দিনাজপুরে ইউএনও'র হস্তক্ষেপে বাল্যবিবাহ বন্ধ, কাজীর জেল ও বরের জরিমানা
নয়ন হাসান, বিরামপুর (দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ পরিবার থেকে বিয়ের সকল আয়োজন সম্পূর্ণ, বিয়ে পড়াবে এমন সময় বিরামপুর উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে এক বাল্য বিবাহ বন্ধ হয়েছে। একই সাথে পাত্রকে ২ হাজার টাকা জরিমানা ও কাজীকে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে এবং মেয়ে প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত বাল্যবিবাহ দিবেন না মর্মে মেয়ের বাবার থেকে মুচলেকা নেয়া হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পরিমল কুমার সরকার। দিনাজপুরে ইউএনও'র হস্তক্ষেপে বাল্যবিবাহ
দণ্ডপ্রাপ্ত কাজী রেহান রেজা (৪৭) চেংমারী গ্রামের হুমাউন রেজার ছেলে। তিনি খাঁনপুর ইউনিয়নের নিকাহ রেজিস্ট্রার হিসেবে কাজ করেন ও গুণতে হওয়া ২ হাজার টাকা পাত্র রুবেল ইসলাম (২২) পার্শ্ববর্তী নবাবগঞ্জ উপজেলার কুশদহ ইউনিয়নের সেকেন্দার আলীর ছেলে।
বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে বিরামপুর উপজেলার খাঁনপুর ইউনিয়নের ন্যাটাশন এলাকায় ঘটনাটি ঘটে।
আরও পড়ুন>>>মাদারীপুরে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় বৃদ্ধ নিহত
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়,গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে খাঁনপুর ইউনিয়নের ন্যাটাশন এলাকায় একজন ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে অধ্যয়নরত ছাত্রীর বিয়ে দেওয়ার প্রায় সব আয়োজন শেষ, বিয়ের জন্য কাজী খসড়া লেখাও শেষ পর্যায়ে। এমন খবরের সত্যতা যাচাই করার জন্য থানা পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থলে হাজির হন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পরিমল কুমার সরকার। এসময় ইউএনওর উপস্থিতি টের পেয়ে কাজী দৌড়ে পালাতে চেষ্টা কালে তাকে আটক করে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান ও বরকে ২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। প্রশাসনকে বোকা বানানোর জন্য তখন বরের পাশে কনে সেজে মেয়ের ভাবি বসে পড়েন। ইউএনওর নজরে আসে বিষয়টি। দিনাজপুরে ইউএনও'র হস্তক্ষেপে বাল্যবিবাহ
জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পরিমল কুমার সরকার বলেন, ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ুয়া এক ছাত্রীর বাল্যবিয়ের হচ্ছে এমন খবরের সত্যতা পেয়েছি। বাল্যবিয়ের বর রুবেল হোসেনকে দুই হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে আর নিকাহ রেজিস্ট্রার রেহান রেজাকে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডাদেশ প্রদান করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, বাল্যবিবাহে শিশু, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের উপর ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে। উপজেলায় যেন কোনো কিশোর-কিশোরী বাল্যবিবাহের শিকার না হয়, সে জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে কঠোর নজরদারি রাখা হচ্ছে এবং জনস্বার্থে এধরনের পদক্ষেপ অব্যাহত থাকবে।