যশোরে লকডাউন শিথিল, প্রথম দিনেই যানজটে ভোগান্তি
শাহারুল ইসলাম, স্টাফ রিপোর্টার যশোরঃ যশোরে পবিত্র ঈদ উপলক্ষে সরকার ঘোষিত করোনায় লকডাউনের বিধি-নিষেধ শিথিল করার প্রথম দিনেই যশোরের সড়ক-মহাসড়ক গুলোতে বেড়েছে যানবাহনের চাপ। এতে তৈরি হয়েছে যানজট।
বৃহস্পতিবার (১৫ জুলাই) সকাল থেকেই বিভিন্ন পয়েন্টে যানবাহন চলছে ধীর গতিতে। তীব্র গরমে যানজটে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন যাত্রী ও চালকরা।
আরও পড়ুন>>>গোয়েন্দা পুলিশের অভিযান! বিপুল পরিমাণে টিসিবি’র পণ্য উদ্ধার
দীর্ঘ সময় পর গণপরিবহন চলাচলে বিধি-নিষেধ তুলে নেওয়া হয়েছে। সকাল থেকে সড়ক-মহাসড়কগুলোতে বিভিন্ন পরিবহনের বাস, সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলাচল করতে দেখা গেছে। এছাড়া ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক ও রিকশার চলাচলও বেড়েছে।
যানজটের ভোগান্তি নিয়েই যাতায়াত করছেন যাত্রীরা। দূরপাল্লার বাসস্ট্যান্ডগুলোতে ঘরমুখো মানুষের চাপ বেড়েছে। এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনচ্ছুক হাইওয়ে এক পুলিশ সদস্য জানান, সকাল থেকেই মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বেড়েছে। এ কারণে যানবাহন চলাচলে কিছুটা ধীরগতি হচ্ছে। তবে সময় গড়ার সাথে সাথে যানবাহনের চাপ কমে আসবে।
যশোর শহরের মনিহার, পালবাড়ি ও নিউমার্কেট থেকে দড়াটানা সড়কে দিনভর তীব্র যানজট দেখা গেছে।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকারু বিভাগের ছাত্র মমিনুর রহমান তাজ বলেন, মনিহার থেকে দড়াটানা আসতে পৌনে এক ঘন্টা সময় লেগেছে তার । তিনি প্রতিষ্ঠানের কাজেই মনিহার গিয়েছিলেন ।
লকডাউন শিথিলে যানজটে ভোগান্তি
ঈমান উদ্দিন বলেন, ‘স্বাভাবিক সময়ে ২০ মিনিট সময় লাগে এই পথ আসতে। লকডাউন তুলে দেওয়ার পর সড়কে এখন কোনো শৃঙ্খলা নাই। শৃঙ্খলা থাকলে এই ধরনের পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় না।’ শহরের রেলগেইট এলাকা থেকে রিকশা নিয়ে চুয়াডাঙ্গা বাসস্টান্ডে যাচ্ছিলেন আবু সালেহ। জজকোর্ট মোড়ে দীর্ঘক্ষণ যানজটে আটকে পড়ার পর হেঁটেই চুয়াডাঙ্গা বাসষ্টান্ডে আসেন তিনি।
আরও পড়ুন>>>মহেশপুর সীমান্তে অবৈধ পারাপারে ৫৮ বিজিবির হাতে আটক-৬
আবু সালেহ বলেন, ‘জরুরি কাজে রেলগেট এসেছিলাম। দ্রুতই আবার ফিরতে হবে। জ্যামের মধ্যে রিকশা আর আগায়ই না। বাধ্য হয়ে নেমে পড়ি রিকশা থেকে। সামনে কত জ্যামে পড়তে কে জানে!’
আসন্ন ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে অর্থনৈতিক বিবেচনায় টানা ১৪ দিনের কঠোর লকডাউন শিথিলে সরকারের নতুন সিদ্ধান্তে যশোর শহরের পরিস্থিতি একেবারেই পাল্টে গেছে। লকডাউন শিথিল করায় জেলার পূর্বের অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। গণপরিবহন ও মার্কেটগুলো চালু হওয়ায় সকাল থেকে নগরীর বিভিন্ন সড়ক ও মহাসড়কগুলোতে মানুষ ও যানবাহনের চাপ বাড়তে শুরু করে।
লকডাউন শিথিলে যানজটে ভোগান্তি
মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে বাস কাউন্টারগুলোতে পরিবহনের জন্য অপেক্ষা করতে দেখা যায় বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষকে। অন্যদিকে মার্কেট ও শপিংমলগুলোতে শুরু হয়ে গেছে ঈদের কেনাকাটা। যে কারণে সকাল থেকেই ভিড় রয়েছে ক্রেতাদের। এদিকে লকডাউন চলাকালীন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চেকপোস্টগুলো তুলে দেয়ায় সড়ক-মহাসড়কে চলছে অবৈধ ইজিবাইক ও ব্যাটারিচালিত রিকশা। মাস্ক ছাড়াই মানুষ রাস্তায় অবাধে চলাচল করছেন। অধিকাংশ মানুষের মধ্যেই করোনাভীতি দেখা যায়নি। অনেক বাসে স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই যাত্রী পরিবহন করতে দেখা গেছে।
এদিকে সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, জেলায় করোনা পরিস্থিতির অবনতি ঘটছে। গত ২৪ ঘণ্টায় যশোর জেনারেল হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত ও এর উপসর্গ নিয়ে ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এরমধ্যে করোনা আক্রান্ত হয়ে ৩জনের মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়। এ ছাড়া করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন আরও চারজন।