ঝালকাঠির ২৫০শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল ভবন নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করতে ধীরগতি
এ রহমান, ঝালকাঠি প্রতিনিধিঃ নির্ধারিত সময়ের দ্বিগুণের বেশি পার হলেও শেষ হয়নি ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের আড়াই শ শয্যাবিশিষ্ট ৬ তলা ভবনের নির্মাণকাজ। পঞ্চম তলা পর্যন্ত নির্মাণকাজ শেষ হলেও ভেতরের দরজা-জানালা, ইলেকট্রিক, পানির লাইন স্থাপনসহ আনুষঙ্গিক কাজের অধিকাংশই বাকি।
নির্দিষ্ট সময়ে হাসপাতালের নির্মাণকাজ শেষ না হওয়ায় ক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষ। আর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দ্রুত নির্মাণকাজ শেষ করার তাগিদ দিয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে। একই সঙ্গে সেবা কার্যক্রম চালু করার জন্য প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ দিতে কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক।
আরও পড়ুন>>>কপালে টিপ পরা নারীদের পতিতা ও কুকুরের সঙ্গে তুলনা করে ফেসবুকে বিএনপি নেতার আপত্তিকর পোষ্ট
ধীরগতির মধ্যেই ভবনের নবম তলা পর্যন্ত নকশা ও বরাদ্দের অনুমোদন দিয়েছে গণপূর্ত অধিদপ্তর। গণপূর্ত প্রকৌশল বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ৩৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৮ মাসে ছয়তলা এ ভবনের নির্মাণকাজ শেষ করার কথা ছিল। কার্যাদেশ অনুযায়ী ২০১৯ সালের জুলাই মাসে ভবনের কাজ শেষ করে কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করার কথা, কিন্তু ৪০মাসেও শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
কোহিনুর এন্টারপ্রাইজ ও জিএম কনস্ট্রাকশন যৌথভাবে হাসপাতালের ৬ তলা ভবন নির্মাণের দায়িত্ব পায়।
নির্মাণকাজ শুরু হয় করোনা মহামারির সময়। এরই মধ্যে মূল ভবনটি ১১ তলা করার নির্দেশনা দিয়েছে গণপূর্ত অধিদপ্তর। সপ্তম, অষ্টম ও নবম তলার কাজের জন্য সম্প্রতি আরও ৮কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। নকশা অনুযায়ী, হাসপাতালের নিচতলায় বহির্বিভাগে রোগী দেখার জন্য চিকিৎসকদের চেম্বার ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার ল্যাব থাকবে। ৭ম ও ৮ম তলায় থাকবে বিভিন্ন ওয়ার্ড ও কেবিন। ৯ম তলায় থাকবে আইসোলেশন ওয়ার্ড, কিডনি ডায়ালাইসিস কক্ষ, অপারেশন থিয়েটারসহ প্রশাসনিক অফিস।
ধীরগতিতে নির্মাণকাজ চলায় আধুনিক চিকিৎসাসেবা পেতে জেলাবাসীকে দীর্ঘ অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে। এতে ক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষ।
ঝালকাঠির হাসপাতাল নির্মাণে ধীরগতি
চিকিৎসাসেবা নিতে আসা জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, নির্মাণকাজ দ্রুত শেষ হলে আড়াই শ শয্যার সুযোগসুবিধা পাওয়া যেত। সেবার মানও বৃদ্ধি পেত। এখন তো ডাক্তার কম, রোগীর চাপ বেশি, তাই সেবা পেতে ভোগান্তিতে পড়তে হয়।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ২০০৩ সালে ৫০শয্যা থেকে ১০০ শয্যার প্রশাসনিক ভবন নির্মাণের অনুমোদন দেওয়া হয়। তবে ৫০ শয্যার জনবল দিয়েই চলেছে চিকিৎসা কার্যক্রম। চলতি বছরের জানুয়ারিতে ১০০ শয্যার জনবল নিয়োগের অনুমোদন দেয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। হাসপাতালে ২৩ জন চিকিৎসকের মধ্যে ১৪ জন চিকিৎসকের পদই শূন্য। বহির্বিভাগে প্রতিদিন ৪ শতাধিক রোগী চিকিৎসা নিতে আসেন।
২০১৮ সালের আগস্টে সদর হাসপাতাল চত্বরে ২৫০ শয্যার ভবনের নির্মাণকাজের উদ্বোধন করা হয়। ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে, নতুন ভবনের পঞ্চম তলার অবকাঠামোর কাজ চলছে। ভেতরে দরজা-জানালা লাগানো হয়নি। ইলেকট্রিক, পানির লাইন স্থাপনসহ আনুষঙ্গিক কাজের অধিকাংশই বাকি।
ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক এইচ এম জহিররুল ইসলাম জানান, গণপূর্ত কর্তৃপক্ষ ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে দ্রুত কাজ শেষ করার কথা বলা হয়েছে। আর প্রয়োজনীয় জনবলও নেই হাসপাতালে। তাই নির্মাণকাজ শেষে জনবল নিয়োগ না দেওয়া হলে সেবা থেকে বঞ্চিত হবেন সাধারণ মানুষ। ২৫০ শয্যার জন্য দ্রুত জনবল নিয়োগ দেওয়ার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান রইল।
ঝালকাঠির হাসপাতাল নির্মাণে ধীরগতি
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কোহিনুর এন্টারপ্রাইজের প্রকৌশলী হুমায়ুন কবির বলেন, ‘নির্মাণসামগ্রীর দাম ঊর্ধ্বমুখী। করোনাকালে শ্রমিকসংকটের কারণে কাজের গতি ছিল কম। শিগগিরই নবম তলাসহ ভবনের কাজ শেষ হবে।
ঝালকাঠি গণপূর্ত বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী সমরজিৎ সিং বলেন, আগামী ৫ মাসের মধ্যে কাজ শেষ হয়ে যাবে। দ্রুত শেষ করার জন্য বলা হয়েছে।