২০শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৬ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
shadhin kanto

যশোরে ভোটার সংকটে ভোট সম্পন্ন

প্রতিনিধি :
স্বাধীন কন্ঠ
আপডেট :
মে ৮, ২০২৪
13
বার খবরটি পড়া হয়েছে
শেয়ার :
| ছবি : 

ডেস্ক রিপোর্টঃ

যশোরের কেশবপুর পৌর শহরের পাইলট মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়। বুধবার বেলা সাড়ে ১০টার দিকে ভোট কেন্দ্রটির কোন ভোটার লাইনেই ভোটারদের দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়নি। সকাল ৮টা থেকে বেলা সাড়ে ১০টা পর্যন্ত পাঁচটি কক্ষে ৭১টি জন ভোটার ভোট দিয়েছিলেন। মাঝে মধ্যে দু’একজন আসলেও তারা ভোট দিয়ে চলে যাচ্ছেন। এই কেন্দ্রটির দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রিজাইডিং অফিসার শেখ আব্দুর রব জানিয়েছিলেন, ‘ভোটের প্রতি মানুষের আগ্রহ কম। আবার ভোটাররা ধান নিয়ে ব্যস্ত থাকাতে ভোটার উপস্থিতি কম। ভোটারের সারি না থাকায় কেন্দ্রে পুলিশ ও আনসার সদস্যরা অলস সময় কাটাচ্ছেন।

মণিরামপুরের গালদা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রের ভোটার সংখ্যা ২ হাজার ৮৮৬ জন। বুধবার সকাল ৮টা থেকে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট গ্রহণ শুরু হয় এই কেন্দ্রে। প্রতি বুথে গড় ভোটার ৪১২ জন। দুপুর ১২টা ৪০ মিনিটে এ কেন্দ্রে গিয়ে ভোটারের কোনো লাইন চোখে পড়েনি। প্রিসাইডিং কর্মকর্তার দেওয়া তথ্যমতে, প্রথম দুই ঘণ্টায় কেন্দ্রের সাতটি বুথে ৫২টি ভোট পড়েছে। এর মধ্যে চারটি বুথে ভোট পড়েছে ৮টি। ৪ ও ৫ নম্বর বুথে ভোট পড়েছে ৩টি করে আর ৬ ও ৭ নম্বর বুথে ভোট পড়েছে ১টি করে। দুপুর ১২টা পর্যন্ত এই কেন্দ্রে সাতটি বুথে ভোট পড়ে ১৫৩টি। যা মোট ভোটারের ৫ দশমিক ৩ শতাংশ।

কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা আফজাল-উর রহমান বলেছেন, ৪র্থ থেকে ৭ম বুথে মূলত নারীরা ভোট দিচ্ছেন। সকালে নারী ভোটারদের উপস্থিত একেবারেই কম ছিল। আস্তে আস্তে ভোটারের সংখ্যা বাড়বে।

একই অবস্থা উপজেলার অন্য ভোট কেন্দ্র গুলোতে। শুধু কেশবপুর ও মণিরামপুর উপজেলার এই কেন্দ্র দুটি নয়; দুই উপজেলার বেশির ভাগ কেন্দ্র ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। ভোট শুরুর প্রথম থেকেই উপজেলার কোন কেন্দ্রই ভোটারদের দীর্ঘ লাইন দেখা মেলেনি। বেলা ১২ পর্যন্ত গড়ে ১৫ শতাংশ ভোট পড়ে। বেড়া বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কিছুটা বাড়লেও মোট ভোট পড়ার সংখ্যা হয়েছে ২৫ শতাংশ।

প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে যশোরের মনিরামপুর ও কেশবপুর উপজেলাতে বুধবার শান্তিপূর্ণভাবেই সম্পন্ন হয়েছে। তবে ভোটার উপস্থিতি মোটেও সন্তোষজনক ছিল না। নির্বাচন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সকাল থেকে বিভিন্ন জায়গায় বৃষ্টি এবং বোরো ধান কাটার মৌসুম হওয়ার কারণে ভোটার উপস্থিতি কম হয়ে থাকতে পারে। এর আগে ইভিএম মেশিনে প্রথমবারের মতো দুই উপজেলা ভোট গ্রহণ হয় সকাল ৮টা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত। এই নির্বাচনে দুই জেলাতে ২৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করে।

ভোট শুরু হওয়ার পর থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত উপজেলার টেংরামারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মামুদকাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রোহিতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রোহিতা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কোদলাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বাগডোব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, গাঙ্গুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, খেদাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, খেদাপাড়া পল্লিমঙ্গল মাধ্যমিক বিদ্যালয়, গালদা খড়িঞ্চি মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র ঘুরে কোথাও ভোটারের লাইন দেখা যায়নি।৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে মণিরামপুরে বুধবার সকাল থেকে ১৬৫টি কেন্দ্রে ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণ চলছে। ভোটার উপস্থিতি কম থাকলেও বিভিন্ন কেন্দ্র ঘুরে কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।

এদিকে ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট দিতে গিয়ে আঙুলের ছাপ না মেলায় অনেক কেন্দ্রে ভোট গ্রহণে বিলম্ব হতে দেখা গেছে। বেলা পৌনে ১১টায় উপজেলার রোহিতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেছে ১ নম্বর বুথের বাইরে কয়েকজন ভোটারের জটলা লেগে আছে। ভেতরে আবুল কালাম নামে এক ভোটারের আঙুলের ছাপ নেয়ার চেষ্টা করছেন সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা রোকনুজ্জান। এই কর্মকর্তা বলেন, ইভিএম মেশিনে অনেকের আঙুলের ছাপ মিলছে না। আবুল কালাম নামে ভোটারের আঙুলের ছাপ নিচ্ছিল না। অনেক কষ্টে তিনি ভোট দিতে পেরেছেন।’

মণিরামপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ২ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পুরুষ পদে ৪ জন ও ভাইস চেয়ারম্যান মহিলা পদে ৬ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।

কেশবপুরের পাঁজিয়া কেন্দ্রে সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন শংকর দে নামে এক ব্যবসায়ী। ভোটার উপস্থিতি সম্পর্কে তিনি বলেন, এই এলাকার নারীরা সকালে বাড়ির কাজ সেরে কেন্দ্রে আসেন। এখন তাদের উপস্থিতি কম হলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে উপস্থিতি বাড়বে। পরে খোঁজ নিয়ে জানা যায় সারাদিনই ভোটার উপস্থিতি খরায় গেছে কেন্দ্রটিতে। এই কেন্দ্রর পোলিং অফিসার সবদুল ইসলাম বলেন, সকাল থেকেই কেন্দ্রে ভোটারের খরা। অলস বসে আছেন ভোট গ্রহণের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা।
কেশবপুর পাইলট বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দিতে আসা উপজেলার ভোগতী এলাকার শফিউদ্দিন মোড়ল (৭০) বলেন, ইভিএমে ভোট দেওয়ার সময় বুঝতে অসুবিধা হওয়ায় ওখানকার স্যাররা (দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) বুঝিয়ে দেন। পরে কোন অসুবিধা হয়নি। কেশবপুর সাহাপাড়ার অলোক সাহা (৫৮) বলেন, ভোট দিতে কোন অসুবিধা হয়নি। ভালোভাবেই পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়েছি।

ভোট দিতে আসা কেশবপুর পৌর মেয়র রফিকুল ইসলাম বলেন, নির্বাচনের ক্ষেত্রে ইভিএম হলো সময় উপযোগী পদ্ধতি। খুবই অল্প সময়ের ভেতর ভোট দেয়া যায়। এই ভোটে কোন এদিক-ওদিক করার সুযোগ নেই। এর আগে উপজেলার মধ্যকুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কেশবপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র পরিদর্শন করে ভোটার উপস্থিতি খুবই কম লক্ষ্য করা গেছে। উপজেলাতে চেয়ারম্যান পদে সাতজন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে পাঁচজন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে দুইজন প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেন।

গরম খবর
menu-circlecross-circle linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram