ট্রেনে আগুনের কারণ খুঁজতে ৩ তদন্ত কমিটি গঠন
শাহজাহান সাজু, মৌলভীবাজার জেলা প্রতিনিধিঃ সিলেট-ঢাকা রুটের মৌলভীবাজারের শমসেরনগর রেলওয়ে স্টেশনের অদূরে আন্তঃনগর পারাবত এক্সপ্রেস ট্রেনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় তিনটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এর মধ্যে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসকের একটি এবং দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে রেলওয়ে বিভাগ।
জেলা প্রশাসকের কমিটিতে সাত সদস্য এবং রেলওয়ের দু'টির প্রতিটিতে চারজন করে সদস্য নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। সাতদিনের মধ্যে কমিটিকে অগ্নিকাণ্ডের কারণ উদঘাটন এবং ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরুপণের প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন>>>নড়াইলে প্রস্তাবে রাজী না হওয়ায় সাবেক স্ত্রীকে কুপিয়ে জখম
রোববার(১২ জুন) এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন মৌলভীবাজার জেলার প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান ও রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলীয় জোনের মহা ব্যবস্থাপক জাহাঙ্গীর হোসেন।
শনিবার ১১ জুন দুপুর ১টার দিকে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার শমসেরনগর স্টেশনের অদূরে উসমানগড় এলাকায় ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা সিলেটগামী যাত্রীবাহী পারাবত এক্সপ্রেসে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে তিনটি বগি পুড়ে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শী ও সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছেন, পাওয়ারকার বগি থেকে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত। ঘটনার পর সারা দেশের সঙ্গে সিলেটের ট্রেন যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। আগুন নিয়ন্ত্রণে এলে প্রায় ৪ ঘণ্টা পর আবারও ট্রেন চলাচল শুরু হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী জিল্লুর রহমান মাহিন বলেন, ট্রেনটি শমসেরনগর রেলস্টেশন থেকে বিমানবন্দর এলাকায় যাওয়ার পর হঠাৎ আগুন লাগে। এ সময় ট্রেন থামালে যাত্রীরা হুড়োহুড়ি করে নামতে শুরু করেন। একপর্যায়ে আগুন ভয়ংকর রূপ ধারণ করে। ট্রেন না থামালে অনেক প্রাণের ক্ষতি হতো। তীব্রতা অনেক বেশি থাকায় স্থানীয়রা আগুনের কাছে ঘেঁষতে পারেননি। পরে ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
শমসেরনগর রেলওয়ের স্টেশন মাস্টার জামাল উদ্দিন বলেন, ট্রেনের ১০ নম্বর বগিটি ছিল পাওয়ার সার্ভিসের। পাওয়ার সার্ভিস বগির সামনের ও পেছনের বগিসহ তিনটি বগি পুড়ে যায়। প্রথমে সামনের আটটি বগি কুলাউড়া রেলস্টেশনে নিয়ে যাওয়া হয়। আর পেছনের চারটি বগি শমসেরনগর রেলস্টেশনে নিয়ে রাখা হয়েছে। পুড়ে যাওয়া তিনটি বগি উদ্ধার করেছে রেলওয়ের উদ্ধারকারী দল।
ট্রেনে আগুনের কারণ খুঁজতে
মৌলভীবাজার ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপসহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ হারুন পাশা বলেন, আগুন লাগার পর ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট যৌথভাবে কাজ করে। প্রায় দেড় ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন তারা। আগুন লাগার বিষয়ে এই কর্মকর্তা বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে ট্রেনের পাওয়ার সার্ভিসের বগি থেকে আগুনের সূত্রপাত। তবে তদন্ত করে সূত্রপাত ও সঠিক কারণ জানা যাবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার সিফাত উদ্দিন বলেন, ধারণা করা হচ্ছে পাওয়ার সার্ভিস বগি থেকে আগুনের সূত্রপাত। তবে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান বলেন, মৌলভীবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবদুল হককে প্রধান করে ৭ সদস্যের এই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। গঠিত কমিটিকে ৭ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে হবে।
ট্রেনে আগুনের কারণ খুঁজতে
এদিকে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলীয় জোনের মহা ব্যবস্থাপক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘ঘটনা তদন্তে দুটি কমিটি গঠন করেছে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল। রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান বৈদ্যুতিক প্রকৌশলী অজয় কুমার পোদ্দারকে আহ্বায়ক করে একটি কমিটি গঠন করা হয়।
আরেকটি কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে ঢাকা বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা খায়রুল কবিরকে। দুটি কমিটিকেই সাতদিনের মধ্যে অগ্নিকাণ্ডের কারণ উদঘাটন এবং ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরুপণের প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।