২২শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৮ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
shadhin kanto

সিরিজ হারল বাংলাদেশ

প্রতিনিধি :
স্বাধীন কন্ঠ
আপডেট :
মার্চ ৯, ২০২৪
60
বার খবরটি পড়া হয়েছে
শেয়ার :
| ছবি : 

স্পোর্টস ডেস্ক : রান আটকে রাখা গিয়েছিল সাধ্যের মধ্যেই। কিন্তু নুয়ান থুসারা যেন হাজির হলেন যমদূতের মতো। আগের দুই ম্যাচে একাদশে না থাকা এই পেসার প্রথম ওভারেই তুলে নেন হ্যাটট্রিক। পরে ওই চাপ সামলে লজ্জা থেকে বাঁচান রিশাদ হোসেন ও তাসকিন আহমেদ। যদিও জয়ের লড়াইয়ে কখনোই সেভাবে থাকতে পারেনি বাংলাদেশ।

শনিবার সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের শেষটিতে শ্রীলঙ্কার কাছে ২৮ রানে হেরেছে স্বাগতিকরা। শুরুতে ব্যাট করে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৭৪ রান করে শ্রীলঙ্কা। পরে ওই রান তাড়া করতে নেমে ১৪৬ রানের বেশি করতে পারেনি বাংলাদেশ।

১৭৫ রান তাড়ায় নেমে রীতিমতো লজ্জার রেকর্ডে নাম তোলার শঙ্কায় ছিল বাংলাদেশ। শেষে রিশাদ হোসেন ও তাসকিন আহমেদের ঝড়ো ইনিংসে অবশ্য রক্ষা পায়। কিন্তু ৩২ রানে ছয় উইকেট হারানোর পর ম্যাচে আর কখনোই ফিরতে পারেনি বাংলাদেশ।

তাদের উইকেট হারানোর শুরুটা হতে পারতো প্রথম বলেই। অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসের করা ওই বল লিটন দাসের প্যাডে লাগে। কিন্তু আম্পায়ারস কলে বেঁচে যান লিটন। তৃতীয় ওভার শুরু করেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস, কিন্তু চোটের কারণে তিনি মাঠ ছাড়েন। ওভার শেষ করতে আসা ধনঞ্জয়া ডি সিলভার প্রথম বলেই ক্যাচ তুলে দেন লিটন। ১১ বলে ৭ রান করেন তিনি।

তবে বাংলাদেশের জন্য মূল আতঙ্ক হয়ে ওঠেন থুসারা। আগের দুই ম্যাচে একাদশেই ছিলেন না তিনি। মাথিশা পাথিরানার চোটে সুযোগ পেয়ে এই পেসার নিজের প্রথম ওভারেই হ্যাটট্রিক করে ফেলেন তুষারা। শুরুটা হয় স্বাগতিক অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত।

স্লিঙ্গিং অ্যাকশনের এই বোলারের বলে বোল্ড হন শান্ত। পরের বলে ক্রিজে আসেন তাওহীদ হৃদয়। গুড লেন্থে পড়ে বল হালকা সুইং করে খুব জোরে আঘাত হানে হৃদয়ের স্টাম্পে। হ্যাটট্রিক বলে তুষারার মুখোমুখি হন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। আরও একটি বল গুড লেন্থে পড়ে সুইং করে বেরিয়ে যাওয়ার সময় রিয়াদের পায়ে লাগে। হ্যাটট্রিক পূর্ণ হয় থুসারার।

নিজের পরের ওভারে এসেও উইকেট পান এই বোলার। সৌম্য সরকারের স্টাম্প উপড়ে ফেলেন ইয়র্কার। জাকের আলিও নিজের ইনিংস বড় করতে পারেননি। ১৩ বলে স্রেফ ৪ রান করে হাসরাঙ্গা ডি সিলভার গুগলি বুঝতে না পেরে এলবিডব্লিউ হন। পরে রিভিউ নিলেও কাজে আসেনি।

৩১ বলে ৪৪ রানের জুটিতে মান বাঁচানোর লড়াই করেন মাহেদী হাসান ও রিশাদ হোসেন। এর আগে ২০১৬ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৭০ রানে অলআউট হওয়া টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের সর্বনিম্ন সংগ্রহ। ৩২ রানে ছয় উইকেট হারিয়ে সেটির ভেতর আটকে পড়ার শঙ্কা জেগেছিল এদিনও।

শেষ অবধি সেটি থেকে বাঁচিয়ে দেন রিশাদ হোসেন। আগে টি-টোয়েন্টিতে সবমিলিয়ে ৩ ইনিংসে ১৮ রান করেছিলেন তিনি। সুযোগ পেয়ে কাজে লাগান রিশাদ। হাফ সেঞ্চুরি ছাড়ানো ইনিংসে দলের মান বাঁচান রিশাদ। মাহেশ থিকসেনাকে এক ওভারেই তিন ছক্কা হাঁকান তিনি। ইনিংসে একটিও চার না মারা রিশাদ ৭ ছক্কায় ৩০ বলে ৫৩ রান করেন।

রিশাদের সাত ছক্কা রেকর্ডও গড়েছে। এই সিরিজের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশি ব্যাটার হিসেবে ছয় ছক্কার রেকর্ড গড়েন জাকের আলি অনিক। এবার সেটি ভেঙে দিয়েছেন রিশাদ।

এরপর শুরু হয় তাসকিন আহমেদ শো। প্রথম তিন ওভারে ৭ রান দিয়ে চার উইকেট নিয়েছিলেন নোয়ান থুসারা। তাকে প্রথম দুই বলে দুটি ছক্কা হাঁকান তাসকিন। ওই ওভারের শেষ বলে শরিফুলের উইকেট নিয়ে ফাইফারও পূরণ হয় থুসারার। তবে ২১ বলে ৩১ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন তাসকিন। যদিও তাতে কেবল হারের ব্যবধানই কমেছে।

টস জিতে বল করতে নেমে বাংলাদেশকে আগের ম্যাচের মতো এবারও দারুণ শুরু এনে দেন শরিফুল ইসলাম। প্রথম ওভারে কেবল ২ রান দেন তিনি। এর মধ্যে শেষ বলে এলবিডব্লিউয়ের জন্য রিভিউ নেন, যদিও শেষ অবধি সফল হতে পারেননি।

উইকেটের জন্য স্বাগতিকদের অপেক্ষা করতে হয় চতুর্থ ওভারের প্রথম বল অবধি। তাসকিন আহমেদের করা গুড লেন্থের বলে মিডউইকেটে দাঁড়ানো সৌম্য সরকারের হাতে ক্যাচ দেন ধনঞ্জয়া ডি সিলভা। ১২ বল খেলে তিনি করেন কেবল ৮ রান।

পরে ওই ওভারের বাকি পাঁচ বলে তিনটি বাউন্ডারি হজম করেন তাসকিন। পাওয়ার প্লের ছয় ওভারে ৪১ রান করে শ্রীলঙ্কা। স্বাগতিকদের পরের উইকেট এনে দেন রিশাদ হোসেন। তার বলে লং অফে ক্যাচ দেওয়ার আগে ১২ বলে ১২ রান করেন কামিন্দু মেন্ডিস।

একপ্রান্ত আগলে তখনও রান করে যাচ্ছিলেন কুশল মেন্ডিস। ৩৪ বলে হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন তিনি। এর মধ্যে হাসরাঙ্গার উইকেট নেন মোস্তাফিজুর রহমান। ১৩ বলে ১৫ রান করে আউট হন তিনি। হাসারাঙ্গার সঙ্গে ৩১ বলে ৫৯ রানের জুটি ভাঙে মেন্ডিসের।

হাসরাঙ্গাকে ফেরানোর পরও উদযাপন করেননি মোস্তাফিজ। কারণ দিনটি তার জন্য একদমই সুখকর ছিল না। নিজের প্রথম তিন ওভারে ৩৪ রান দেন তিনি। সেঞ্চুরি ছোঁয়ার সুযোগ থাকলেও কুশলকে সেটি করতে দেননি তাসকিন। তার বাউন্সারে পুল করতে গিয়ে মিড উইকেটে ক্যাচ দেন লঙ্কান ব্যাটার। ৬টি চার ও ৬টি ছক্কায় ৫৫ বলে ৮৬ রান করেন তিনি।

১৮তম ওভার করতে এসে একটি চার ও ছক্কা হজম করলেও অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসকে ফিরিয়ে দেন রিশাদ। পরে শেষ অবধি ১৮০ ছুতে পারেনি লঙ্কানদের রান। ৮ বলে ১৯ রান করে শেষ বলে রান আউট হন শানাকা। ৭ রানে অপরাজিত থাকেন সামারাবিক্রমা।

গরম খবর
menu-circlecross-circle linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram