১৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৩রা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
shadhin kanto

সাতক্ষীরায় টেকসই বেড়িবাঁধ ও সুপেয় পানির দাবীতে মানববন্ধন

প্রতিনিধি :
স্বাধীন কণ্ঠ
আপডেট :
জুন ২৭, ২০২২
28
বার খবরটি পড়া হয়েছে
শেয়ার :
টেকসই বেড়িবাঁধ ও সুপেয় পানির দাবীতে
| ছবি : টেকসই বেড়িবাঁধ ও সুপেয় পানির দাবীতে

পরিতোষ কুমার বৈদ্য,(সাতক্ষীরা) শ্যামনগর প্রতিনিধিঃ সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলা জলবায়ু অধিপরামর্শ ফোরাম ও উপজেলা যুব ফোরামের আয়োজনে দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলে টেকসই বেড়িবাঁধ ও সুপেয় পানির নিশ্চয়তার দাবীতে মানববন্ধন করেছে আশাশুনির সর্ব স্তরের জনগণ।

সোমবার (২৭ জুন) সকাল ১১টায় আশাশুনি উপজেলা রোড চত্ত্বরে লিডার্স এর সহযোগিতায় এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

জলবায়ু অধিপরামর্শ ফোরামের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোঃ আব্দুল হান্নান এর সভাপতিত্বে উক্ত মানববন্ধনের স্বপক্ষে বক্তব্য তুলে ধরেন আশাশুনি প্রেসক্লাবের সভাপতি মোঃ আহসান হাবীব, ফোরামের সদস্য ও উপজেলা লবণ পানি আন্দোলন কমিটির সভাপতি বিমল কৃষ্ণ মন্ডল, সমাজ সেবক কল্যানী রানী সরকার, ফোরামের কোষাধ্যক্ষ মিনতী রানী সরকার প্রমূখ।

আরও পড়ুন>>>খুলনার পাইকগাছায় নবাগত সহকারী কমিশনার (ভূমি) এর যোগদান

বক্তারা বলেন, ক্রমবর্ধমান দুর্যোগের ফলে দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলের মানুষের খাদ্য সংকট, স্বাস্থ্য ঝুঁকি, জীবিকার উৎস হ্রাস, অপুষ্টি, সুপেয় পানির অভাবে রোগ ব্যাধি বৃদ্ধিসহ প্রতি বছর প্রচুর আর্থিক ক্ষয়ক্ষতির সমুক্ষীন হয়। লিডার্সের গত ২০২১ সালের গবেষনা প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০০৪ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ১৬ বছরে প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে সাতক্ষীরা ও খুলনার উপকুলীয় এলাকায় প্রতিবছর পরিবার প্রতি ১,০২,৪৮৯ টাকার সমান ক্ষতি হয়। দুর্যোগে ১৬ বছরে সর্বোচ্চ ক্ষতি হয়েছে ৫০,৪০,০০০ টাকা এবং সর্বনিম্ম ক্ষতি হয়েছে ৪৫,২০০ টাকা।

বক্তারা আরও বলেন, নদীভাঙন জনিত বন্যা, চিংড়ি চাষ, ভুগর্ভস্থ পানির লবনাক্ততার কারনে গত কয়েক বছরে সুন্দরবন এলাকায় সুপেয় পানির সংকট বেড়েছে। সুন্দরবন উপকুলে ৭৩% পরিবার সুপেয় পানি থেকে বঞ্চিত বা খারাপ পানি খেতে বাধ্য হয় । সুপেয় পানির জন্য একজন নারীকে ৩/৪ কি.মি. পথ পায়ে হেঁটে ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করতে হয় প্রতিদিন।

বিগত বছরগুলোতে উচ্চ জোয়ারের চাপ দেখা না গেলেও ২০২১ সালের মার্চ মাসে উচ্চ জোয়ারের প্রভাবে দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় বেড়িবাঁধ ভেঙে লোনা পানিতে মানুষের জীবন-জীবিকা, সম্পদ, খাদ্য, পানি, বাসস্থানসহ অন্যান্য সংকট সৃষ্টি করেছে। ২০২১ সালে ২৬ মে সাইক্লোন ইয়াস এর প্রভাবে উপকূলীয় এলাকায় উচ্চ জোয়ারের কারনে সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর, আশাশুনি, কালিগঞ্জ উপজেলা, খুলনা জেলার কয়রা ও পাইকগাছা উপজেলা এবং বাগেরহাট জেলার শরণখোলা, মোড়লগঞ্জ ও মংলা উপজেলা বেড়িবাঁধ উপচিয়ে পানি ভিতরে প্রবেশ করে ভয়াবহ ক্ষতি সাধন করেছে। বর্ষা মৌসুম নদীর খর ¯্রােত ও উচ্চ জোয়ারের কারনে বেড়িবাঁধ ভেঙে আবারও প্লাবিত হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। ফলে মানুষের জীবন-জীবিকা, সম্পদ, খাদ্য, পানি, বাসস্থানসহ অন্যান্য সংকট আরও বৃদ্ধি পাবে।

এছাড়া ৬০ এর দশকে নির্মিত উপকূলীয় রক্ষা বেড়িবাঁধ পরিকল্পনা মাফিক সংষ্কারের অভাবে প্রতিবছর একাধিক বার ভেঙ্গে প্লাবিত করে আরো বেশী ঝুঁকির মধ্যে পড়তে হচ্ছে উপকূলীয় এলাকাবাসীকে। সম্প্রতি সরকার ২টি মেগা প্রকল্প হাতে নিয়েছে যা এ এলাকার মানুষের দাবী ছিল। কিন্তু উক্ত প্রকল্পের কাজ এখনও শুরু হয়নি। তাছাড়া এই ২টি প্রকল্প দিয়ে সকল ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ নির্মানও সম্ভব নয়। এ পরিস্থিতিতে দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় এলাকাকে রক্ষা করার জন্য এ এলাকাকে বিশেষ এলাকা বা জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ন এলাকা ঘোষণা করে দীর্ঘমেয়াদী মহাপরিকল্পনার উদ্যোগ নেওয়া দরকার।
টেকসই বেড়িবাঁধ ও সুপেয় পানির দাবীতে
মানববন্ধন ও সমাবেশে বক্তারা দাবী তুলে ধরে বলেন, সাতক্ষীরা, খুলনা ও বাগেরহাট জেলাকে জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ বা দুর্যোগ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা ঘোষণা করতে হবে, জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগকে মাথায় রেখে স্থায়ী ও মজবুত বেড়িবাঁধ পুন:নির্মান করতে হবে, উপকূলীয় সকল মানুষের খাবার পানির টেকসই ও স্থায়ী সমাধান করতে হবে, উপকুলীয় এলাকায় একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের আদলে একটি বাড়ি একটি শেল্টার কার্যক্রম শুরু করতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

গরম খবর
menu-circlecross-circle linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram