১৯শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
shadhin kanto

ঢাকা মহানগর ছাত্রলীগের সহসভাপতির বিরুদ্ধে যশোর আদালতে মামলা

প্রতিনিধি :
স্বাধীন কণ্ঠ
আপডেট :
আগস্ট ১৬, ২০২১
17
বার খবরটি পড়া হয়েছে
শেয়ার :
ছাত্রলীগের সহসভাপতির বিরুদ্ধে যশোর আদালতে মামলা
ঢাকা মহানগর ছাত্রলীগের সহসভাপতি তিতাসের বিরুদ্ধে যশোর আদালতে মামলা | ছবি : ছাত্রলীগের সহসভাপতির বিরুদ্ধে যশোর আদালতে মামলা

জেলা প্রতিনিধি যশোরঃ প্রথমে মোবাইল ফোনে পরিচয়, এরপর গভীর প্রেম। একপর্যায়ে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে আবাসিক হোটেলে নিয়ে ধর্ষণ। সবশেষে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে জাল কাবিনামার মাধ্যমে বিয়ের অভিযোগে তিতাস উদ্দিন (২৮) নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে সোমবার (১৬ আগষ্ট) যশোরে আদালতে মামলা করেছেন এক যুবতী।

অভিযুক্ত তিতাস উদ্দিন যশোর সদর উপজেলার সুলতানপুর মধ্যপাড়ার শাহ আলমের ছেলে। বর্তমানে তিনি ঢাকার ধানমন্ডির ঝিগাতলা হাজি আফসার উদ্দিন লেনের বাসিন্দা। এছাড়া তিনি ঢাকা মহনগর ছাত্রলীগ(উত্তর) শাখার সহসভাপতি পদে দায়িত্বরত।

আরও পড়ুন>>>যশোরে পরিবহনের চাকায় পিষ্ট হয়ে আপন দু’ ভাইয়ের মৃত্যু

মামলায় তিতাস উদ্দিন ছাড়াও চৌগাছার মাইক্রোবাসস্ট্যান্ডের পাশের শহিদুল ইসলামের স্ত্রী মোছা. মিতাকে আসামি করা হয়েছে।

জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাইফুদ্দীন হোসাইন অভিযোগটি আমলে নিয়ে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে আদেশ দিয়েছেন। যদিও এ বিষয়ে তিতাসের দাবি ঘটনার কোনো সত্যতা নেই।

ভুক্তভোগী যুবতীর আসল বাড়ি যশোর শহরের পুরাতন কসবা কাজীপাড়ায়। বর্তমানে তিনি সদর উপজেলার নওদাগ্রামে বসবাস করেন।

ঢাকা মহানগর ছাত্রলীগের সহসভাপতির বিরুদ্ধে যশোর আদালতে মামলা
মামলায় যুবতী উল্লেখ করেছেন, অভিযুক্ত তিতাস উদ্দিনের সাথে তার মোবাইল ফোনের মাধ্যমে পরিচয়। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে প্রেমজ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এরপর তাকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিভিন্ন সময় ধর্ষণ করেন অভিযুক্ত তিতাস উদ্দিন। পরবর্তীতে তাকে বিয়ে করতে অস্বীকার করলে তিনি অভিযুক্ত তিতাস উদ্দিনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন-২০০০ (সংশোধনী-২০০৩) এর ৯(১) তৎসহ ৪০৬/৪২০/৫০৬ পেনাল কোডে ২০১৯ সালের ১ জুলাই কোতয়ালি থানায় মামলা (নং-৫) করেন।

মামলায় তিতাসের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয় পুলিশ। এক পর্যায় কৌশলে মামলা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য অভিযুক্ত তিতাস উদ্দিন ও সহযোগী মোছা. মিতা এবং তাদের আত্মীয়-স্বজন তার সাথে যোগাযোগ করেন। তারা বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে একই বছরের ২ অক্টোবর তাকে যশোর হতে খুলনার দৌলতপুরের অজ্ঞাত একটি স্থানে নিয়ে যান। সেখানে একটি বাড়িতে নীল কাগজে (নিকাহনামা) ভুক্তভোগী যুবতী ও অভিযুক্ত তিতাস উদ্দিনের স্বাক্ষর করিয়ে নেয়া হয়। কালেমাও পাঠ করানো হয়। পরে অভিযুক্ত তিতাস উদ্দিন ভুক্তভোগী যুবতীর বাড়িতে গিয়ে তাকে ওই নিকাহনামার একটি কপি হাতে দিয়ে বলেন, তাদের বিয়ে হয়ে গেছে। এখন থেকে তারা স্বামী-স্ত্রী এই কথা বলে অভিযুক্ত তিতাস উদ্দিন তাকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের মামলাটি প্রত্যাহার করে নিতে বলেন।

অভিযুক্ত তিতাস উদ্দিনের এমন কথায় বিশ্বাস করে পরে তিনি মামলাটি প্রত্যাহার করে নেন। এরপর অভিযুক্ত তিতাস উদ্দিন ভুক্তভোগী যুবতীকে ২০২০ সালের ১৫ নভেম্বর ঢাকায় তার ভাড়া বাড়িতে নিয়ে যান। সেখানে তারা স্বামী-স্ত্রী হিসেবে বসবাস করতেন। কিন্তু কিছুদিন পর অভিযুক্ত তিতাস উদ্দিন তার ভাড়া বাড়িতে না যাওয়ায় ভুক্তভোগী যুবতী তার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হন। চলতি বছরের ১০ জানুয়ারি সকালে ভুক্তভোগী যুবতী যশোর সদর উপজেলার সুলতানপুর মধ্যপাড়ায় অভিযুক্ত তিতাস উদ্দিনের বাড়িতে যান।

সেখানে অভিযুক্ত তিতাস উদ্দিন এবং অপর আসামি মোছা. মিতা ছিলেন। তখন ভুক্তভোগী যুবতী তাকে নিয়ে সংসার করতে বললে জবাবে অভিযুক্ত তিতাস উদ্দিন বলেন যে, তাদের বিয়ে হয়নি। বিয়ের মিথ্যা নাটক সাজিয়ে ভুয়া নীল কাগজে স্বাক্ষর করিয়ে তিনি জাল কাবিননামা সৃষ্টি করেছেন। ফলে ভুক্তভোগী যুবতী এ কথা শুনে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন। পরে তিনি তার কাছে থাকা কাবিননামার কপি বের করে দেখেন, তাতে বিয়ের তারিখ এবং নিকাহনামা রেজিস্ট্রারের নাম নেই।

ঢাকা মহানগর ছাত্রলীগের সহসভাপতির বিরুদ্ধে যশোর আদালতে মামলা
এ সময় অভিযুক্ত তিতাস উদ্দিন স্বীকার করেন যে, ‘আসামি মোছা. মিতার সাথে যোগসাজসে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের মামলা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য তিনি জাল কাবিননামা তৈরি করেছেন।’ ফলে স্থানীয়ভাবে এ বিষয়ে মীমাংসায় ব্যর্থ হয়ে ভুক্তভোগী যুবতী আদালতের আশ্রয় নিয়েছেন।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত তিতাস বলেন, ওই মেয়ের অভিযোগ মিথ্যা। ওই মেয়েকে জড়িয়ে একটি মহল তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। মামলা হয়েছে কিন্তু তার কোনো ভিত্তি নেই। ওই মেয়ের অভিযোগ মিথ্যা। রাজনৈতিক একটি মহল বিষয়টি নিয়ে কাদা ছুড়াছুড়ি করছে।

এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকতা পিবিআই ঢাকা জেলার পুলিশ পরিদর্শক বাদশাহ আলম বলেন, মামলাটির তদন্ত চলছে। দু’পক্ষকে হাজিরের জন্যে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সার্বিক তদন্ত শেষে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

গরম খবর
menu-circlecross-circle linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram