২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
shadhin kanto

চুয়াডাঙ্গায় টাকার বদলে বিয়ের দেনমোহর হলো ১০১টি বই

প্রতিনিধি :
স্বাধীন কণ্ঠ
আপডেট :
নভেম্বর ৮, ২০২২
17
বার খবরটি পড়া হয়েছে
শেয়ার :
বিয়ের দেনমোহর হলো ১০১টি বই
| ছবি : বিয়ের দেনমোহর হলো ১০১টি বই

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধিঃ আমাদের সমাজে বিয়ে হয় না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া নিতান্তই মুশকিল। হাতে গোনা কয়েকটা দেখা যায়, কেউ প্রেমে ছ্যাঁকা খেয়ে কেউ আবার শারীরিক জটিলতা ছাড়াও বিভিন্ন কারণে বিয়ে করে না। তারা খুবই কম তাই তাদেরকে এ বিষয়ে ধরাও যায়না। তবে স্বাভাবিকভাবে যেসব ছেলে-মেয়ে ইসলামিক ধর্মীয় মোতাবেক বিয়ে করে তাদের প্রত্যেকেরই টাকার দেন দেনমোহর উল্লেখ করেই করতে হয় বিয়ে। সেটা কম হোক আর বেশি হোক। কিন্তু এদিকে রুহুল মিথুন ও সুমাইয়া পারভীন অন্তরা দম্পতি বিয়ে করেছেন টাকার দেনমোহর ছাড়াই। তবে শুধু শুধু বিয়ে করেননি তারা। বিভিন্ন বিষয়ের ওপর ১০১টি বই দিয়ে দেনমোহর হিসেবে বিয়ে করেছেন তারা। তবে ব্যতিক্রমী এ উদ্যোগ যেমন সারা ফেলেছে তেমনী চুয়াডাঙ্গা জেলাজুড়ে প্রশংসায় ভাসছে ওই দম্পতি।

রুহুল মিথুন ও সুমাইয়া পারভীন অন্তরা দম্পত্তি চুয়াডাঙ্গা জেলার সদর উপজেলার বাসিন্দা। এছাড়াও বর রুহুল মিথুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী। তিনি বর্তমানে একটি সরকারি ব্যাংকে কর্মরত এবং কনে সুমাইয়া পারভীন অন্তরা কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী।

গত ২৯ অক্টোবর পারিবারিকভাবে বিয়ে সম্পন্ন হয় তাদের। অনুসন্ধানের একপর্যায়ে গতকাল বেরিয়ে আসে তাদের এই ব্যতিক্রমধর্মী বিয়ে সন্ধান।

বইয়ের প্রতি প্রচুর ভালোবাসা রয়েছে অন্তরার। সেই ভালোবাসা থেকেই তার ইচ্ছা অনুযায়ী টাকা, স্বর্ণালংকার, গয়নার বদলে বেছে নিয়েছেন ১০১টি বই। ব্যতিক্রমী সেই ইচ্ছেকে প্রাধান্য দিয়েই তিনি বিয়ের পিঁড়িতে বসেছেন।

এ বিষয়ে সুমাইয়া পারভীন অন্তরা বলেন, “সবাই ভাবে বিয়েতে অর্থ ও স্বর্ণালংকারই কেবল দেনমোহর হতে পারে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় জানতে পারি অন্য কিছুতেও দেনমোহর হতে পারে। তখনই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম বিয়েতে ১০১টি বই দেনমোহর হিসেবে চাইবো। আমার ইচ্ছের কথা বাবা-মাকে জানালে তারা সম্মতি দেন এবং বইয়ের নাম সংগ্রহ করার পরামর্শ দেন কনে। এরপর পছন্দের ১০১টি বইয়ের নাম সংগ্রহ শুরু করে বর। পরে পারিবারিকভাবে আমাদের বিয়ে ঠিক হয়। আমার প্রত্যাশা অনুযায়ী স্বামী ১০১টি বই নগদ হস্তান্তর করেছেন আমার কাছে। এতে আমি আনন্দিত।”

তিনি আরও বলেন, “যে ভালোবাসে সে এমনিতেই সঙ্গে থাকবে। এছাড়া আমার স্বামীর কাঁধে দেনমোহরের এই ঋণের বোঝা থাকুক এটাও আমি চাইনি। সমাজে উচ্চহারে দেনমোহর নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু সেই দেনমোহরের অধিকাংশই অপরিশোধিত থাকে। এজন্য ছাত্রজীবনেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম।

” বর রুহুল মিথুন বলেন, “বিয়ের আগে দুই পরিবারের আলোচনায় আমার শ্বশুর তার মেয়ের ইচ্ছের কথা জানান এবং ১০১টি বইয়ের লিস্ট দেন। বইগুলো খুঁজে পেতে কিছুটা কষ্ট হয়েছে তবে উপভোগ করেছি। আমারও ছোটবেলা থেকে বইয়ের প্রতি ভালোবাসা ছিল, যে কারণে বইপ্রেমী কাউকে জীবনসঙ্গী হিসেবে চাইতাম। আল্লাহর ইচ্ছায় সময়ের পরিক্রমায় সেটি পূরণ হয়েছে।”

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

গরম খবর
menu-circlecross-circle linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram