চুয়াডাঙ্গা থানায় ড্যাম্পিং স্টেশন নেই; যৌবন শেষ হচ্ছে জব্দকৃত ৭শ’ মোটরসাইকেলের
জনি আহমেদ, চুয়াডাঙ্গাঃ চুয়াডাঙ্গায় পুলিশ লাইনসহ জেলার ৫টি থানায় মোটরসাইকেল লক হয়ে রয়েছে প্রায় ৭শ’র মতো। বিভিন্ন মামলার আলমত হিসেবে জমাবস্থায় থানার নিজস্ব খোলা জায়গায় পড়ে রয়েছে সেসব গাড়ীগুলো। ফলে রোদ বৃষ্টি আর ধুলাবালির স্তূপ পড়ে তা এমনভাবে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, যা পরবর্তীতে চালানো তো দূরের কথা তা ঠিক করতে হলে যে খরচ হবে তার সাথে আর কিছু যোগ করলে আরেকটি মোটরসাইকেল কেনা যাবে। যা আদালতের আদেশের ছাড়পত্রের অপেক্ষায় রয়েছে ৭শ’র মত মোটরসাইকেল।
এদিকে, ওই ৫টি থানায় মোটরসাইকেল রাখার কোন নির্ধারিত স্থান বা ড্যাম্পিং স্টেশন না নেই। যার কারণে সম্পদের মোটরসাইকেলগুলো নষ্ট হয়ে মালিকরা দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।
অপরদিকে, মোটরসাইকেল মামলা বা বিভিন্ন মামলার আলামত হিসেবে যেমন আটকা থাকতেই পারে তেমনী সেগুলো দেখভালের দায়িত্ব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর থাকা উচিৎ বলেও মনে করেন ভুক্তভোগীরা।
মূল কারণ হিসেবে থানা সূত্রে জানা যায়, ভারত থেকে বিভিন্ন মাদক ও স্বর্ণচোরাচালান মোটরসাইকেলে করে আনার সময় আটক হয় বিভিন্ন চোরাকারবারীরা। আর সেসময় জব্দ করা হয় মোটরসাইকেলও। সেসব অপরাধ আদালতের মাধ্যমে নিষ্পত্তি হলে তারপর গাড়ীগুলো মালিকের কাছে হস্তান্তর করা হয়। কিন্তু এসকল মামলা স্বল্প সময়ে নিষ্পত্তি না হওয়ায় সেসব মোটরসাইকেলগুলোও ছাড় পায় না। আর সে কারণেই বছরের পর বছর খোলা আকাশের নিচে পড়ে থাকায় অযত্ন অবহেলায় ধ্বংস হচ্ছে মোটরসাইকেলের যৌবন। যার দেখভালের দায়িত্ব ও কর্তব্য হিসেবে সেগুলোকে বাঁচাতে নির্ধারিত স্থান, ড্যাম্পিং স্টেশনসহ মেরামতের সুব্যবস্থা থাকা জরুরী বলে মনে করছেন ভুক্তভোগীসহ সচেতন ব্যক্তিরাও।
এ বিষয়ে জব্দ হওয়া মোটরসাইকেল মালিক আবু বক্কর বলেন, জব্দ হওয়ার পর এসব গাড়ি খোলা আকাশের নিচে ফেলে রাখা হয়। অযত্নে দীর্ঘদিন পড়ে থাকার কারণে যন্ত্রাংশের ক্ষতি হয়। পরে গাড়ি ফিরে পেলেও দেখা যায়, সে গাড়ি ব্যবহার করার মত কোন অবস্থায় থাকে না।
এ বিষয়েও ভুক্তভোগী মামুনুর রশিদ বলেন, এ আলামত গাড়িগুলোর যখন ছাড়পত্র দেয়া হয়, তখন এসে দেখা যায় গাড়ির টায়ার-টিউব আর গাড়ির যন্ত্রাংশ সবই ক্ষয় হয়ে গেছে। এ আলামত গাড়িগুলোর সংরক্ষণের জন্য একটি নির্ধারিত স্থানসহ দরকার মেরামতের সুব্যবস্থা করা।
এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গার পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ্ আল-মামুন বলেন, আদালতের দ্রুত রায় এবং মালিকের খোঁজ পাওয়া গেলে দীর্ঘদিন আর ফেলে রাখতে হবে না আলামতের এসব গাড়ি। যদিও এটি সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। ততদিনে গাড়ি সংরক্ষণের জন্য পর্যাপ্ত জায়গা ও ড্যাম্পিং স্টেশনের প্রয়োজন। তাহলে দেখা যাচ্ছে অনেকদিন পড়ে থাকলেও গাড়ির ক্ষয়-ক্ষতি কম হবে অনেকটাই।