লোহাগড়ায় ১৫২টি পূজা মন্ডবে অনুষ্ঠিত হবে দূর্গা উৎসব
রাশেদ জামান,লোহাগড়া (নড়াইল) প্রতিনিধি : শেষ তুলির আঁচড়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন মৃৎশিল্পীরা। হিন্দু ধর্মালম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শ্রী শ্রী শারদীয় দূর্গোৎসব দরজায় কড়া নাড়ছে। আর মাত্র ৭ দিন পরেই দূর্গা পূজা। কিন্তু বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাসের কারণে এ বছর দূর্গা পূজা নিয়ে সনাতন ধর্মালম্বীদের মাঝে তেমন কোন উৎসাহ-উদ্দিপনা নেই বললেই চলে। অন্য বছর দূর্গা পূজাকে কেন্দ্র করে যে উৎসবের আমেজ সৃষ্টি হয়ে থাকে, এ বছর তা হয়নি। করোনাকালে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্বসহ নানবিধ নির্দেশ মেনে পূজা পালনের বাধ্যবাধকতা থাকায় পূজা নিয়ে উৎসাহ-উদ্দিপনায় ভাটা পড়েছে। এহেন পরিস্থিতির মধ্যে দূর্গোৎসব পালিত হবে বলে বেশিরভাগ হিন্দু ধর্মালম্বীদের অভিমত।
মহামারির মধ্যে জনসমাগমে নিষেধাজ্ঞা থাকায় এ বছর রাষ্ট্রীয় অনেক অনুষ্ঠান বাতিল করতে হয়েছে। মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রধান দুই ধর্মীয় উৎসব যথাক্রমে ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা পালিত হয়েছে বিধি নিষেধের মধ্যে সীমিত পরিসরে। ফলে এ বছর দূর্গা পূজার আয়োজন নিয়ে শুরুতেই শঙ্কা থাকলেও শেষ পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে পর্যাপ্ত সুরক্ষার ব্যবস্থা করে পূজা আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। গত ১৭ সেপ্টেম্বর আরোপিত বিধি নিষেধ মেনেই মহালয়ার আনুষ্ঠানিকতার সম্পন্ন হয়েছে।
এ বছর করোনাকালের দূর্গা পূজায় সেই চিরায়ত রূপ আর থাকবে না। জনসমাগমে নিষেধাজ্ঞা থাকায় উৎসবের কোন আমেজ নেই। নেই উৎসাহ-উদ্দিপনা। অথচ পূজার বাকি আর মাত্র ৭ দিন।
পঞ্জিকা অনুযায়ী, ২২ অক্টোবর মহাষষ্টী তিথীতে অনুষ্ঠিত হবে দেবীর বোধন, দেবীর ঘুম ভাঙানোর বন্দনা পূজা। পরের দিন ২৩ অক্টোবর সপ্তমী পূজার মাধ্যমে শুরু হবে দূর্গোৎসবের মুল আচার-অনুষ্ঠান। ২৪ অক্টোবর পালিত হবে মহাঅষ্টমী ও কুমারী পূজা অনুষ্ঠান। ২৬ অক্টোবর মহাদশমীতে দেবী দূর্গার বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে দূর্গোৎসবের আনুষ্ঠানিকতা।
সনাতন ধর্মালম্বীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাসের প্রভাবে এ বছর দূর্গা পূজাকে ঘিরে তেমন উৎসাহ-উদ্দিপনা নেই। বিধি নিষেধের ঘেরটোপে দূর্গা পূজার সেই আমেজও নেই। ফিকে হয়ে গেছে দূর্গোৎসবের চিরায়ত রূপ।
লোহাগড়া উপজেলা পূজা উদযাপন পর্ষদের সভাপতি ও জেলা পরিষদের সদস্য বাবু প্রবীর কুমার কুন্ডু মদন জানান, করোনাকালে স্বাস্থ্য বিধি ও সামাজিক দূরত্ব মেনে দূর্গা পূজা পালিত হবে। এ বছর লোহাগড়া পৌর এলাকার ৩৭টি পূজা মন্ডবে দূর্গা পূজা অনুষ্ঠিত হবে। আর ১২টি ইউনিয়নের ১১৫টি পূজা মন্ডবে শারদীয় দূর্গা পূজা অনুষ্ঠিত হবে। তিনি সকলকে স্বাস্থ্য বিধি ও সামাজিক দূরত্ব মেনে পূজা উদযাপনের আহবান জানিয়েছেন।
কথা হয় পৌর এলাকার কচুবাড়িয়া সার্বজনীন পূজা মন্ডবের অন্যতম কর্ণধার কাজল পালের সাথে। তিনি জানান, অন্য বছর দূর্গা পূজায় লক্ষাধিক টাকার বাজেট থাকলেও এ বছর তা হচ্ছে না। সীমিত পরিসরে নির্দেশনা মেনে দূর্গা পূজা পালিত হবে।
লোহাগড়া পৌরশাখা পূজা উদযাপন পর্ষদের সাধারন সম্পাদক সুদর্শন কুন্ডু ছোটন বলেন, করোনাকালে সনাতন ধর্মালম্বীদের মন ভালো নেই। তাই সীমিত পরিসরে স্বাস্থ্য বিধি মেনে দূর্গা পূজা পালিত হবে।
উপজেলা পূজা উদযাপন পর্ষদের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক গৌতম দেওয়ান বলেন, করোকালে যে পূজা হচ্ছে সে জন্য তিনি সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ প্রকাশ করেন।
লোহাগড়া থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) সৈয়দ আশিকুর রহমান জানান, দূর্গা পূজাকে সামনে রেখে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে প্রস্তুত করা হয়েছে। তারা দূর্গা পূজা চলাকালে টহল সহ জনস্বার্থে নানাবিধ কার্যক্রম পালন করবে।