৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৫শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
shadhin kanto

ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের ময়লার ভাগাড় এখন ফুলের বাগান

প্রতিনিধি :
স্বাধীন কণ্ঠ
আপডেট :
জুন ২৯, ২০২২
14
বার খবরটি পড়া হয়েছে
শেয়ার :
ময়লার ভাগাড় এখন ফুলের বাগান
ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের এ ফাকা জায়গাটিতে একসময়ে ছিলো ময়লার ভাগাড়। দুর্গন্ধে সেবাপ্রত্যাশীরা নাকে রুমাল চেপে রাখতো। সেখানে বর্তমানে বিভিন্ন জাতের ফুল ও ভেষজ গাছ রোপনের ফলে সুবাতাস ও নির্মল বায়ু ছড়াচ্ছে। | ছবি : ময়লার ভাগাড় এখন ফুলের বাগান

এ রহমান, ঝালকাঠিঃ ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের ময়লার ভাগাড় এখন ফুলের বাগান, মূল ভবনের প্রশাসনিক শাখা ও রোগীদের ওয়ার্ডের মধ্যবর্তি সংযোগের দুপাশে রয়েছে বেশ কিছু ফাকা জায়গা। সেখানে ময়লা ফেলতো সবাই। দুর্গন্ধে রোগী ও অন্যান্যরা নাকে রুমাল চেপে রাখতো।

বর্তমানে সেখানে রয়েছে দেশী-বিদেশী বিভিন্ন ফুলের ও ভেষজগুণ সম্পন্ন গাছ। দুর্গন্ধ এড়াতে এখন নাকে রুমাল চাপতে হয় না। বরং সেখানে রোপিত ফুলের গাছ থেকে আসছে সুবাস এবং ভেষজগুণ সম্পন্ন গাছ থেকে ত্যাগ করা অক্সিজেন রোগীদের প্রাকৃতিক উপাদানে সমৃদ্ধ করছে।

এছাড়াও হাসপাতালে সিসি ক্যামেরার আওতায় নেয়ায় বিভিন্ন ল্যাবের দালালদের তৎপরতা লাঘব হয়েছে। জরুরী বিভাগে ২৪ ঘণ্টা চিকিৎসকদের রোগী দেখা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রয়েছে প্রতিটি ওয়ার্ড ও বাথরুমগুলো। হাসপাতালের ব্যবস্থাপনায় আমূল পরিবর্তন হওয়ায় সেবাপ্রত্যাশীদের প্রশংসায় ভাসছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

আরও পড়ুন>>>ঝালকাঠির নলছিটিতে গাঁজা-ইয়াবা প্রাইভেটকারসহ আটক-২

সরেজমিনে দেখাগেছে, বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স বা দালালের উৎপাত আগের তুলনায় অনেকটাই কমেছে। মূল ফটকে নেই হকার ও দোকানপাঠ। টিকিট নেয়া, টাকা জমা দেয়া, ঔষধ বিতরণ, পরীক্ষা নিরীক্ষা, জরুরি বিভাগ বা বহির্বিভাগে রোগী দেখানো সব জায়গাতেই শৃঙ্খলা দৃশ্যমান। মূল গেইট দিয়ে হাসপাতালের ভিতরে প্রবেশ করলেই চোখে পরবে সুদৃশ্য একটি ফ্রন্টডেক্স। সেখান থেকেই রোগীর স্বজনরা নিতে পারবে সেবা সংক্রান্ত যেকোনো তথ্য।

প্রথম ও দ্বিতীয় তলার প্রতিটি ওয়ার্ড, বারান্দা, বাথরুম পরিষ্কার রাখার জন্য কাজ করছে ৭/৮ জন পরিচ্ছন্নতা কর্মী। রোগীদের সেবায় সার্বক্ষণিক নিয়োজিত আছেন চিকিৎসক, নার্স, আয়া, ওয়ার্ডবয়। বহির্বিভাগে ল্যাব এবং চিকিৎসক কক্ষের সামনে দেয়া হয়েছে একাধিক বেঞ্চ ও সিলিং ফ্যান। যা হাসপাতালে আগন্তুক রোগী ও স্বজনদের স্বস্তি মিলেছে।

হাসপাতালের দুটি বিল্ডিয়ের মাঝের অংশে একটি ফাকা জায়গায় বছরখানেক আগেও থাকতো আবর্জনার স্তুপ। যা পরিস্কার করে লাগানো হয়েছে নানা প্রজাতির ফল ও ফুলের গাছ। সন্ধ্যার পরে বারান্দা দিয়ে হাটলে নাকে আসে হাসনাহেনা ফুলের সুবাস। রাতে প্রতিটি কানায় কানায় জ্বলে নিয়নের আলো। মনেই হবেনা এটি একটি সরকারি হাসপাতাল। আশির দশকে নির্মিত আধুনিক হাসপাতালই এখন ১০০ শয্যা জেলা সদর হাসপাতাল। পাশেই নির্মিত হচ্ছে ২৫০ শয্যার নতুন ভবন। সেটি চালু হলে সেবার মান আরো বাড়বে বলেও সাধারণ রোগীরা মনে করেন।

ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. এইচএম জহিরুল ইসলাম বলেন, বেসরকারী ক্লিনিক ও ডায়াড়নস্টিক সেন্টারে রোগীর কমতি নেই। কিন্তু দরিদ্র মানুষের আক্ষেপ, তাঁরা ওই সব জায়গায় যেতে পারেন না। সেই আক্ষেপ দূর করার একটা চেষ্টা এই হাসপাতালে পরিবেশ তৈরির পেছনে কাজ করেছে। যাতে যেকোনো মানুষ এখানে এসে বলবে, বেসরকারীতে না গিয়ে ভুল করিনি।

তিনি আরো জানান, ব্যবস্থাপনায় ভিন্নতা রয়েছে। ব্যবস্থাপনার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা হাসপাতাল পরিচালনার ব্যাপারে আন্তরিক। সিসি ক্যামেরা স্থাপনের মাধ্যমে সব ব্যাপারে সার্বক্ষণিক নজরদারির ব্যবস্থা আছে। চিকিৎসক, নার্স, ওয়ার্ড বয়, আয়াসহ হাসপাতালের সকল বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিজ নিজ দায়িত্ব সঠিকভাবে পালনের জন্য তদারকি রয়েছে।

ডা: এইচ এম জহিরুল ইসলাম বলেন, জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা কার্যক্রমে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে এনেছি তা রক্ষা করে বহাল রাখাই আমার প্রধান লক্ষ্য। সেই মোতাবেক কাজ করে যাচ্ছি। চিকিৎসক-কর্মকর্তা-কর্মচারী যাতে সময়মতো হাসপাতালে আসেন এবং সময়মতো কর্মস্থলে উপস্থিত থাকেন তা নিশ্চিত করা হয়েছে। হাসপাতালে কোনো অনিয়ম পরিলক্ষিত হলে বা অনিয়মের কোন অভিযোগ পেলে তার ব্যবস্থা নেয়া হয়।
ময়লার ভাগাড় এখন ফুলের বাগান
হাসপাতালের শীর্ষ কর্মকর্তা এ চিকিৎসক আরো বলেন, মা বোন সকলের আছে। মহিলারা চিকিৎসার জন্য গোপন বিষয় নিয়ে ডাক্তারের কাছে আসে, সেই প্রেসক্রিপশনের ছবি তুলে বিভিন্ন কোম্পানির লোকের হাতে যায়, তাই ছবি তোলা বন্ধ করেছি। কোম্পানির প্রতিনিধিদের একটি নির্দিষ্ট সময় দিয়েছি সেই সময়ের মধ্যে তারা ডাক্তারদের সাথে সাক্ষাত করবেন।
ময়লার ভাগাড় এখন ফুলের বাগান
তিনি আরো বলেন, হাসপাতালের চিকিৎসা সেবাকে আরো উন্নত করার জন্য আমি চেষ্টা করছি। এক্ষেত্রে আন্তরিকতার কোন কমতি নেই। সবার সহযোগিতাও কামনা করেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

গরম খবর
menu-circlecross-circle linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram