যশোরে বিষপানের ঘটনায় মা ছেলের মৃত্যু
স্টাফ রিপোর্টারঃ যশোরে দেবরের কটুক্তিমূলক কথায় মা-ছেলের বিষপানের ঘটনায় মা-ছেলে উভয়ই চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরন করেছেন। গত (০৩ জানুয়ারি) বৃহস্পতিবার বিষপানের ঘটনা ঘটার পরে মা এবং ছেলেকে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল থেকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়।
পরে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে তৎক্ষনাৎ ঢাকা রেফার করে। পরিবারের আর্থিক সামার্থ না থাকায় ঢাকায় না নিয়ে ফের যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল শুক্রবার (০৪ জানুয়ারি) রাত ১১টা থেকে সাড়ে ১১টার মধ্যে হাসপাতালের মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডে মা এবং শিশু ওয়ার্ডে ছেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরন করেন।
আরও পড়ুন>>>দেশে কেউ ঘরহীন থাকবে না: কৃষিমন্ত্রী
মহিলা ওয়ার্ডের দায়িত্বরত চিকিৎসক ফারহানা ইয়াসমিন মা কে মৃত ঘোষণা করে এবং শিশু ওয়ার্ডে দায়িত্বরত চিকিৎসক মাসুম বিল্লাহ ছেলে কে মৃত ঘোষণা করেন। মা-ছেলের মৃতদেহ যশোর জেনারেল হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, যশোরে দেবরের কটুক্তি মূলক কথা সইতে না পেরে সালেহা বেগম(৩২) নামে এক গৃহবধূ তার পাঁচ বছরের ছেলে হাসানুর রহমান বান্নাকে বিষ খাইয়ে নিজেও বিষ পান করে আত্মহত্যার চেষ্ঠা করে। আত্মহত্যায় ব্যার্থ হলে পরিবারের লোকজন মা ও শিশুকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য দায়িত্বরত চিকিৎসক তাদেরকে খুলনা মেডিকেল কলেজে রেফার করেন। বৃহস্পতিবার (০৩ জানুয়ারি) দুপুরে সদর উপজেলার সাতমাইল তীরের হাট গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। গৃহবধু ওই গ্রামের মনিরুল ইসলামের স্ত্রী।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গত (০১ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যার দিকে প্রতিবেশি হাফিজুর রহমানের ছেলে রনি গৃহবধূর শোবার ঘরে ঢুকে তাকে শ্লীলতাহানির চেষ্ঠা করেন। এ সময় চেঁচামেচি করলে রনি ঘর থেকে পালিয়ে যায়। পরের দিন (০২ ফেব্রুয়ারি) বিষয়টি গ্রামের মুরোব্বিদের জানালে তারা সালিশের ডাক দেন। সালিশে রনি নিজের অপরাধ স্বীকার করলে মুরোব্বিরা তাকে জরিমানা স্বরুপ শাস্তি প্রদান করেন।
বিষয়টি সালিশে শেষ হয়ে যায়। অতপর স্বামীর ছোট ভাই মনিরুজ্জামান মনির( আপন দেবর) গৃহবধূর স্বামীকে তার (ভাবির) সম্পর্কে খারাপ কথা বলে। এতে গৃহবধূ দেবরের কাছে মানুষিক নির্যাতনের শিকার হন। বিষয়টি তিনি সহয্য করতে না পেরে বৃহস্পতিবার স্বামী মাঠে কাজ করতে গেলে।
গৃহবধূর তার পাঁচ বছরের ছেলে হাসানুর রহমান বান্নাকে ঘাস মারার বিষ খাইয়ে নিজেও বিষ পান করেন। বিষয়টি পরিবারের স্বজনদের মধ্যে জানাজানি হলে স্বজনরা দ্রুত উদ্ধার করে যশোর হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক ডা. ওবাইদুল কাদের উজ্জল শিশু ছেলে ও গৃহবধূর শারীরিক অবস্থা খারাপ দেখে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজে রেফার করেন।