পিরোজপুরে করোনায় পেয়ারার পাইকারী ক্রেতা সংকটে চাষিরা
জিয়াদুল হক, পিরােজপুর প্রতিনিধিঃ পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলার কুড়িআনার পেয়ারা সারাদেশের সুখ্যাতি প্রিয় আলাদা স্বাধ ঘ্রানের কারণে এর পরিচিতি পুরো দেশব্যাপী।
প্রতি বছরের মতাে এবারও উপজেলায় পেয়ারার ফলন ভালাে হলেও চাষিদের মুখে হাসি মিলিয়ে গেছে বিষাদে। করােনার কারণে ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় ব্যাপক লােকসানের মুখে পড়েছেন পেয়ারা চাষিরা।
আরও পড়ুন>>>যশোরের শার্শায় ষষ্ট শ্রেণীর ছাত্রীকে মুখ চেপে জঙ্গলে নিয়ে গনধর্ষন আটক-১
কারণ বাণিজ্যিকভাবে পেয়ারার চাষ করে লাভ তাে দূরের কথা, উৎপাদন খরচই ওঠাতে পারছেন না উপজেলার চাষিরা। গত দুই বছর করােনার প্রভাবে ক্রেতা পাইকারও তেমন আসছেন না।
উপজেলার আটঘর, কুড়িয়ানা, আদমকাঠি, ধলহার, জিন্দাকাঠি, ব্রাহ্মণকাঠিসহ ২৫ গ্রামে৬৫৭ হেক্টর জমিতে পেয়ারার চাষ হয়।
পিরোজপুরে করোনায় পেয়ারার ক্রেতা সংকট চাষিরা
উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে দুই সহস্রাধিক চাষি এ পেয়ারা চাষাবাদ করে আসছেন। আর পেয়ারার চাষাবাদ ও বিপণন ব্যবস্থার সঙ্গে এসব এলাকার প্রায় ৬-৭ হাজার শ্রমজীবী মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরােক্ষভাবে জড়িত থেকে জীবিকা নির্বাহ করছেন।
প্রতি বছরের মতাে এবারও আগেই পেয়ারা বাগান কিনে রাখায় লােকসানে পড়েছেন পাইকাররাও। আর যেসব চাষি বাগান বিক্রি করেননি তারা বলেছেন, এবার পেয়ারা বাগানেই পড়ে থাকবে।
আরও পড়ুন>>>বরিশালের বানারীপাড়ায় আয়রণ ব্রিজের বরাদ্দে সাঁকো নির্মাণ !
কুড়িআনা, ব্রাহ্মণকাঠি, আদমকাঠিসহ বিভিন্নগ্রামের চাষি ও পাইকারদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। আদমকাঠি গ্রামের পেয়ারাচাষি প্রিন্স মণ্ডল জানান, এ বছর পেয়ারার ফলন ভালাে হলেও উৎপাদন ব্যয় বেশি। কিন্তু দাম অনেক কম।
পেয়ারা-আমড়াচাষি সমিতির সহসভাপতি দীনেশ মণ্ডল জানান, করােনার কারণে দেশব্যাপী লকডাউনে দূরের ব্যবসায়ীরা আসতে না পারায় পেয়ারার বাজার মন্দা। ফলে বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির শঙ্কা করছেন চাষি ও ব্যবসায়ীরা।
উপজেলার কুড়িয়ানা, আটঘর, আদমকাঠি, জিন্দাকাঠিসহ বিভিন্ন স্থানে প্রতিদিনই পেয়ারার হাট বসে। বর্তমানে পেয়ারা পাইকারিভাবে মণপ্রতি ২০০-২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে পেয়ারার এ মৌসুমে ঢাকা, কুমিল্লা, সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের পাইকাররা এখান থেকে সরাসরি পেয়ারা কিনে নিয়ে যেত।
অপরদিকে স্থানীয় পর্যায়ের ব্যবসায়ীরাও প্রতি দিন শত শত মণ পেয়ারা এখান থেকে লঞ্চ, ট্রলার ও ট্রাকযােগে দেশের বিভিন্ন স্থানে নিতেন। পেয়ারার মৌসুমে বিগত দিনে কৃষক, বাগান মালিক ও ব্যবসায়ীদের পদচারণায় মুখর থাকত ভাসমান পেয়ারার হাট। কিন্তু গত বছর থেকে এ চিত্র পালটে গেছে।করােনার কারণে পাইকারদের আনাগােনা একেবারে কমে গেছে।
আরও পড়ুন>>>রংপুরে অক্সিজেন সিলিন্ডার পাচারের দুই প্রতারক আটক
পিরোজপুরে করোনায় পেয়ারার ক্রেতা সংকট চাষিরা
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা চপল কৃষ্ণ নাথ জানান, লকডাউনে কৃষিপণ্য পরিবহন ও বিপণনে সরকারি কোনাে নিষেধাজ্ঞা নেই। কৃষিপণ্য পরিবহনে কোনাে সমস্যার সম্মুখীন হলে কৃষি বিভাগ থেকে তাদের পরিচয়পত্র দেওয়া হয়।
এছাড়াও ক্ষতিগ্রস্ত পেয়ারা চাষিরা সহজ শর্তে কৃষিঋণ নিতে পারবেন সেক্ষেত্রে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে তাদের সর্বাত্মক সহযােগিতা করা হবে।