২৮শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৫ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
shadhin kanto

যশোরে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল হতে প্রতিমন্ত্রীর নির্দেশে প্যানা-ব্যানার উচ্ছেদ

প্রতিনিধি :
স্বাধীন কণ্ঠ
আপডেট :
আগস্ট ১৪, ২০২১
15
বার খবরটি পড়া হয়েছে
শেয়ার :
| ছবি : 

যশোর প্রতিনিধিঃ যশোর শহরের বকুলতলায় অবস্থিত বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল মোটামুটি প্যানা-মুক্ত হয়েছে। গত রাত থেকে আজ সকাল পর্যন্ত ম্যুরাল থেকে প্রায় সব ব্যক্তিগত প্রচারণা সামগ্রী সরিয়ে ফেলা হয়।

এর আগে শুক্রবার সন্ধ্যায় স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও পৌরসভার মেয়রকে নিয়ে বকুলতলায় যান। বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল পরিদর্শনকালে প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য এ নির্দেশনা দেন জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খানকে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন পৌর মেয়র হায়দার গণি খান পলাশ, স্থানীয় সরকার বিভাগ যশোরের উপপরিচালক হুসাইন শওকত, ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বেলাল হুসাইন প্রমুখ।

মন্ত্রীর উপস্থিতিতে তাৎক্ষণিকভাবে কিছু প্যানা ও ফেস্টুন নামিয়ে ফেলা হয়। তিনি ম্যুরাল-জুড়ে নেতাদের ব্যক্তিগত প্রচারণা সামগ্রী দেখে অসন্তোষ প্রকাশ করেন।

প্রতিমন্ত্রী ১৫ আগস্টের আগেই সব ধরনের প্রচারণা সামগ্রী সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দেন সংশ্লিষ্টদের। শনিবার সকালে দেখা যায়, ম্যুরাল চত্বরের মূল গেটের দুই পাশে যশোর-৬ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদারের দুটি প্যানা রয়েছে। আর দক্ষিণ পাশের বহির্দেয়ালে বজলুর রহমান মানিক নামে এক ব্যক্তির একটি প্যানাও দেখা যায়।

এই বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে যশোর পৌরসভার মেয়র হায়দার গনি খান পলাশ বলেন, ‘প্রতিমন্ত্রীর নির্দেশনা পাওয়ার পর পরই সব ধরনের প্রচারণা সামগ্রী অপসারণ শুরু করা হয়। আজ সকাল নাগাদ প্রায় সব পরিষ্কার হয়ে গেছে।’

তিনি বলেন, বজলুর রহমান তার প্যানা সরিয়ে নেবেন। শাহীন চাকলাদারের প্যানা বিষয়ে দলীয় রাজনীতিতে বিভক্তির ইঙ্গিত করেন মেয়র বলেন, ১৫ আগস্টের পর নতুন করে উদ্যোগ নেবেন তিনি। শোকের মাস আগস্টকে ঘিরে যশোরে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে প্যানা ও ব্যানার টাঙানোর প্রতিযোগিতা শুরু করেন কিছু নেতা।

শহরের বকুলতলায় অবস্থিত বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালের চারপাশে প্যানা ফেস্টুন এমনভাবে টাঙানো হয়, যাতে ঢেকে যায় ম্যুরালটি। সৌন্দর্যহানি ঘটে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালের। শ্রদ্ধা জানানোর জন্যে নির্মিত হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ম্যুরাল আড়ালে চলে যায় নেতাকর্মীর অসুস্থ প্রতিযোগিতায়।

একেবারে অচেনা থেকে শুরু করে জেলা পর্যায়ের শীর্ষ নেতারা বিশাল বিশাল প্যানা তৈরি করে ঝুলিয়ে দেন বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালের আশপাশে। যা দৃষ্টি কাড়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীসহ মুজিবভক্তদের। শুরু হয় সমালোচনা। মুজিবভক্তরা দাবি তোলেন প্যানা ফেস্টুন অপসারণের।

বিষয়টি স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্যরে দৃষ্টিতে যায়। তিনি এদিন বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালের সৌন্দর্য ফেরানোর সিদ্ধান্ত উদ্যোগ গ্রহণ করেন। নির্দেশ দেন ম্যুরালের দুই পাশে নির্মিত সুউচ্চ দুইটি তোরণ অপসারণেরও। ম্যুরালের আশপাশের প্যানা ফেস্টুন সরিয়ে ফেলার খবরে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা ভিড় করেন সেখানে। অনেকেই জানার চেষ্টা করেন রাস্তার পাশে স্থাপিত প্যানা ফেস্টুন সরানো লাগবে কিনা।

বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালের আশপাশের প্যানা-ফেস্টুন দেখে মনে হচ্ছিল শোকের মাস উৎসবের মাসে পরিণত করেছেন কেউ কেউ! যা ছিল চরম দৃষ্টিকটু। অনেক প্যানায় সাবেক এবং বর্তমান নেতাদের ছবি ছিল বঙ্গবন্ধুর ছবির চেয়ে বড়। যা ছিল চরম আপত্তিকর। শোকের মাসকে পুঁজি করে নেতাদের দৃষ্টিতে যেতে এ প্রতিযোগিতা শুরু হয়। যেটি শ্রদ্ধা জানানোকে ম্লান করে দিচ্ছে।

১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসকে সামনে রেখে শহরের বকুলতলায় বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে প্যানা সাইন, ব্যানার, ফেস্টুন, তোরণ নির্মাণ/স্থাপনের হিড়িক লাগে। ছোট-বড়, পরিচিত-অপরিচিত নেতা-কর্মীরা যে যার মতো প্রচারণা সামগ্রী লাগানোর প্রতিযোগিতায় নামেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উচ্ছেদ হবে জানতে পেরে বেশিরভাগ নেতা স্বউদ্যোগে তাদের প্রচারণা সামগ্রী সরিয়ে নেন রাতেই। শহরে প্রচারণা সামগ্রী স্থাপন, অপসারণের একক কর্তৃত্ব পৌরসভা কর্তৃপক্ষের। বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দিয়ে মেয়র হায়দার গনি খান পলাশ বলেন, শহরের কেন্দ্রস্থল দড়াটানায় পৌরসভার সচেতনামূলক ব্যানারও আওয়ামী লীগের এক নেতা সরিয়ে সেখানে নিজের প্রচারণা সামগ্রী স্থাপন করেছেন।

শনিবার দুপুরে বকুলতলায় বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল চত্বরে গিয়ে দেখা যায়, স্থানটি বেশ ঝকঝকে। আগের সৌন্দর্য্যও ফিরে এসেছে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সবচেয়ে বড় ম্যুরাল যশোর শহরের বকুলতলায় অবস্থিত।

জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে কুষ্টিয়ার একজন শিল্পী এটি তৈরি করেছিলেন। এরপর থেকে ১৫ আগস্ট ছাড়াও বিভিন্ন সময়ে নানা সংগঠন ও ব্যক্তি এখানে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান বলেন, প্যানা, ফেস্টুনে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ঢেকে যাচ্ছিল। এ কারণে সেগুলো সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

গরম খবর
menu-circlecross-circle linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram