ৫৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নের সদস্যদের টহলরত পিকআপের সাথে ধাক্কা লেগে রাস্তায় ছিটকে পড়ে গুরুতর আহত হন শহিদুল। পরে স্থানীয় লোকজন ও বিজিবির সদস্যরা তাঁকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেয়। সেখানে তাঁর অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় রেফার্ড করা হয়। সেসময় ঢাকায় নেয়ার প্রস্তুতিকালে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
ঝিনাইদহ ৫৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নের পরিচালক লে. কর্ণেল শাহীন আজাদ জানান, একটি আলমসাধুকে ওভারটেক করতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বিজিবির টহল গাড়ির সাথে ধাক্কা দেন শহিদুল ইসলাম। এতে তিনি গুরুতর আহত হলে তাকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে বিজিবি সদস্যরা।
তিনি আরও জানান, ঘটনার সময় বিজিবির টহল গাড়ির গতি স্বাভাবিক ছিল। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেয়ার ব্যবস্থাও করে বিজিবি।
নিহতের ছেলে সাকিবুজ্জামান সাকিব বলেন, আমার বাবা জীবননগর এলজিইডি’র ইলেকট্রিশিয়ান ছিলেন। বর্তমানে তিনি অবসরে ছিলেন। এ দুর্ঘটনায় আমাদের কোন অভিযোগ নেই।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক আল ইমরান জুয়েল জানান, হাসপাতালে নেয়ার পর শহিদুল ইসলামকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ভর্তি করা হয়। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। সেখানে নেয়ার পথে চুয়াডাঙ্গা রেলক্রসিংয়ের কাছে পৌঁছালে আরও শারীরিক অবস্থার অবনতি দেখা দিলে তাকে আবারও সদর হাসপাতালে ফিরিয়ে আনা হয়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
চিকিৎসক জানান, শহিদুল ইসলামের দুই পা ভেঙে গুড়িয়ে গেছে। মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন আছে। শরীরের অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণে তাঁর মৃত্যু হতে পারে।
জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল খালেক দুর্ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। অপরদিকে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহাব্বুর রহমান জানান, রাত ১২টা অবধি মরদেহ হাসপাতালের লাশঘরে আছে। এ ঘটনায় এখনও কেউ কোন অভিযোগ দেয়নি। তাই আইনগত বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন আছে।