২০শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৬ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
shadhin kanto

‘ধ্রুবতারা’ উড়োজাহাজের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

প্রতিনিধি :
স্বাধীন কণ্ঠ
আপডেট :
ডিসেম্বর ২৭, ২০২০
20
বার খবরটি পড়া হয়েছে
শেয়ার :
‘ধ্রুবতারা’ উড়োজাহাজের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
| ছবি : ‘ধ্রুবতারা’ উড়োজাহাজের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

ডেস্ক রিপোর্ট: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ রোববার বেলা ১১টায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিমানের ড্যাশ ৮-৪০০ ‘ধ্রুবতারা’ নতুন উড়োজাহাজের উদ্বোধন করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যোগাযোগব্যবস্থার সার্বিক উন্নয়নের মাধ্যমে আমরা আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর সঙ্গে একটি সার্বিক যোগাযোগব্যবস্থা গড়ে তুলতে চাই।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা সেই সব বিমান ক্রয় করছি, যেগুলো সব থেকে আধুনিক ও উন্নত মানের। আর আজকে যে বিমানটি উদ্বোধন করতে যাচ্ছি, তার মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ যোগাযোগের পাশাপাশি দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গেও আমরা যোগাযোগ বৃদ্ধিতে সক্ষম হব।’

বাংলাদেশের চমৎকার ভৌগোলিক অবস্থানের প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যদি আমাদের আশপাশের দেশগুলোর সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য ও যোগাযোগ বাড়াতে পারি, তাহলে সব দিক থেকেই আমাদের উন্নতি হতে পারে। সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা ইতিমধ্যে অনেকগুলো পদক্ষেপ নিয়েছি। যার অংশ হিসেবে আজ এই নতুন উড়োজাহাজ ড্যাশ ৮-৪০০-এর উদ্বোধন করছি।’

‘ধ্রুবতারা’ আমাদের দিকনির্দেশনা দেয় উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমরা জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদ্‌যাপন করতে যাচ্ছি। আর ২০২১ সালে আমাদের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদ্‌যাপিত হবে। কাজেই এর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই ধ্রুবতারা নামটি পছন্দ করেছি। নামগুলো পছন্দ করায় আমাকে সহযোগিতা করেছেন আমার ছোট বোন শেখ রেহানা।’

করোনাভাইরাস এসে সবকিছু ওলটপালট করে দিয়েছে, সব কর্মকাণ্ডকে স্থবির করে দিয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সবার সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রাখতে আমরা বাধ্য হচ্ছি। এটা শুধু বাংলাদেশের নয়, সমগ্র বিশ্বব্যাপীই এই সমস্যাটা হচ্ছে।’

নতুন উড়োজাহাজ আনায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ বিমানের পদক্ষেপকে ‘অত্যন্ত সাহসী’ আখ্যায়িত করে সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার পর যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনকালে একটি স্বাধীন দেশের উপযোগী করে সব প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার যে উদ্যোগ জাতির পিতা নিয়েছিলেন, তা যদি পরবর্তী সরকারগুলো অনুসরণ করত, তাহলেও দেশ অনেক দূর এগোতে পারত। কিন্তু দুর্ভাগ্য তা হয়নি। অবশ্য ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ যখন আবার ক্ষমতায় আসে, তার পরেই এ দেশে উন্নয়নের যাত্রা আবার শুরু হয়।

দেশে নতুন নতুন বিমানবন্দর প্রতিষ্ঠা, পুরোনো বিমানবন্দরগুলোর আধুনিকায়নসহ হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নতুন টার্মিনাল, কার্গো টার্মিনাল ও বোর্ডিং ব্রিজ করা থেকে শুরু করে সরকারের চার মেয়াদে বিমানকে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে চলাচলের উপযোগী করে তোলায় সরকারের পদক্ষেপগুলো উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, এখন বিমানবন্দরগুলোকে আরও উন্নত করা হচ্ছে। হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তৃতীয় টার্মিনালও নির্মাণ করা হচ্ছে। কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক মানের করা হচ্ছে। সৈয়দপুর ও সিলেট ওসমানী বিমানবন্দরকে আরও উন্নত করা হচ্ছে।

দ্বিতীয়বার ২০০৯ সালে দায়িত্ব নিয়েই আওয়ামী লীগ সরকার দেশের উন্নয়নের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে যোগাযোগ বৃদ্ধির উদ্যোগ গ্রহণ করে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যখন কোনো দেশে আমাদের প্লেন নামে, তখন আমাদের প্লেনটি দেশের একটি বার্তা নিয়েই সেখানে যায়। সমগ্র দেশের পরিচয় ঘটে এর মাধ্যমে। আর জাতির পিতা বিমানের লোগো করা থেকে শুরু করে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস সৃষ্টি করে সে কাজের গোড়াপত্তন করে যান।’

বর্তমান সরকারের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় পুরোনো জবুথবু অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে বিমানবহরে এখন বিমানের সংখ্যা ১৯টিতে উন্নীত হয়েছে বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় কমিটির সদস্য, সচিব, বাংলাদেশ বিমানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, ঊর্ধ্বতন সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তা উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জ থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সংযুক্ত ছিলেন।

গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন।

প্রধানমন্ত্রী একই অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন স্থানে নির্মিত ২০টি ফায়ার সার্ভিস স্টেশন, বিভিন্ন জেলা সদরে নির্মিত ৬টি আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, কেরানীগঞ্জে মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগার এবং একটি এলপিজি স্টেশন উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তৃতা করেন। সেখানে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় কমিটির সদস্য, মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা বিভাগের সচিব, বিভিন্ন বাহিনীর প্রধানরা ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বিমানের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের বহরে সদ্য যুক্ত হওয়া সর্বাধুনিক প্রযুক্তির সম্পূর্ণ নতুন প্রথম ড্যাশ ৮-৪০০ এয়ারক্রাফট হচ্ছে এই ধ্রুবতারা। বাংলাদেশ ও কানাডা সরকারের মধ্যে জি-টু-জি ভিত্তিতে ক্রয়কৃত তিনটি ড্যাশ ৮-৪০০ উড়োজাহাজের মধ্যে প্রথমটি এটি।

কানাডার প্রখ্যাত উড়োজাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ডি হ্যাভিল্যান্ড নির্মিত ৭৪ আসনবিশিষ্ট ড্যাশ ৮-৪০০ উড়োজাহাজটি পরিবেশবান্ধব ও অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধাসমৃদ্ধ।

নতুন উড়োজাহাজটি সংযোজিত হওয়ায় বিমানবহরে উড়োজাহাজের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৯। তার মধ্যে ৪টি বোয়িং ৭৭৭-৩০০ইআর, ৪টি বোয়িং ৭৮৭-৮, ২টি বোয়িং ৭৮৭-৯, ৬টি বোয়িং ৭৩৭ ও ৩টি ড্যাশ ৮-৪০০ উড়োজাহাজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

গরম খবর
menu-circlecross-circle linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram