১৯শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
shadhin kanto

জামিন পেয়েও টাকা ছাড়া হাজতখানা থেকে মুক্তি মিলছেনা আসামিদের

প্রতিনিধি :
স্বাধীন কণ্ঠ
আপডেট :
জুলাই ১৪, ২০২১
18
বার খবরটি পড়া হয়েছে
শেয়ার :
জামিন পেয়েও মুক্তি মেলেনা আসামিদের
প্রতীকী ছবিঃ যশোরে বিচারক জামিন দিলেও টাকা ছাড়া হাজতখানা থেকে মুক্তি মেলেনা আসামিদের। | ছবি : জামিন পেয়েও মুক্তি মেলেনা আসামিদের

স্টাফ রিপোর্টারঃ যশোর আদালতে বিচারক জামিন দিলেও টাকা ছাড়া হাজতখানা থেকে মুক্তি মিলছেনা আসামিদের। মাথা প্রতি দেড়শ’ থেকে তিনশ’ টাকা পর্যন্ত নিয়ে থাকেন হাজতখানায় দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কর্মচারিরা।

গতকাল বুধবার (১৪ জুলাই) শার্শা থানার ৬ আসামিকে বিচারক জামিন দিলেও হাজতখানায় ৭শ’ টাকা দিয়েই মুক্তি নিলেন তারা।

আরও পড়ুন>>>অবহেলায় একুশে পদকপ্রাপ্ত কবিয়াল বিজয় সরকারের স্মৃতি

জামিন পেয়েও মুক্তি মেলেনা আসামিদের
করোনাকালিন সময়ে আদালত বন্ধ থাকায় দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্যরা ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে মাত্রাতিরিক্ত টাকা আদায় করেছে। আর ওই টাকা আদায়ে কোর্ট ইন্সপেক্টর নিজেই জড়িত। ফলে স্বাভাবিকভাবে আদালতের কার্যক্রম চালু হলে আইনজীবী সমিতি এই ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য চেষ্টা করবে বলে জানিয়েছেন সংগঠনটির সভাপতি অ্যাডভোকেট কাজী ফরিদুল ইসলাম।

আইনজীবী সহকারি পারভেজ আলম জানিয়েছেন, ১৩ জুলাই রাত সাড়ে ১০টার দিকে গোড়পাড়া পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই সামনুর মোল্যা সোহানের নেতৃত্বে গোড়পাড়া গ্রামের কলোনীর জয়নাল আবেদিনের বাড়িতে অভিযান চালানো হয়। এসময় জয়নাল আবেদিন, একই এলাকার মোসলেম শেখ, কামাল হোসেন, ইউনুচ আলী, আবু হানিফ ও আব্দুল হাকিমকে জুয়া খেলা অবস্থায় আটক করা হয়। রাতেই এই ঘটনায় ওই দারোগা বাদী হয়ে শার্শা থানায় জুয়া আইনে মামলা করেন।

বুধবার ১৪ জুলাই আইনজীবীর মাধ্যমে আটককৃতরা জামিনপ্রাপ্ত হন। কিন্তু আদালতের হাজতখানায় দায়িত্বপ্রাপ্ত এ টিএসআই সন্তোষ কুমার, জসিম উদ্দিনসহ কয়েকজনে আসামিদের মাথা প্রতি ৬জনের কাছে দেড়শ’ টাকা করে ৯শ’ টাকা ঘুষ দাবি করেন। আর তাদের দাবিকৃত টাকা দেয়া না হলে মুক্তি না দিয়ে কারাগারে পাঠানো হবে বলে জানানো হয়। ফলে তারা বাধ্য হয়ে ৬জনে ৭শ’ টাকা দিয়েছেন। কিন্তু এতেও সন্তুষ্ট না হয়ে তাদের মুক্তি দেয়া হবেনা বলে জানান দায়িত্বপ্রাপ্ত ওই কর্মকর্তারা।

আরও পড়ুন>>>সড়ক দুর্ঘটনায় সরকারি কলেজ শিক্ষক সহ নিহত ২

এরই মধ্যে বিষয়টি আসামিদের স্বজনরা চিৎকার শুরু করলে সাংবাদিকরা সেখানে এগিয়ে যায়। পরে সাংবাদিকদের দেখে ওই ৭শ’ টাকা নিয়েই তাদের মুক্তি দেয়া হয়।

পরে বিষয়টি কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক মাহবুবুর রহমানকে একজন সাংবাদিক অবহিত করেন। কিন্তু কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক বলেছেন বিষয়টি আইনজীবী সমিতিকে অবহিত করতে।

জামিন পেয়েও মুক্তি মেলেনা আসামিদের
এরপর জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এই বিষয়ে বলেন, করোনাকালিন সময়ে আদালতের স্বাভাবিক কার্যক্রম বন্ধ থাকায় দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্যরা ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে জোর পূর্বক মাত্রাতিরিক্ত টাকা আদায় করেছে। আর ওই টাকা আদায়ে কোর্ট ইন্সপেক্টর নিজেই জড়িত। ফলে আদালতের স্বাভাবিকভাবে কার্যক্রম চালু হলে আইনজীবী সমিতি এই ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংগঠনটি চেষ্টা করবে বলে জানিয়েছেন সভাপতি অ্যাডভোকেট কাজী ফরিদুল ইসলাম।

এদিকে এই ব্যাপারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) জাহাংগীর আলম বলেছেন, বিষয়টি খোঁজখবর নিয়ে সত্যতা পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

উল্লেখ্য আদালতের হাজতখানায় আসা আসামিদের খাবার, সিগারেট, কাপড় দেয়া, দেখা করা, জামিনপ্রাপ্তদের মুক্তি দিতে, ওকালতনামায় স্বাক্ষর করানোর ক্ষেত্রে নেয়া হয় টাকা। কিছুৃদিন আগে এক আসামিকে খাবার দেয়ার ক্ষেত্রে দুইশ’ টাকা দাবি করে হাজতে থাকা দায়িত্বপ্রাপ্তরা। কিন্তু একশ’ টাকা দেয়ায় তাদের সাথে এক আইনজীবী সহকারির বাকবিতন্ডা হয়। বিষয়টি উপর মহল পর্যন্ত গড়ায়। ফলে সেই সময় থেকে খাবার দিতে টাকা নেয়া হয়না। কিন্তু অন্যান্য ক্ষেত্রে টাকা নেয়া হয়ে থাকে। আর ওই টাকা প্রতিনিয়ত কোর্ট ইন্সপেক্টরকে ভাগ দেয়া লাগে। ফলে হাজতে দায়িত্বপ্রাপ্তরা প্রকাশ্যেই হাজতী আসামিদের কাছ থেকে টাকা আদায় করছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

গরম খবর
menu-circlecross-circle linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram