৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৫শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
shadhin kanto

তিনটি স্বর্ণপদক জয়ী নড়াইলের সাদিয়া

প্রতিনিধি :
স্বাধীন কণ্ঠ
আপডেট :
জুন ২৪, ২০২১
16
বার খবরটি পড়া হয়েছে
শেয়ার :
| ছবি : 

সদর প্রতিনিধি নড়াইলঃ একক, দ্বৈত ও দলগত প্রতিযোগিতায় তিনটি স্বর্ণপদক জয়ী হয়েছেন নড়াইল শহরে সাদিয়া রহমান। মা ও বাবার দেয়া নাম সাদিয়া রহমান হলেও দেশের টেবিল টেনিস (টিটি) অঙ্গনে যাকে সবাই মৌ নামে চেনে।

আরও পড়ুন>>>গ্রুপ পর্বের চ্যাম্পিয়ন হতে মুখোমুখি লড়বে ব্রার্জিল ও কলম্বিয়া

এবারের বাংলাদেশ গেমসেই প্রথম নয়, আগেও এরকম হরেক রকম অর্জন রয়েছে তাঁর। ২০১৭ সালে জাতীয় টিটি প্রতিযোগিতায় নারীদের দ্বৈত ও দলগত পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন।

২০১৬ সালে ভারতে ও ২০১৯ সালে নেপালে সাউথ এশিয়ান গেমসে সাদিয়া ব্রোঞ্জপদক পেয়েছেন। এর আগে যুব গেমসে একক, দ্বৈত ও দলগত পর্যায়ে জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন। স্কুল পর্যায়ে ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় চারবার জাতীয় চ্যাম্পিয়ন। পুরস্কার নিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে।

আরও পড়ুন>>>করোনাভাইরাস মহামারীতে নতুন করে কোটিপতি হয়েছেন ৫২ লাখ মানুষ

মা শাহনাজ পারভীনের সঙ্গে সাদিয়া সাদিয়া রহমানের এই পথচলা সহজ ছিল না। নড়াইল শহরে তাঁদের ভাড়া বাসা। সাদিয়া ও তাঁর মায়ের সংসার। সাদিয়া এখন পড়েন নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজে একাদশ শ্রেণিতে।

স্কুলের গণ্ডি পেরোনোর আগেই খেলতে শুরু করেছেন বড়দের টুর্নামেন্ট। বঙ্গবন্ধু নবম বাংলাদেশ গেমসে অংশ নিয়েছেন আবাহনী ও বাংলাদেশ আনসার বাহিনীর খেলোয়াড় হিসেবে।

শুধু খেলায় নয়, পড়াশোনাতেও সেরা সাদিয়া। প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় জেলার মধ্যে তাঁর অবস্থান ছিল দ্বিতীয়।

সাদিয়া বলেন, ‘তখন পড়ার সময় পেয়েছিলাম মাত্র তিন মাস। কারণ, এর আগে টিটি জুনিয়র ন্যাশনাল প্রতিযোগিতায় সময় দিতে হয়েছে আমাকে।’ জেএসসিতে জিপিএ-৫ পেলেন। এসএসসি পরীক্ষা শুরুর সময়ও তা-ই। পরীক্ষা তিন দিন আগে খেলা শেষ করে সে নড়াইল এলেন। এসএসসিতেও জিপিএ-৫ পেলেন।

এভাবে খেলা আর পড়াশোনায় সমানতালে সাফল্য তাঁর। সাদিয়ার মা শাহনাজ পারভীন পাশ থেকে বলেন, ‘নাচ, গান, আবৃত্তিতেও সে ভালো। ’নবম বাংলাদেশ গেমসে সাদিয়া হারিয়েছেন সোনাম সুলতানাকে। সোনাম চারবারের জাতীয় চ্যাম্পিয়ন। সম্পর্কে সে তার খালাতো বোন। সোনামকে হারিয়ে যখন বিজয়ের পথে, সাদিয়ার নাকি তখন আবেগে কণ্ঠ ধরে এসেছিল। বিজয়ের চূড়ান্ত ঘোষণায় জড়িয়ে ধরেন বোন সোনামকে। ‘বিজয়টা খুব দরকার ছিল’, ছোট করে বলেন সাদিয়া।

প্রতিযোগিতায় কে না বিজয়ী হতে চায়। কিন্তু সাদিয়ার বিজয়ী হওয়াটা দরকার ছিল তাদের অস্তিত্বের জন্য, সংসারের জন্য। সে কাহিনি শোনালেন সাদিয়ার মা শাহনাজ পারভীন, ‘মৌয়ের খেলা থেকে যে আয় হয়, তা দিয়ে চলে আমাদের সংসার। এ আয় খুব বেশি নয়। মেয়েকে একা ছাড়তেও পারি না। তাই ওর সঙ্গে বিভিন্ন জায়গায় আমার যাতায়াত ও থাকতেও খরচ হয়। ’সাদিয়া রহমানের বাবা মতিয়ার রহমান ছিলেন নড়াইল সদর হাসপাতালের স্টোরকিপার। ২০০৩ সালে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে কিছুদিন পর চাকরিটাও হারান। এরপর থেকেই জীবনযুদ্ধ চলছে শাহনাজের। স্বামীকে সুস্থ করতে ও সংসার চালাতে গিয়ে সব জমিজমা বেচতে হয়েছে। ২০১৮ সালে মতিয়ার রহমান মারা যান।

সাদিয়ার দাদাবাড়ি বাগেরহাট হলেও বাবার কর্মস্থল ও নানাবাড়ির কারণে নড়াইলে কেটেছে তাঁদের। সাদিয়ারা দুই বোন। বড় বোন সুমাইয়া রহমানের বিয়ে হয়েছে। থাকেন ঢাকায়। সুমাইয়া রহমানও টেবিল টেনিসে চ্যাম্পিয়ন ছিলেন। জীবনগল্প বলতে বলতে সাদিয়া রহমান শোনালেন লক্ষ্যের কথা। তিনি চান আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে স্বর্ণপদক জয় করতে। সাদিয়া ভাষায়, ‘টেবিল টেনিসে বাংলাদেশকে তুলে ধরতে চাই আমি।’

আরও একটা স্বপ্ন আছে সাদিয়া রহমানের। সেটা সাদিয়ার মা শাহনাজ পারভীন বললেন, ‘ও পড়াশোনায় ভালো। চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্নটাও দেখে সে।

গত এপ্রিলে ঢাকায় অনুষ্ঠিত বঙ্গবন্ধু নবম বাংলাদেশ গেমসে দারুণ সাফল্য পেয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

গরম খবর
menu-circlecross-circle linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram