২০শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৬ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
shadhin kanto

সংবাদে শিরোনাম হলেও প্রতিবন্ধী মুক্তিযোদ্ধা কেনা পেলেন না স্বীকৃতি

প্রতিনিধি :
স্বাধীন কণ্ঠ
আপডেট :
ডিসেম্বর ৩০, ২০২০
34
বার খবরটি পড়া হয়েছে
শেয়ার :
সংবাদে শিরোনাম হলেও প্রতিবন্ধী মুক্তিযোদ্ধা কেনা পেলেন না স্বীকৃতি
| ছবি : সংবাদে শিরোনাম হলেও প্রতিবন্ধী মুক্তিযোদ্ধা কেনা পেলেন না স্বীকৃতি

ডেস্ক রিপোর্ট : জীবনের প্রতি মায়া ত্যাগ করে সম্মুখ যুদ্ধ করে দেশকে স্বাধীন করলেও পেট ও পিটকে সে স্বাধীন করতে পারছে না।

অসুস্থ শারীরিক প্রতিবন্ধী কেরামত আলী ওরফে কেনা অসুস্থতার কারণে ঠিকমত রিকসা চালাতে পারছেন না। তারপর ঘরে অসুস্থ স্ত্রী, হাতভাঙ্গা পুত্র ঘরে বসে আছে। রিকসার চাকা না ঘুরলে সেদিন রান্না হয় না।

আর এ জন্য কপালকে দুসছেন এ বীরমুক্তিযোদ্ধা। পড়াশোনা না জানা এবং মুক্তিযোদ্ধা সংসদ অফিসে ঘুষের টাকা দিতে না পারায় তার নাম তালিকায় উঠছে না। এমনটা অভিযোগ করেছেন সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে মেজর হুদার নেতৃত্বে পাকহানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে জয়ী কেরামত আলী।

কেনা নামে পরিচিত এ শারীরিক প্রতিবন্ধী মুক্তিযোদ্ধা নিজের এলাকা ছেড়ে যশোর শহরের বারান্দী মোল্যাপাড়া এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় স্ত্রীকে কে নিয়ে কোনোরকমে দিন কাটাচ্ছেন।

দীর্ঘদিন ধরে রিকসা চালিয়ে কোন রকম টিকে আছেন। ঘরে অসুস্থ স্ত্রী, বিদেশ ফেরত হাতভাঙ্গা ছেলেটি কিছুই করতে পারে না।

রিকশা চালিয়ে উপার্জিত অর্থে কোনোদিন ভরপেট খাওয়া হয় না, কোনোদিন বাজার জোটে না। অভুক্ত থাকতে হয় পরিবারের সকলকেই। বর্তমানে অসুস্থ স্ত্রী হালিমার চিকিৎসার জন্যে অর্থ যোগাড় করতে পারছেন না তিনি।

মুক্তিযোদ্ধা কেরামত আলী কেনা সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার দুদলি গ্রামের মান্দার আলী গাজীর জ্যেষ্ঠ সন্তান। তার দুই ছেলেমেয়ে।

তিনি বলেন, ‘শারীরিক প্রতিবন্ধী হওয়ায় একটি ব্যাটারিচালিত রিকশা ভাড়া করে চালিয়ে বেড়ান। কিন্তু ট্রাফিক পুলিশের কারণে লুকিয়ে অলিগলিতে তা চালাতে হচ্ছে। কেননা রাস্তায় ব্যাটারিচালিত রিকশা চলতে দেওয়া হয় না।’ এসব কারণে ঠিকমত আয় রোজগারও করতে পারেন না তিনি। কোনোদিন রিকশা মালিককে টাকা দিয়ে আর বাজারের টাকাপয়সা থাকে না। সেদিন না খেয়েই পার করতে হয়। বয়স বেশি হয়ে যাওয়ায় প্রায় সময় অসুস্থ থাকতে হয়; তখন ওষুধ কেনার পয়সাও জোগাড় হয়ে ওঠে না।

তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘যুদ্ধের পর অনেক সহযোদ্ধা সরকারের সকল সুযোগসুবিধা পেয়ে ভালভাবে দিন পার করছেন। আমি লেখাপড়া না জানায়, মুক্তিযোদ্ধা অফিসে টাকা পয়সা দিতে না পারায় সব সুবিধা থেকে বঞ্চিত।’

লেখাপড়া না জানা এই মানুষটির কষ্টের কথা শোনার বা বলার মতো কেউই নেই। এখনো মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় নিজের নাম লেখাতে পারেননি। যখন জানতে পেরেছেন, তখন যশোরের মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের কাছে গেছেন, একাধিকবার। সে সময় জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার তার নাম তালিকাভুক্ত করতে তিন হাজার টাকা চেয়েছিলেন। কিন্তু হতদরিদ্র এই মুক্তিযোদ্ধার একসঙ্গে তিন হাজার টাকা জোগাড় করা সম্ভব হয়নি। আর সে কারণে তার নামটিও মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় ঠাঁই পায়নি।

কেরামত আলী জানান, ‘এ দেশকে হানাদারমুক্ত করতে যত না কষ্ট হয়েছে; তার থেকে এখন আরো বেশি কষ্ট জীবন চালানো।’

জীবনের শেষদিনগুলিতে একটু খেয়ে পরে বেঁচে থাকা যেন যায়- সে ব্যাপারে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী ও দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সদয় দৃষ্টি কামনা করেছেন মুক্তিযোদ্ধা কেরামত আলী কেনা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

গরম খবর
menu-circlecross-circle linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram