২৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
shadhin kanto

প্রধানমন্ত্রীকে গুলি করে হত্যার হুমকি দেন সৌদি প্রবাসী কবির ও দীন

প্রতিনিধি :
স্বাধীন কন্ঠ
আপডেট :
ফেব্রুয়ারি ৪, ২০২৪
27
বার খবরটি পড়া হয়েছে
শেয়ার :
| ছবি : 

স্টাফ রিপোর্টার : ২০২৩ সালের এপ্রিলে বিদেশ সফরে ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেসময় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের অফিসিয়াল ইমেইলে ইংরেজি ও বাংলায় একটি হুমকিবার্তা সম্বলিত ইমেইল (realmec55ksa@gmail.com) আসে।

ইমেলে হুমকির বার্তায় বলা হয়, ২৭ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভোর ৪টায় গুলি করা হবে। তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি ডিএমপি ও পুলিশ সদর দপ্তরের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে জানানো হয়। বিদেশ সফরকালেই প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা জোরদার করা হয়।

ওই ঘটনায় দীর্ঘ তদন্ত ও সৌদি আরবে থাকা রাষ্ট্রদূত ও সাবেক আইজিপি জাবেদ পাটোয়ারীর মাধ্যমে সৌদি সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অবগত করা হয়। এরপর দুজনকে শনাক্ত করে চলতি বছরের ২৯ জানুয়ারি বাংলাদেশে পাঠানো হলে তাদের গ্রেফতার করে কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট।

গ্রেফতাররা হলেন- ঘটনার পরিকল্পনাকারী সৌদি যুবদলের সভাপতি কবির হোসেন ও সহযোগী হুমকিদাতা দীন ইসলাম। সিটিটিসি বলছে, রাষ্ট্রীয় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পাঁয়তারার অংশ হিসেবে খোদ প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছিল।

রবিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সিটিটিসি প্রধান ও ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান।

তিনি বলেন, গত বছরের ১৭ এপ্রিল বিকেল ৪টা ৫৯ মিনিটে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া পাবলিক রিলেশন সেন্টারের ইমেইলে (dmpmediacell@gmail.com) realmec55ksa@gmail.com ইমেইল থেকে একটি হুমকি বার্তা সম্বলিত মেইল আসে। ইমেইলের সাবজেক্ট লাইনে ‘Prime Minister Sheikh Hasina will be shot at 4 am on April 27. Bangladesh police do not have the power to prevent this attack. ২৭ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভোর ৪টায় গুলি করা হবে। বাংলাদেশ পুলিশের ক্ষমতা নেই এই হামলা ঠেকানোর, মহারণের সাক্ষী হবে ২৭ এপ্রিল’ এবং ইমেইলের বডিতে একই হুমকি বার্তা লেখা ছিল।

সিটিটিসি প্রধান বলেন, বিষয়টি অবহিত হওয়ার পর তাৎক্ষণিকভাবে হুমকি বার্তার ভয়াবহতা এবং জাতীয় নিরাপত্তা ও শান্তিশৃঙ্খলার স্বার্থে বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করা হয়। প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকি বার্তামূলক ইমেইল প্রেরণকারীকে দ্রুত শনাক্ত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য সিটিটিসি সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন ডিভিশনকে নির্দেশনা প্রদান করা হয়।

যেভাবে শনাক্ত করে সিটিটিসি

সিটিটিসি সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগের একটি চৌকস টিম গোপনীয় অনুসন্ধান ও প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণ শেষে ইমেইল বার্তা প্রেরণকারীকে শনাক্ত করে এবং হুমকিদাতার নাম দীন ইসলাম ওরফে বাদল বলে নিশ্চিত হয়। হুমকিদাতার ইন্টারনেট অ্যাকটিভিটি (আইপি) পর্যালোচনা করে তার অবস্থান সৌদি আরবে বলে তদন্তে নিশ্চিত হয় তদন্ত টিম।

একই ঘটনায় ২০ এপ্রিল ডিএমপি মিডিয়া পাবলিক রিলেশন সেন্টারের ইমেইলে প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকিদাতাসহ অজ্ঞাতনামা সহযোগীদের বিরুদ্ধে রমনা মডেল থানায় মামলা করে সিটিটিসি। মামলা নম্বর ১৫।

সৌদি আরব থেকে যেভাবে আসামিদের ফিরিয়ে আনার চেষ্টা

সিটিটিসি আরও বলেন, একই তারিখে মামলার আসামি এবং সহযোগীদের সৌদি আরব থেকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর জন্য পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের এনসিবি-ইন্টারপোলের মাধ্যমে এবং একই সঙ্গে ডিপ্লোমেটিক চ্যানেল ব্যবহার করে কার্যক্রম গ্রহণ করে সিটিটিসি।

যেভাবে গ্রেফতার হন হুমকিদাতারা

দীর্ঘ প্রক্রিয়ার পর এবং সৌদি কর্তৃপক্ষ কর্তৃক তদন্ত শেষে ২৯ জানুয়ারি সৌদি আরব সরকার প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকিদাতা দীন ইসলামকে তার সহযোগী কবির হোসেনসহ আটক করে বাংলাদেশে পাঠালে তাদের হযরত শাহজালাল বিমানবন্দর এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের সময় দীন ইসলামের কাছ থেকে হুমকি প্রদানকারী ইমেইল অ্যাড্রেসটির রিকভারী মোবাইল নম্বরটিসহ একটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।

১০ বছর সৌদিতে ছিলেন কবির

ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার আসাদুজ্জামান বলেন, গত ১০ বছর ধরে সৌদিতে থাকা কবির হোসেন সৌদি যুবদলের একাংশের সভাপতি। সৌদি যুবদলের নেতা দীন ইসলাম। তাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ রয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীকে হুমকির উদ্দেশ্য সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলাসহ ২৭ বার হত্যার চেষ্টা চালানো হয়েছে। যে কারণে এই হুমকিকেও গুরুত্ব বিবেচনায় নিয়ে তাদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তাদের বক্তব্য সন্দেহজনক। শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা বা হামলা করা হলে রাষ্ট্রীয় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে, এটাই তাদের ছিল উদ্দেশ্য। তাদের সঙ্গে আরও কারও যোগসাজশ ছিল কি-না তা জানতে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

সৌদি সরকার ও সৌদিতে বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূতকে ধন্যবাদ জানিয়ে আসাদুজ্জামান বলেন, দীর্ঘ সময় তদন্ত ও পারস্পরিক যোগাযোগের ভিত্তিতে প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকিদাতাদের বাংলাদেশে ফেরত আনা হয়েছে। সৌদি আরবে থাকা রাষ্ট্রদূত ও সাবেক আইজিপি জাবেদ পাটোয়ারীর মাধ্যমে সৌদি সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অবগত করেই তাদের আনা হয়েছে।

গরম খবর
menu-circlecross-circle linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram